আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
497 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (20 points)
edited by
(বাদায়ে সানায়ে৫/৪০ এতে এ সম্পর্কে কি বলা হয়েছে তা আমাকে স্পষ্ট ভাবে বলুন।
মাছ বা মুরগীর যদি হারাম খাবার খেয়ে থাকে সচরাচর তো তাদের গোশত দূর্গন্ধ হয় না,তাহলে কি তাদেরকে ৩দিন ভালো খাবার না খাইয়ে জবাই করে খাওয়া যাবে কি?

ধরুণ মাছ বা মুরগী হারাম খাবার বেশী খেল কিন্তু হালাল খাবার কম খেল তবু ও তাদের গোসত দূর্গন্ধ হয় নাই তাহলে কি তা খাওয়া যাবে?

আর মুরগী বা মাছের গোসত দূর্গন্ধ হলে কেমন গন্ধ পাওয়া যায় তা আমাকে একটু বলেন।
যদি মাছ বা মুরগীর গোসতে যদি সামান্য দূর্গন্ধ হয় তাহলে কি তা খাওয়া হারাম?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা আ'রাফের ১৫৭ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 
اَلَّذِیۡنَ یَتَّبِعُوۡنَ الرَّسُوۡلَ النَّبِیَّ الۡاُمِّیَّ الَّذِیۡ یَجِدُوۡنَهٗ مَکۡتُوۡبًا عِنۡدَهُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ ۫ یَاۡمُرُهُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡهٰهُمۡ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَ یُحِلُّ لَهُمُ الطَّیِّبٰتِ وَ یُحَرِّمُ عَلَیۡهِمُ الۡخَبٰٓئِثَ وَ یَضَعُ عَنۡهُمۡ اِصۡرَهُمۡ وَ الۡاَغۡلٰلَ الَّتِیۡ کَانَتۡ عَلَیۡهِمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِهٖ وَ عَزَّرُوۡهُ وَ نَصَرُوۡهُ وَ اتَّبَعُوا النُّوۡرَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ مَعَهٗۤ ۙ اُولٰٓئِکَ هُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۵۷﴾

যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃংখল- যা তাদের উপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাযিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنِ ابْنِ أَبِي نَجِيحٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَكْلِ الْجَلَّالَةِ وَأَلْبَانِهَا 

ইবনু উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাল্লালার (যে প্রাণী নাপাক বস্তু খায়) গোশত খেতে ও তার দুধ পান করতে নিষেধ করেছেন।
(আবু দাউদ ৩৭৮৫,তিরমিজি)
,
حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي أَبُو عَامِرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ لَبَنِ الْجَلَّالَةِ 

ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাল্লালার দুধ পান করতে নিষেধ করেছেন।
(আবু দাউদ ৩৭৮৬ তিরমিজি)
,
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، أَخْبَرَنَا قَتَادَةُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الشُّرْبِ مِنْ فِي السِّقَاءِ، وَعَنْ رُكُوبِ الْجَلَّالَةِ وَالْمُجَثَّمَةِ قَالَ أَبُو دَاوُدَ: الْجَلَّالَةُ: الَّتِي تَأْكُلُ الْعَذْرَةَ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কলসের মুখে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে, জাল্লালায় সওয়ার থেকে এবং কোনো প্রাণীকে বেঁধে তীর নিক্ষেপ করে হত্যা করতে বারণ করেছেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, জাল্লালা হলো, যে প্রাণী নাপাক বস্তু খায়।
(আবু দাউদ ৩৭১৯.বুখারী)
,
এসব হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা  হয়েছে  যে  (الْجَلَّالَةِ) ‘জাল্লালাহ্’ হলো যে প্রাণী নাপাক খায়, অর্থাৎ মল খায়। আর এটা গরু, ছাগল, উট, ছাড়াও হাঁস, মুরগীসহ অন্যান্য প্রাণী হতে পারে। মল খেক প্রাণীর গোশত ও দুধ খাওয়া যাবে কিনা- এ ব্যাপারে ‘উলামার মাঝে মতপার্থক্য রয়েছে। আসহাবুর্ রায়, ইমাম শাফি‘ঈ, আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহিমাহুল্লাহ) এটা মাকরূহ বলেছেন। তারা বলেছেন, এ ধরনের প্রাণী কয়েকদিন আটকে না রেখে খাওয়া বৈধ নয়। কয়েকদিন বেঁধে রাখার ফলে গোশত কোন নাপাকীর চিহ্ন না থাকলে তা খাওয়াতে কোন সমস্যা নেই। অবশ্য একটি হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, গরু ৪০ দিন আটকে রেখে নাপাকীর আলামত নষ্ট হয়ে গেলে তা খাওয়াতে কোন দোষ নেই। ইবনু ‘উমার (রাঃ) মুরগী তিনদিন আটকে রাখতেন, এরপর তা যাবাহ করতেন। ইসহক বলেনঃ এ ধরনের প্রাণীগুলো উত্তমরূপে গোসল করানোর পর তার গোশত খাওয়াতে কোন দোষের কিছু নেই। হাসান বাসরী (রহিমাহুল্লাহ) মল খেক প্রাণীর গোশত খাওয়াতে কোন দোষ মনে করতেন না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৭৮১)
,
মাছের মধ্য উক্ত নাপাক ও নাজাসত খাওয়ার ধরুণ মাছের মধ্যে দুর্গন্ধ চলে আসে,তাহলে সেই দুর্গন্ধ দূর হওয়া পর্যন্ত মাছকে আটকে রেখে,পানি ও ভালো কিছু ভাওয়ানো হবে তারপর মাছকে খাওয়া হবে।

দুর্গন্ধ দূর হওয়ার সময় সীমা সম্পর্কে ফুকাহায়ে কিরাম লিখেন, তিনদিন। তথা তিনদিন পর্যন্ত মাছকে আটকে রেখে ভাল পানি ও খাবার খাইয়ে তারপর উক্ত মাছকে খাওয়া যাবে।মোরগ ছাগল ইত্যাদির একই হুকুম।

বাদাইউস সানায়ে' গ্রন্থে এসেছেঃ

«بدائع الصنائع في ترتيب الشرائع» (5/ 40):

ولا يكره أكل الدجاج المحلي وإن كان يتناول النجاسة؛ لأنه لا يغلب عليه أكل النجاسة بل يخلطها بغيرها وهو الحب فيأكل ذا وذا، وقيل إنما لا يكره؛ لأنه لا ينتن كما ينتن الإبل والحكم متعلق بالنتن؛ 

ولهذا قال أصحابنا في جدي ارتضع بلبن خنزير حتى كبر: إنه لا يكره أكله؛ لأن لحمه لا يتغير ولا ينتن فهذا يدل على أن الكراهة في الجلالة لمكان التغير والنتن لا لتناول النجاسة ولهذا إذا خلطت لا يكره وإن وجد تناول النجاسة؛ لأنها لا تنتن فدل أن العبرة للنتن لا لتناول النجاسة، والأفضل أن تحبس الدجاج حتى يذهب ما في بطنها من النجاسة لما روي «أن رسول الله - صلى الله عليه وسلم - كان يحبس الدجاج ثلاثة أيام ثم يأكله» وذلك على طريق التنزه وهو رواية أبي يوسف عن أبي حنيفة عليهما الرحمة أنها تحبس ثلاثة أيام كأنه ذهب إلى ذلك للخبر ولما ذكرنا أن ما في جوفها من النجاسة يزول في هذه المدة ظاهرا وغالبا.

গৃহ পালিত মোরগকে খাওয়া নাজায়েয হবে না যদিও সেই মোরগ নাজাসতকে ভক্ষণ  করুক না কেন? কেননা মোরগের সমস্ত বা অধিকাংশ খাবার কখনো নাপাক হবে না। বরং এবং নাপাক খাবারের সাথে অবশ্যই অন্যান্য হালাল খাবার মিলানো থাকবে।সুতরাং মোরগ কখনো হালাল খাবে এবং কখনো হারাম খাবে। কেউ কেউ বলেন, মোরগ নাজাসতকে ভক্ষণ করলে ,উক্ত মোরগের গোশত খাওয়া মাকরুহ হবে না। কেননা নাপাক বা নাজাসত ভক্ষণ করার ফলে মোরগের গোশত দুর্গন্ধযুক্ত হয়না যেভাবে উটের গোশত দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে।আর গোশত পাক নাপাক হওয়ার মানদন্ড হলো দুর্গন্ধ হওয়া না হওয়ার উপর।( বাদায়ে সানায়ে-৫/৪০)

আরো জানুনঃ 
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি গোশতে হারাম খাবারের গন্ধ না পাওয়া যায়,তাহলে সেই মুরগী/মাছ  খেতে কোনো  সমস্যা নেই।
,
যেই হারাম খাদ্য সে খেয়েছে,সেটার গন্ধ এখানে আলোচিত বিষয়। 
,   
যদি সেই মুরগী/মাছ হারাম খায়,আর তার গোশত থেকে উক্ত হারাম বস্তুর গন্ধ বের হয়,তাহলে সেই মুরগী/মাছ খাওয়া জায়েয নেই।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...