আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
36 views
in পবিত্রতা (Purity) by (28 points)

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

 

আসসালামু আলাইকুম
প্রশ্ন ১: পাঁচ ছয় মাস আগে আমি শারীরিক সমস্যার জন্য প্রস্রাবের বিশেষ এক ধরনের টেস্ট করাই। আমি দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করাতে অভ্যস্ত না টেস্টের স্বার্থে প্রস্রাব দাঁড়িয়ে করতে হয় এবং প্রস্রাব করার সময় নিচে বালতি থাকলেও সামান্য কিছু প্রস্রাব বালতির উপরের দিকে লেগে মেঝেতে ছিটায় এবং সামান্য প্রস্রাব সরাসরি আমার পায়ে লাগে। প্রস্রাবের পর আমি বাথরুমে যেয়ে ভালোভাবে পা ধুই এবং পা ধোয়ার পরে সন্তুষ্টি অর্জন হয় যে পা ভালোভাবে ধোয়া হয়েছে। এরপর বাথরুম থেকে বাহির হয়ে বাথরুমের বাহিরে থাকা পাপোসে পা মুছি।যদিও আমি নিশ্চিত না পাপোসে নাপাক ছিল কিনা কারণ, বাথরুমের স্যান্ডেল ওই পাপোশের উপরেই ছিল তবে পাপোশটি শুকনা ছিল এবং ওই পাপোশে আমি ভেজা পা মুছেছিলাম। তবে পরিষ্কার হওয়ার জন্য যখন বাথরুমে গিয়েছিলাম তখন বাথরুমে বা পাপোসে বা জুতায় কোন নাপাকের আলামত পাইনি । তারপর বাথরুম থেকে বাহির হয়ে রুমের মধ্যে এসে সাবধানে এবং যতটা খেয়াল ছিল সেই অনুযায়ী পরিষ্কার জায়গা দিয়ে হেঁটে এসেছিলাম যেহেতু বালতির কোনায় লেগে সামান্য কিছু প্রস্রাব মেঝেতে ছিটিয়েছিল। এরপর টেস্টের সমস্ত কাজ শেষ করে জামা কাপড় পড়ে চলে আসি।
কিন্তু বাসায় আসার পর বা কয়েক দিন পর থেকে আমার মনে হতে থাকে ওই সময় আমি ঠিকমত পরিষ্কার হয়নি বা শরীরে প্রস্রাব বা নাপাক লেগেছিল যা পরবর্তীতে আমার পরনের জামা কাপড়, মোবাইল, মানিব্যাগ সবকিছুতেই লেগে গিয়েছে। এই চিন্তা এখনো চলমান। এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?

প্রশ্ন ২: চার পাঁচ মাস আগে আমাদের বাড়িতে আমার একজন খালা থাকতেন। রাতে তার বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি বাথরুমে যাওয়ার আগেই বাথরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে ফেলতেন। যে কারণে দরজার সামনে কাপড় দেওয়া থাকতো যাতে প্রসাব না ছিটায় বা গড়িয়ে না যায়।

গত মাস খানেক আগে আমি একদিন বালতিতে কাপড় ভিজিয়ে রাখি। তবে ওই সময় বাসায় পানির লাইনে সমস্যা থাকাই কাপড়গুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়নি যদিও কাপড়ে নাপাক ছিল বলে মনে পড়ে না। এরপর কেউ একজন ওই বালতি নিয়ে, ৪-৫ মাস আগে আমার খালা যে বাথরুম ব্যবহার করতেন ওই বাথরুমের বাহিরে একটু পাশে রেখে দেন। এতে বালতিতে অনেক কাপড় থাকায় বালতির উপরের দিক থেকে ভেজা কাপড়ের কিছু অংশ বাথরুমের বাইরের পাশের দেওয়ালের  সাথে লাগে (অর্থাৎ দেওয়ালের একপাশে বাথরুম একপাশে ঘর এটাকেই বাথরুমের বাইরের দিক হিসেবে উল্লেখ করেছি ) এবং কাপড় গুলো ভালোমতো পরিষ্কার করার আগেই কেউ একজন কাপড় গুলো বারান্দাতে দড়ির উপর মেলে দেয় । এই অবস্থায় কাপড় গুলো কি পাক থাকবে নাকি নাপাক হবে?

উল্লেখ্য, দেওয়ালটি ছিল সিমেন্টের এবং উপরে রং করা। বালতিটি ছিল প্রায় ১ ফুট বা তার থেকে একটু বেশি উঁচু । আমি নিশ্চিত নই এমন উচ্চতায় দেওয়ালে প্রস্রাব ছিটিয়েছিল কিনা এবং এটা জানা সম্ভবও নয় এবং দেওয়ালে প্রস্রাবের আলামতও নেই। রুমের দরজার সামনে নিচে কাপড় বা পাপোস দেওয়া থাকতো যাতে প্রস্রাব না ছিটায়।

প্রশ্ন ৩: অমুসলিমরা কি নাপাক?  তাদের হাত থেকে কোন কিছু নেওয়া যাবে? তাদের সাথে করমর্দন করা যাবে?

প্রশ্ন ৪: একদিন রাস্তা দিয়ে হাটার সময় আমার হাতের ডান পাশে একটা কুকুর তার শরীর চুলকাতে থাকে এবং এরপর কুকুরটা হাচি দেয়। এরপর আমার দিকে তাকিয়ে ডাকতে থাকে। আমার যতদূর মনে পড়ে, শরীর চুলকানোর সময় এবং হাচি দেওয়ার সময় আমি যথেষ্ট দূরে ছিলাম এবং আমার শরীরে কোনো ভেজা ভাব অনুভব করিনি এমনকি জুতাতেও কোনো ভেজার আলামত পাইনি।
এরপরও মনে হচ্ছে নাপাকি লেগেছে। এ অবস্থায় করনীয় কি?

প্রশ্ন ৫: রাস্তা দিয়ে হাটার সময় পাশে কুকুর থাকলে নাপাকি নিয়ে অতিরিক্ত ভয় হয়। এমনকি কুকুর সোজাসুজি বেশ দূরে দাড়িয়ে থাকলেও ওই সময় শরীরে কোনো মশা বসলেও মনে হয় মশাটি কুকুরের শরীর থেকে উড়ে এসে বসেছে। এই অবস্থায় করণীয় কি?

প্রশ্ন ৬: রাস্তা দিয়ে চলার সময় ময়লার ভ্যান পাশে থাকলে বা ময়লা ফেলা হয় এমন জায়গা দিয়ে গেলে মনে হয় নাপাক জায়গা থেকে মশা মাছি এসে শরীরে বসছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_250413_173825_934.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (611,730 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো পাক জিনিসকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
যাহা নিম্নোক্ত হাদীস থেকে প্রমানিত হয়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,

اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]
মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত বস্তুগুলিকে আপনি পাক ধরবেন।

বিষয়টি নিয়ে আর চিন্তা না করার পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
কাপড় গুলো পাক।

(০৩)
অমুসলিমদের শরীরে/হাতে নাপাকি না থাকলে তারা নাপাক নয়। এমতাবস্থায় তাদের হাত থেকে কোন কিছু নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে তাদের সাথে করমর্দন করা যাবে।

(০৪)
আপনি নিজের শরীর ও কাপড়কে পাক হিসেবেই ধরবেন।

(০৫)
সেটা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা পরিহার করবেন।

কুকুরের সাথে আপনার গা লাগলে সেক্ষেত্রে আপনার শরীর/কাপড়ে নাপাক এর চিহ্ন বা গন্ধ পেলে তবেই নাপাক ধরবেন। অন্যথায় আপনার শরীর বা কাপড়কে পাক হিসেবেই ধরবেন।

(০৬)
একটু দূর দিয়ে যাবেন।

এমতাবস্থায় আপনার শরীরে/কাপড়ে মশা মাছি লাগলেও আপনার শরীরে বা কাপড়ে নাপাকির চিহ্ন বা গন্ধ না পাওয়া গেলে আপনার শরীর ও কাপড়কে পাক হিসেবেই ধরবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (28 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আসসালামু আলাইকুম 
উক্ত ৪ নং প্রশ্নের ক্ষেত্রে কি জুতা পাক নাকি নাপাক থাকবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 50 views
...