আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (109 points)
১।
ফেব্রুয়ারিতে পিরিয়ড ১৫ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত ছিল

মার্চের ১৩ থেকে ১৭/১৮ তারিখ পর্যন্ত ব্রাউনিশ ডিসচার্জ তথা লাল/খয়েরি রঙের ছোপ (ইস্তিহাযা হলে যেমন হয়) দেখা যায়,পুরোপুরি ব্লিডিং না

তারপর গ্যাপ ছিল,২৩ থেকে আবার একইরকম ব্রাউনিশ ডিসচার্জ  দেখা যায়।

তারপর ২৫ থেকে পুরোপুরি  হেভি ফ্লো আকারে brownish discharge আসছে, বুঝা যাচ্ছে এটাই পিরিয়ডের ব্লাড।

আমি কি এই brownish discharge  নিয়ে নামায আদায় করব নাকি এই সময়টাকে পিরিয়ড ধরে গত ১৩ থেকে ১৮ তারিখের সময়টাকে ইস্তিহাযা ধরব আর পরে ঐ সময়ের কাযা আদায় করে নিব?

আমার  এমন সমস্যা হচ্ছে কিছুমাস ধরে,ইস্তিহাযা আর ইররেগুলার পিরিয়ড।
টেকনিক্যালি এটা হয়ত ইস্তিহাযা হবে,কিন্তু এই হেভি ফ্লো নিয়ে নামায আদায় কীভাবে করব?

২। যদি ইস্তিহাযা হয়
তাহলে আমায় প্রতি ওয়াক্তে ওযু করতে হবে
আমার গতপরশু পা মচকে যায়
আমাকে ৩ সপ্তাহের বেড রেস্ট দিয়েছে
আমার জন্য প্রতি ওয়াক্তে ওযু করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে কারণ ওয়াশরুমে যাওয়াটাই এখন অনেক কষ্টকর হচ্ছে, একপায়ের উপর ভর দিয়ে থাকা লাগছে আর কোনো এক হাত দিয়ে কিছু সাপোর্ট হিসেবে না ধরলে পড়ে যাচ্ছি

এক্ষেত্রে ওযু ও নামাযের সমাধান কী?

1 Answer

0 votes
by (606,540 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী তুহর তথা দুই হায়েজের মাঝে পবিত্রতার সর্বনিম্ন সীমা পনেরো দিন।
এই পনেরো দিনের মধ্যে কোনো রক্ত আসলে সেটি হায়েজ নয়,বরং সেটি ইস্তেহাজা তথা অসুস্থতা।
এই সময়ে নামাজ রোযা আদায় করতে হবে।    
হজরত হান্নাদ [রহ] আম্মাজান আয়েশা [রা]-এর হাদিস বর্ণনা করেছেন যে, ফাতিমা বিনতে হুবাইশ নামক এক নারী একবার রাসুল [সা]-এর সমীপে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল, আমি একজন ইস্তেহাযাগ্রস্ত মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি কি নামাজ পড়া ছেড়ে দেবো? রাসুল [সা] বললেন, না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয়; বরং এ হলো শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়েযের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে দিনগুলি নামাজ ছেড়ে দেবে। আর হায়েযের দিন চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নেবে এবং নামাজ আদায় করবে। [তিরমিজি, হাদিস-১২৫]
,
আরো জানুনঃ   

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হায়েযের সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো ৩ তিন,আর সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন।
এ ১০দিনের ভিতর লাল,হলুদ,সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে। (বেহেশতী জেওর-১/২০৬)  

হাদীস শরীফে এসেছে   
أقل الحیض للجاریۃ البکر والثیب ثلاثۃ أیام ولیالیہا وأکثرہ عشرۃ أیام
دار قطني، السنن، 1: 219، رقم: 61
রাসুল সাঃ বলেন  মহিলাদের হায়েজের সর্বনিম্ন সীমা হলো ৩ দিন ৩ রাত,সর্বোচ্চ সীমা হলো ১০ দিন ১০ রাত।

হায়েজের দিন গুলোতে যেই কালারেরই রক্ত হোক,সেটি হায়েজের রক্ত বলেই গন্য হবে। 
উক্ত সময় নামাজ রোযা ইত্যাদি আদায় করা যাবেনা।
(কিতাবুল ফাতওয়া ২/৭৬)

তবে স্পষ্ট সাদা কালারের কিছু বের হলে সেটাকে হায়েজ বলা যাবেনা।
(ফাতাওয়ায়ে হক্কানিয়াহ ২/৮৩৩)

উম্মে আলক্বামাহ তথা মার্জনা (مَوْلاَةِ عَائِشَةَ) হইতে বর্ণিত,

عن أم علقمة أَنَّهَا قَالَتْ : " كَانَ النِّسَاءُ يَبْعَثْنَ إِلَى عَائِشَةَ أُمِّ الْمُؤْمِنِينَ بِالدُّرْجَةِ فِيهَا الْكُرْسُفُ فِيهِ الصُّفْرَةُ مِنْ دَمِ الْحَيْضَةِ يَسْأَلْنَهَا عَنْ الصَّلَاةِ فَتَقُولُ لَهُنَّ لَا تَعْجَلْنَ حَتَّى تَرَيْنَ الْقَصَّةَ الْبَيْضَاءَ تُرِيدُ بِذَلِكَ الطُّهْرَ مِنْ الْحَيْضَةِ "

তিনি বলেনঃ (ঋতুমতী) স্ত্রীলোকেরা আয়েশা (রাঃ)-এর নিকট ঝোলা বা ডিবা (دُرْجَة) পাঠাইতেন, যাহাতে নেকড়া বা তুলা (كُرْسُفْ) থাকিত। উহাতে পাণ্ডুবৰ্ণ ঋতুর রক্ত লাগিয়া থাকিত। তাহারা এই অবস্থায় নামায পড়া সম্পর্কে তাহার নিকট জানিতে চাহিতেন। তিনি [আয়েশা (রাঃ)] তাহাদিগকে বলিতেনঃ তাড়াহুড়া করিও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ সাদা (বর্ণ) দেখিতে না পাও। তিনি ইহা দ্বারা ঋতু হইতে পবিত্রতা (طُهْر) বুঝাইতেন।(মুয়াত্তা মালিক-১২৭)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মার্চের ১৩ থেকে ১৭/১৮ তারিখ পর্যন্ত যে স্রাব এসেছে,এটা যেহেতু পবিত্রতার ১৫ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর শুরু হয়েছে,পাশাপাশি এটি ৩ দিন হতেও বেশি হয়েছে,সুতরাং এটি নিঃসন্দেহে হায়েজ।

এ সময়ে নামাজ রোযা বন্ধ রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে ২৫ শে মার্চ হতে যে ব্লিডিং হয়েছে,এটিকে ইস্তেহাজা ধরবেন।  এসময় নামাজ রোযা চালিয়ে যাবেন।

(০২)
এক্ষেত্রে আপনি অন্যের সাহায্যে নিয়ে হলেও প্রতি ওয়াক্তে অযু করবেন। বা কেহ আপনাকে অযু করিয়ে দিবে।

দাড়িয়ে থেকে নামাজ পড়তে না পারলে সেক্ষেত্রে মাটিতে বসে নামাজ আদায় করবেন। 

এক্ষেত্রে যেভাবে সুবিধা হয়,সেভাবে বসেই নামাজ আদায় করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...