আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
223 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (60 points)

আসসালামু আলাইকুম।

আমার এক পরিচিত লোক অনেকদিন যাবৎ প‍্রবাসে জীবনযাপন করছে। সেখানে সেটেল হওয়ার অনেক চেষ্টা করেও কোনো লাভ হয়নি। অতপর একসময়  তাকে ওখানকার কোনো এক স্থানীয় ব‍্যক্তি একটা বুদ্ধি দেয়।
সাধারণত দেশ থেকে বিতাড়িত নাস্তিক ঘরানার লেখক / ব্লগারদেরকে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ আশ্রয় দিয়ে থাকে যদি প্রমাণিত হয় যে নিজ দেশে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
 
ঐ স্থানীয় ব‍্যক্তিটি  তাকে একজন লয়ার ঠিক করে দেয় এবং লয়ারের নির্দশনা অনুযায়ী  লোকটি অনলাইনে ইসলামের বিদ্বেষী বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত হয় এবং তাদের বিভিন্ন এক্টিভিটিতে জড়িয়ে পড়ে।
তার লয়ার তাকে যেভাবে নির্দশনা দিয়েছে সে সেভাবেই অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে ইসলামকে কটুক্তি করে বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেছে। আমি যখন বিষয়টি অবগত হয় তখন তাকে এবারে সতর্ক করি এবং এমনটি করলে কুফর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানায়। কিন্তু সে বলে-"কাফীর কিভাবে হবো! আমি তো আল্লাহ কে মানি। আর এসব তো একটা নাটক মাত্র।"
 
এখন আমার প্রশ্ন হলো তার এই কাজটির ইসলামের দৃষ্টিতে বিধান কি?
এই কাজটির দ্বারা কি রিদ্দাহ হয়েছে?
এরূপ করলে কী কারো ঈমান ভঙ্গ হয়ে কাফির হয়ে যায়? এখন করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (574,110 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কুফরী কাজ,ইসলাম বিদ্বেষী কাজ করা কুফরী। 

সূরা নাহলের ১০৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ مِنْ بَعْدِ إِيمَانِهِ إِلَّا مَنْ أُكْرِهَ وَقَلْبُهُ مُطْمَئِنٌّ بِالْإِيمَانِ وَلَكِنْ مَنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِنَ اللَّهِ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيمٌ (106)

“কেউ বিশ্বাস স্থাপনের পর আল্লাহকে অস্বীকার করলে এবং প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় মুক্ত রাখলে তার উপর আল্লাহ ক্রোধ পতিত হবে এবং তার জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। তবে তার জন্য নয়, যাকে (সত্য প্রত্যাখ্যানে) বাধ্য করা হয়, কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অটল।” (১৬:১০৬)

কুফরী বাক্যর অর্থ জানা নেই এবং বলার ইচ্ছে নেই তবে মুখ ফসকে কোনো কুফরী বাক্য মুখ থেকে উচ্ছারণ হয়ে গেছে,এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাফির হবে না।যেমন হযরত আবুযর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,

عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ رضي الله عنه قَالَ :قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :(إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মত থেকে ভূল ভ্রান্তি এবং নিরুপায় মূলক কাজ কে ক্ষমা করে দিয়েছেন।(সুনানু উবনি মা'জা-২০৪৩)

কুফরী বাক্যর অর্থ জানা রয়েছে,এবং বলার ইচ্ছাও রয়েছে,তবে কাফির হওয়ার জন্য বলেনি,বরং রং তামাশ মূলক কেউ বলল,তাহলে এমতাস্থায় সে কাফির হয়ে যাবে,

" مَنْ تَكَلَّمَ بِكَلِمَةِ الْكُفْرِ هَازِلًا أَوْ لَاعِبًا كَفَرَ عِنْدَ الْكُلِّ وَلَا اعْتِبَارَ بِاعْتِقَادِه

যে ব্যক্তি কোনো কুফুরি বাক্য রং তামাশা করে বলবে,সে কাফির হয়ে যাবে।যদিও তার এ'তেকাদ বা বিশ্বাসে কুফরি না থাকুক।(বাহরুর রায়েক-৫/১৩৪,ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-২/২৭৫-২৭৬)

ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছে 

"وفي الفتح: من هزل بلفظ كفر ارتد وإن لم يعتقده للاستخفاف فهو ككفر العناد. (قوله: من هزل بلفظ كفر) أي تكلم به باختياره غير قاصد معناه، وهذا لاينافي ما مر من أن الإيمان هو التصديق فقط أو مع الإقرار لأن التصديق، وإن كان موجوداً حقيقةً لكنه زائل حكماً؛ لأن الشارع جعل بعض المعاصي أمارة على عدم وجوده كالهزل المذكور، وكما لو سجد لصنم أو وضع مصحفاً في قاذورة فإنه يكفر، وإن كان مصدقاً لأن ذلك في حكم التكذيب، كما أفاده في شرح العقائد، وأشار إلى ذلك بقوله: للاستخفاف، فإن فعل ذلك استخفافاً واستهانةً بالدين فهو أمارة عدم التصديق، ولذا قال في المسايرة: وبالجملة فقد ضم إلى التصديق بالقلب، أو بالقلب واللسان في تحقيق الإيمان أمور الإخلال بها إخلال بالإيمان اتفاقا، كترك السجود لصنم، وقتل نبي والاستخفاف به، وبالمصحف والكعبة.
وكذا مخالفة أو إنكار ما أجمع عليه بعد العلم به لأن ذلك دليل على أن التصديق مفقود، ثم حقق أن عدم الإخلال بهذه الأمور أحد أجزاء مفهوم الإيمان فهو حينئذ التصديق والإقرار وعدم الإخلال بما ذكر بدليل أن بعض هذه الأمور، تكون مع تحقق التصديق والإقرار، ثم قال ولاعتبار التعظيم المنافي للاستخفاف كفر الحنفية بألفاظ كثيرة، وأفعال تصدر من المنتهكين لدلالتها على الاستخفاف بالدين كالصلاة بلا وضوء عمدا بل بالمواظبة على ترك سنة استخفافا بها بسبب أنه فعلها النبي صلى الله عليه وسلم زيادة أو استقباحها كمن استقبح من آخر جعل بعض العمامة تحت حلقه أو إحفاء شاربه اهـ. قلت: ويظهر من هذا أن ما كان دليل الاستخفاف يكفر به، وإن لم يقصد الاستخفاف لأنه لو توقف على قصده لما احتاج إلى زيادة عدم الإخلال بما مر لأن قصد الاستخفاف مناف للتصديق (قوله: فهو ككفر العناد) أي ككفر من صدق بقلبه وامتنع عن الإقرار بالشهادتين عنادا ومخالفة فإنه أمارة عدم التصديق."
(کتاب الجہاد، باب المرتد، ج: 4، صفحہ: 222، ط: ایچ، ایم، سعید)

সারমর্মঃ কেহ যদি ঠাট্রা করেই হোক,বা জেনে শুনেই হোক,কুফরি শব্দ বলে ফেলে,যদিও তার কলবে ঈমান থাকুক,সে কাফের হয়ে যাবে।  
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তি কাফের হয়ে যাবে।
তাকে আবার কালেমায়ে শাহাদত পড়ে ইসলাম গ্রহন করতে হবে।
পূর্বের যাবতীয় ইসলাম বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। 
,  
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...