আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (140 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম।

বিআরডিবি তে চাকুরী করেন এমন কেউ, যিনি মহিলা দের উন্নয়ন এর অনেক প্রকল্প এর সাথে জড়িত। এর পাশাপাশি ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়ার কাজেও জড়িত। সরকারি চাকুরি এটি। এমন কারো বাসায় যাওয়া বা খাবার জামা কাপড় হাদিয়া দিলে ব্যবহার করার বিধান কি? যদি কোনো কারণে তাদের বাসায় খেতে হয় তবে সমপরিমাণ টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিলে হবে?
উনি বেতন পান সরকার থেকে। কিন্তু লোন এর টাকা তুলার কাজে জড়িত।( এর পাশাপাশি নারীদের অন্যান্য উন্নয়ন এর কাজ ও করেন যেমন বিভিন্ন স্কিল শিক্ষা দেওয়া ইত্যাদি)

দয়া করে জানাবেন।

2. উনি কাপড় কেনার টাকা দেন, ওই টাকা দিয়ে কাপড় কিনা হলে, যদি আসলে উনার ইনকাম হারাম হয় তবে কাপড় কেনার টাকার সমপরিমাণ টাকা দান করে দিলে হবে নাকি কাপড় টি দান করে দিতে হবে? সবসময় কাপড় দান করার মতো সুযোগ না থাকলে?

3। উনি ফ্রিজ কেনার টাকা দিয়েছিলেন। Tkhn উনার ইনকাম জানা ছিলনা। এখন ওই ফ্রিজ তো ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। বিক্রি করা সম্ভব না। কি করণীয়? সমপরিমাণ টাকা দান করে দিলে হবে? সওয়াবের নিয়ত ছাড়া?

4. আত্মীয়তা রক্ষার্থে যদি উনার বাসায় কিছু খেতে হয় তবে ওই পরিমাণ টাকা পড়ে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দেওয়া যাবে? উনার দেওয়া শুকনো খাবার কি গরীব দের দিয়ে দিতে হবে নাকি ওই নিজেরা খেয়ে  ওই পরিমাণ টাকা আনুমানিক দান করে দিলে হবে? এত প্রশ্নের জন্য দুঃখিত হুজুর। বিস্তারিত জানা জরুরি তাই

দয়া করে জানাবেন।
by
একটু জানালে মুনাসিব হতো হুজুর

1 Answer

0 votes
by (606,720 points)
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,

فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির অধিকাংশ কাজ যদি লোন সংশ্লিষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ বেতনই যেহেতু হারাম, তাই তার বাসায় কোন দাওয়াত খাওয়া যাবেনা।
দাওয়াত খেলে সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।

আর যদি তার অধিকাংশ কাজ শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে নারীদের বিভিন্ন স্কিল শিক্ষা দেওয়া বা অন্য কোন হালাল কাজ হয়, লোন সংশ্লিষ্ট কাজ যদি তার খুবই কম হয়,সেক্ষেত্রে তার বেতনের অধিকাংশ ইনকাম যেহেতু হালাল, তাই এমতাবস্থায় তার বাসায় দাওয়াত খাওয়া যাবে।

(০২)
এটি আপনার ইচ্ছা। আপনি কাপড়টি দান করতে পারেন অথবা সমপরিমান টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করতে পারেন।

(০৩)
হ্যাঁ,সমপরিমাণ টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করলে হবে।

(০৪)
ঐ পরিমাণ টাকা পরে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দেওয়া যাবে।

উনার দেওয়া শুকনো খাবার হোক অন্য খাবার হোক,গরীব দের দিয়ে দিতে হবে।

নিজেরা খেয়ে ফেললে ওই পরিমাণ টাকা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করতে হবে।

★উল্লেখ্য, যদি তার অধিকাংশ কাজ শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে নারীদের বিভিন্ন স্কিল শিক্ষা দেওয়া বা অন্য কোন হালাল কাজ হয়, লোন সংশ্লিষ্ট কাজ যদি তার খুবই কম হয়,সেক্ষেত্রে তার বেতনের অধিকাংশ ইনকাম যেহেতু হালাল, তাই এমতাবস্থায় ২.৩.৪ প্রশ্নের ক্ষেত্রে গরিব মিসকিনদের কোনো দান করা আবশ্যক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...