বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
8981 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছিলাম যে, হাদীসে এসেছে,ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,
أن النبي صلى الله عليه وسلم قال : ( لَا تَزُولُ قَدَمُ ابْنِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عِنْدِ رَبِّهِ حَتَّى يُسْأَلَ عَنْ خَمْسٍ : عَنْ عُمُرِهِ فِيمَ أَفْنَاهُ ، وَعَنْ شَبَابِهِ فِيمَ أَبْلَاهُ ، وَمَالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وَفِيمَ أَنْفَقَهُ وَمَاذَا عَمِلَ فِيمَا عَلِمَ )
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামাত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগপর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট হতে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কি কাজে তা বিনাশ করেছে; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কি কি খাতে খরচ করেছে এবং সে যত টুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মুতাবিক কি কি আমল করেছে।(সুনানু তিরমিযি-২৪১৬)
গল্প-উপন্যাস যেগুলোর কথা আপনি উল্লেখ করেছেন, সবগুলোই পড়া জায়েজ। শর্ত হচ্ছে দুটি। প্রথমত, অশ্লীল ও যৌন সুড়সুড়ি দেয় এমন কিছু হতে পারবে না। কারণ, এগুলো পড়লে এর মাধ্যমে আপনি নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হবেন। অনেক গল্প আছে, যেগুলোতে মানুষের নৈতিক অবক্ষয়ের জন্য অনৈতিক কথাবার্তা উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, ইসলামী শরিয়তে হারাম, নিষিদ্ধ, গর্হিত—এ ধরনের কোনো বিষয় যদি সেখানে এসে যায়, তাহলে সেটাও নিষিদ্ধ হবে। যেমন শিরক শিক্ষা দিচ্ছে, যৌনতার শিক্ষা দিচ্ছে, মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষা দিচ্ছে, যদি এমনি কিছু সেখানে থাকে, তাহলে সেগুলো পড়বেন না।
কিন্তু এমন গল্প, যেখানে সামাজিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সমাজের হতদরিদ্র মানুষের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে বা বিজ্ঞানের সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়েছে বা বর্তমান প্রাণিজগৎ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া আছে, তাহলে সেগুলো পড়লে মানুষের জ্ঞান সমৃদ্ধ হয় এবং মানুষের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এগুলো জ্ঞানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এ জন্য এ ক্ষেত্রে সেগুলো জায়েজ। কারণ, নিষিদ্ধ বা হারাম কাজ সেখানে নেই।
সুতরাং আমরা যে দুটি শর্ত বলেছি, এই দুটি শর্ত যদি না থাকে, তাহলে এ ধরনের উপন্যাস, গল্প, কবিতা পড়া জায়েজ।(খালেদ সাইফুল্লাহ)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্ন ১:আবহমানকালের সাহিত্যকর্ম যেগুলোতে ইসলামিক সংস্কৃতির বাইরে হারাম কোনো বিষয় রয়েছে যেমন প্রেম, হারাম ড্রেস, চুরি ডাকাতি বা থ্রিলার টাইপ স্টোরি) এগুলো পড়া জায়েয হবে না।
প্রশ্ন ২: যেসব বই অন্য ধর্মের কালচার হালকা টাচ রাখে কিন্তু তাছাড়া তেমন কোন হারাম বিষয়কে প্রোমোট করে না (যেমন ফেলুদা, বোমকেশ, টিনটিন ইত্যাদি) সেগুলো পড়াও অনুচিৎ।তবে শিরক থাকলে জায়েয হবে না।
প্রশ্ন ৩:বাস্তবতা বর্জিত বই (যেমন কল্পকাহিনী, সায়েন্স ফিকশন, হ্যারি পটার) এগুলো পড়া নাজায়েয।
প্রশ্ন ৪:প্রাচীন কোনো সমাজ সম্পর্কে জানার উদ্দেশ্যে যদি কোনো বই পড়ি যেটাতে শির্ক ও অন্যান্য পাপসমূহ স্বাভাবিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে (যেমন শেক্সপিয়ার সমগ্র, চার্লস ডিকেন্সের কিছু বই ইত্যাদি)
যদি এই প্রচীন সমাজ সম্পর্কে জানার উদ্দেশ্য থাকে,ইসলামী মূল্যবোধকে বাড়ানো, তাহলে এটা অবশ্যই রুখসত হবে।তথা পড়তে পারবেন।