আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
আসসালামুআলাইকুম, বাংলাদেশে এমন এক গ্রামে আমার স্থায়ী ঠিকানা যেখানে প্রায় ৮০% পীরভক্ত, জিন্দা পীর রে সিজদাহ করে, একটি আলমারির মতন বস্তু কে সিজদাহ করে, এছাড়াও ওই পীর (ইন্ডিয়া থাকে) একবার এই গ্রামের এই মসজিদে আসছিল তিনি যেখানে পা দিয়েছিল তারা সেখানেও সিজদাহ করে চুমু খায়, এখন তো তারা শিরক করে + মুশরিক হয়ে গেছে(আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে হেদায়েত দান করুন)।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে এখানে এসে যে মসজিদ আছে সেখানে মুশরিকের পিছনে কি নামাজ পড়লে নামাজ হবে?

আরেকটি প্রশ্ন ছিল, আমার পরিবার ও ওই পীরভক্ত দের সাথে সামিল, ছোটবেলা আমিও অবুঝের মতন তাদের সাথে সাথে এইসব সিজদাহ করে ফেলেছি,(বালেগ হওয়ার পর ও বেশ কিছুবার করেছি) সঠিকভাবে ইসলামী জ্ঞান অর্জন শুরু করার পর থেকে আল্লাহর রহমতে হেদায়েত প্রাপ্ত হয়ে ১৬ বছর বয়স থেকে আমি এই শিরক থেকে সম্পূর্ণ সরে এসেছি,আমার এই শিরকের গুনাহ কী মাফ হবে? আমি কি এখনো মুশরিক?

1 Answer

0 votes
by (607,050 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ও মুয়াযযিনের ব্যাপারে বলেছেন,

ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺿﺎﻣﻦ ﻭﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻣﺆﺗﻤﻦ، ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﺭﺷﺪ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﻭﺍﻏﻔﺮ ﻟﻠﻤﺆﺫﻧﻴﻦ

‘ইমাম হচ্ছে দায়িত্বশীল আর মুয়াজ্জিন আমানতদার, হে আল্লাহ! ইমামদের সঠিক পথ দেখান এবং মুয়াজ্জিনদেরকে ক্ষমা করুন’। (তিরিমিযী ২০৭)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

ألا كُلُّكُمْ راعٍ ، وكُلُّكُمْ مَسؤولٌ عن رَعِيَّتِهِ’

তোমরা প্রত্যেকে দায়িত্বশীল আর তোমাদের প্রত্যেককে সে দায়িত্ব সম্পর্কে জবাব দিতে হবে।’ ( বুখারি ৭১৩৮)

 সুতরাং যোগ্য ইমাম নির্বাচন করার ক্ষেত্রে মসজিদ কমিটি দায়িত্বশীল। জেনে শুনে অযোগ্য ব্যক্তিকে ইমাম নিয়োগ দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ (বিশেষতঃ মসজিদ কমিটিকে) সমাজের সকলের হক নষ্টকারী হিসেবে আল্লাহর কাছে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।

এজন্য মসজিদ কমিটির দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কর্তব্য হল, মুসলমান,কোরআন-সুন্নাহর যথাযথ অনুসারী,সঠিক কিরাআত আদায় কারী যোগ্য ইমাম নির্বাচন করা।

قال الإمام الشافعي رحمه الله :
" الْكَافِرَ لَا يَكُونُ إمَامًا فِي حَالٍ ، وَالْمُؤْمِنُ يَكُونُ إمَامًا فِي الْأَحْوَالِ كُلِّهَا ، إلَّا أَنَّهُ لَيْسَ لَهُ أَنْ يُصَلِّيَ إلَّا طَاهِرًا .
وَهَكَذَا لَوْ كَانَ رَجُلٌ مُسْلِمٌ ، فَارْتَدَّ ، ثُمَّ أَمَّ وَهُوَ مُرْتَدٌّ : لَمْ تَجْزِ مَنْ خَلْفَهُ صَلَاتُهُ حَتَّى يُظْهِرَ التَّوْبَةَ بِالْكَلَامِ قَبْلَ إمَامَتِهِمْ ، فَإِذَا أَظْهَرَ التَّوْبَةَ بِالْكَلَامِ قَبْلَ إمَامَتِهِمْ أَجْزَأَتْهُمْ صَلَاتُهُمْ مَعَهُ " .
انتهى من "الأم" (1/ 195) .

ইমাম আল-শাফি'ঈ (রহঃ) বলেন:

"কোনও অবস্থাতেই কাফের ইমাম হতে পারে না, আর মুমিন সকল অবস্থাতেই ইমাম হতে পারবে, তবে পবিত্র না হলে তাকে নামাজ পড়ার অনুমতি নেই। একইভাবে, যদি কোন মুসলিম ব্যক্তি মুরতাদ হয়ে যায়, তারপর মুরতাদ অবস্থায় নামাজের ইমামতি করে, তাহলে তার পিছনের লোকদের নামাজ বৈধ হবে না যতক্ষণ না সে তাদের নামাজের ইমামতির আগে কথা বলে তওবা করে। তাই যদি সে তাদের নামাজের ইমামতির আগে কথা বলে তওবা করে..."

وقال الشيرازي في "المهذب" (1/183) :
" وَلَا تَصِحُّ إمَامَةُ الْكَافِرِ لِأَنَّهُ لَيْسَ مِنْ أهل الصلاة ، فَإِنْ تَقَدَّمَ وَصَلَّى بِقَوْمٍ لَمْ يَكُنْ ذَلِكَ إسْلَامًا مِنْهُ ، لِأَنَّهُ مِنْ فُرُوعِ الْإِيمَانِ فَلَا يَصِيرُ بِفِعْلِهِ مُسْلِمًا ، كَمَا لَوْ صَامَ رَمَضَانَ أَوْ زَكَّى الْمَالَ ، وَأَمَّا مَنْ صَلَّى خَلْفَهُ : فَإِنْ عَلِمَ بِحَالِهِ لَمْ تَصِحَّ صَلَاتُهُ ، لِأَنَّهُ عَلَّقَ صَلَاتَهُ بِصَلَاةٍ بَاطِلَةٍ ... " انتهى.

একজন কাফের ব্যক্তির ইমামতি বৈধ নয়, কারণ সে নামাজী নয়। যদি সে এগিয়ে যায় এবং একদল লোকের নামাজে ইমামতি করে, তাহলে তার পক্ষ থেকে এটি ইসলামের প্রকাশ নয়, কারণ এটি ঈমানের একটি শাখা, এবং তার কাজ তাকে মুসলিম করে না, ঠিক যেমন সে রমজানের রোজা রেখেছে বা তার সম্পদের যাকাত দিয়েছে। আর যে ব্যক্তি তার পিছনে নামায পড়ে, যদি সে তার অবস্থা জানে, তাহলে তার নামায শুদ্ধ হবে না, কারণ সে তার নামাযকে একটি অবৈধ নামাযের উপর শর্তযুক্ত করেছে।

وقال ابن قدامة رحمه الله :
" الْكَافِرَ لَا تَصِحُّ الصَّلَاةُ خَلْفَهُ بِحَالٍ سَوَاءٌ عَلِمَ بِكُفْرِهِ بَعْدَ فَرَاغِهِ مِنْ الصَّلَاةِ , أَوْ قَبْلَ ذَلِكَ , وَعَلَى مَنْ صَلَّى وَرَاءَهُ الْإِعَادَةُ ، وَبِهَذَا قَالَ الشَّافِعِيُّ , وَأَصْحَابُ الرَّأْيِ , وَقَالَ أَبُو ثَوْرٍ , وَالْمُزَنِيُّ : لَا إعَادَةَ عَلَى مَنْ صَلَّى خَلْفَهُ وَهُوَ لَا يَعْلَمُ ; لِأَنَّهُ ائْتَمَّ بِمَنْ لَا يُعْلَمُ حَالُهُ , فَأَشْبَهَ مَا لَوْ ائْتَمَّ بِمُحْدِثٍ " انتهى من "المغني" (2/16) .

ইবনে কুদামাহ (রহঃ) বলেন: “কোনও অবস্থাতেই কাফের ব্যক্তির পিছনে নামায বৈধ নয়, সে নামায শেষ করার পরে বা তার আগে তার কুফর সম্পর্কে জানতে পারে। যে ব্যক্তি তার পিছনে নামায পড়ে সে অবশ্যই তা পুনরাবৃত্তি করবে। আশ-শাফিঈ এবং আলেমগণ এটাই বলেছেন। আবু সাওর এবং আল-মুজানি বলেছেন: যে ব্যক্তি না জেনে তার পিছনে নামায পড়ে তার জন্য তা পুনরাবৃত্তি করা বাধ্যতামূলক নয়, কারণ সে এমন

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
মুশরিকের পিছনে নামাজ পড়লে নামাজ হবেনা। সেই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে।

সুতরাং দ্রুত উক্ত ইমামকে বাদ দিয়ে মুসলমান,কোরআন-সুন্নাহর যথাযথ অনুসারী,সঠিক কিরাআত আদায় কারী যোগ্য ইমাম নির্বাচন করবেন।

(০২)
খালেস দিলে তওবা করে শিরক থেকে ফিরে আসলে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...