اَلسَّلاَمْ عَلَيْـــــــــــكُمْ وَ رَحْمَةُ اللہِ وَبَرَكَاتُهُ
আমার লেখা টা বড় হতে পারে, শায়েখকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
১)আমার বিয়ের ৩ মাস হলো, আলহামদুলিল্লাহ। আমার জাওজের বিবাহযোগ্যা একটা ছোট ভাই আছে। আমি বিয়ের আগে এটা জানতে পেরে ছেলেকে জানিয়েছিলাম পর্দার বিষয়ে, সে আমাকে আলাদা নিয়ে রাখার কথা বলেছিলো। কিন্তু এই মুহুর্তে সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে সে আপাতত একসাথে ই রাখবে বলেছিলো, কিন্তু আমার পর্দার হেফাজতের দায়িত্ব নিবে।
আমি মেনে নেই। বিয়ের পর দেবর বাসায় থাকলে বের হতাম না। কিন্তু আমার শাশুড়ী ননদ কাজ করানোর জন্য বকা দিতো, খোটা দিত। এজন্য দেবরের দরজা ভিরিয়ে দিয়ে কাজ কাম করতাম। কথা ছিলো সে বের হওয়ার আগে বলবে। এতে দেবরও মন খারাপ করে ভীষণ ভাবে। এ নিয়ে দেবরের অনেক ঝামেলা হয় আমার জাওজের সাথে।
আবার কিছুদিন যেতে না যেতে দেবর বের হওয়ার সময় বলত না। যখন দেখত আমি আছি তখন বলত। আমি কখনও তার দিকে তাকায়নি। কিন্তু সে বের হয়ে বেশ কয়েকবার দেখেছে (সিচুয়েশনে প্রমাণ পেয়েছি, আল্লাহ ভালে জানেন)। তাছাড়াও তাঁদের অসতর্কতা / শয়তানের কারণে তার সামনে আমি কয়েকবার চলে গেছি।
এখন আমার জাওজ এবং আমি উভয়ে চাচ্ছি সেপারেট থাকার। কিন্তু এই নিয়ে শাশুড়ী ননদ এমনকি দেবরও অনেক কথা বলে৷ আমার মা কে ফোন দিয়ে অভিযোগ করেছে। কিন্তু আমি বিয়ের আগে ই আমার পর্দা নিয়ে বলেছিলাম ছেলেকে। যে আমি এখানে অনেক স্ট্রিক্ট। তারা বলে যে আমও এটা তাদের বলিনি, তারা জানলে বিয়ে দিতনা। তারা বলে পর্দা, ইসলাম এত কঠিন না। মায়ের থেকে ছেলেকে আলাদা করলে মায়ের অভিশাপ লাগবে, মায়েরও হক্ব আছে আরো অনেক কথা। শাশুড়ী তার এই সন্তানকে অনেক মহাব্বত করে এবং এই সন্তানের জন্যই সবচেয়ে বেশি খরচ করেছে। এবং তিনি স্ট্রোকের রুগী। কথা বলতে বলতে ফিতনা করে এবং কাঁদে। মনে হয় যেন তার শরীরের কিছু হয়ে যাবে। যদিও এমন ঘটনা প্রায়ই হয়। তাদের মুখের আওয়াজও ভয়ানক উচু এবং খারাপ। আমি কিছু বলিনা এবং তাদের কথার আওয়াজের চোটে বলাও যায়না। আমি এই অব্দী এত কষ্ট পাইনি, যতটা তাদের কথায় পেয়েছি। আল্লাহ সাক্ষী আছেন। আমার প্রশ্ন হলো, আলাদা করে থাকার জন্য শাশুড়ী অনেক বেশি কষ্ট পাবে, এবং তারা আমাকে অভিশাপও দিয়েছে যে এমন করলে অনেক খারাপ হবে। এই অবস্থায় আমি যদি জাওজকে নিয়ে আলাদা থাকি তবে কি বিধান হবে? আমার এই মুহুর্তে কি করা উচিত? কীভাবে ধৈর্য্য ধরব? কীভাবে সহ্য করব? এবং আলাদা হলেও কি তাট অভিশাপ লাগবে কি না। এক্ষেত্রে কি বিধান। নসিয়ত করুন শায়েখ।
২) শাশুড়ী ননদের কথা হলো, বউমা বাড়ির সব দায়িত্ব নিবে, কাজ কাম করবে৷ শশুড় শাশুড়ীর জামা কাপড় ধোয়া, সমস্ত রান্না বান্না সহ সব কাজ করবে। আমি জানি যে তারা আমার কাছ থেকে এই হক্ব পাওয়া অধিকার রাখেনা। তবুও যেহেতু শাশুড়ী স্ট্রোকের রুগী তাই আমি নৈতিকতার দিক বিবেচনা করে সর্বচ্চ পরিমান চেষ্টা করি। যদিও তার মেয়ে আছে, এবং মেয়ে অনেক কাজ পারে। কিন্তু তারা চাই যেন আমি করি। শাশুড়ী স্ট্রোকের রুগী আর ননদের একটা বাচ্চা আছে। আমি আমার সাধ্যমত করি কিন্তু মাঝেমধ্যে ভুলে যায়, বা পারিনা, বা ঘুম থেকে উঠতে পারিনা, অসুস্থ থাকি। যেহেতু আমি এই লাইফে অভ্যস্ত না। এমন কাজ করতে বিন্দুমাত্র অভ্যস্ত না। এতেও খোটা দেয়।আমার কাজ তাদের মত চাই তারা, ভুল ও ধরে আবার মজা ঠাট্টাও করে। অনেক সময় আমার পারসোনাল বিষয় নিয়ে জিজ্ঞেস করত যা আমার একদম ই পছন্দ না। আমি রান্না বান্না নিজ চেষ্টা অনুযায়ী করি। কাজ কামও সাধ্যমত করি আল্লাহর জন্য। কিন্তু তাদের আরো আশা যে, কাপড় কাচতে হবে, তাদের সাথে বসে গল্প করতে হবে (যা গিবতের দ্বার খুলে দেয়, আমাকে বক দেওয়ার আর পারসোনাল জিনিস জিজ্ঞেস করার সুযোগ করে দেয়, তাই সেভাবে বসিনা) , আরো অনেক। এখানে আমার প্রশ্ন
২) শশুড়, শাশুড়ী কি কি হক্ব পাই আমার থেকে। উপরে যা যা লিখেছি, তা কি সে আমার কাছ থেকে পাবার অধিকার রাখে?। সে অসুস্থ। অনেক কষ্ট করে ব্যাবসা করে। সে চাইলে খরচ কমাতে পারে, তার মেয়ে চাইলে কাজ কমাতে পারে। কিন্তু কিছুটা সুচিবাই টাইপস হওয়ায় বাসন মাজাসহ পরিষ্কারের কাজ বেশি। যা করতে গেলে অনেক সময় চলে যায়। আবার খাবার দাবার রাজকীয় টাইপস খায়, এক এক জনের খাবার এক এক রকম কিছুটা। যার জন্য শাশুড়ীর খরচ বেশি, তাই তার আরো ব্যাবসাতে কষ্ট বেশি, ফলে সে আরো অসুস্থ। এক্ষেত্রে সে যেহেতু নিজে নিজে কাজ বাড়িয়ে নিচ্ছে সেক্ষেত্রে আমার কাছ থেকে সে অসুস্থ হওয়ায় জন্য কি কোনো হক্ব পাই? নবিজি সা: প্রতিবেশির হক্ব নিয়েও অনেক সতর্ক করেছেন। সেখানে আমার শাশুড়ী অসুস্থ হওয়ায় কি আমার তাকে ছেড়ে যাওয়া উচিত হবে? এখানে থেকে আমার পর্দাটাও মেইনটেইন হচ্ছেনা ভালো করে। আর তাছাড়া আমাকে অনেক কথা শোনায়, যেটা আমি নিতে পারিনা।
৩) শশুড়, শাশুড়ী আমার জাওজের থেকে কি কি হক্ব পাই? আলাদা থাকলে সেই হক্ব আাদায় সম্ভব?
৪) শশুড় আমার কাছ থেকে কি কি হক্ব পাই? ননদ চাই আমি প্রতিদিন শশুড় শাশুড়ীর বিছানা পরিষ্কার করি এবং শশুড়কে খাবার দেই। আমার খুব লজ্জা করে শশুড়ে খেদমত করতে৷
৫)এইসব আমাকে অনেক কষ্ট দেই। আমি মানসিকভাবে অনেক বেশি ভেঙ্গে গেছি। ইবাদতে গাফেল অনেক বেশি হয়ে গেছি৷ আমাকে নসিয়ত করুন শায়েখ। কীভাবে আল্লাহ সাথে সুসম্পর্ক করব।