আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (11 points)
আমার পরিচিত একজনের প্রশ্ন: তিনি বলেন -

১. আসসালামু আলাইকুম শায়খ। আমার স্বামী রেগুলার আমাদের বাসার খাদিমার বেতন কাটেন। কিন্তু খাদিমাদের বেতন কাটলে তারা কাজ ছেড়ে চলে যায়, এতে আমি দুই বাচ্চা এবং শ্বাশুড়ি কে নিয়ে বিপদে পড়ি। তখন উনি আমার উপর অনেক উচ্চবাচ্য করেন, অশ্রাব্য গালিগালাজ করেন কেন আমি একলা বাসার সব কাজ গুছায় রাখতে পারিনা। যেহেতু আমার শারীরিক সক্ষমতা কম, তাই আমি স্বামীর পকেট থেকে চুরি করে খাদিমার বেতন দিয়ে খাদিমা রাখি, যাতে বাসায় শান্তি বজায় থাকে।

 উল্লেখ্য আমার স্বামীর এরকম ৩-৪ জন খাদিমা রাখার সামর্থ্য আছে, কিন্তু উনি অনেক হিসাবি শুধুমাত্র আমার ক্ষেত্রে। নিয়মিত বন্ধু দের সাথে অযথা আড্ডা বা নিজের শখ পূরণে অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটায় তিনি প্রতি মাসে প্রচুর টাকা খরচ করেন।
আমার শ্বাশুড়ির তিন ছেলে উনার উপর প্রতিযোগিতা করে খরচ করে মাশাল্লাহ। এ-ই কারণে উনার হাতে সবসময় টাকা থাকে, এবং নিজের পেনশন ও পুরোটাই থাকে। কিন্তু উনি প্রচন্ড হিসেবি। উনি খাদিমাকে দিয়ে প্রচুর কাজ করান, যার ফলস্বরূপ আমাকে আমার স্বামীর পকেট থেকে এক্সট্রা টাকা কাটতে হয়।
যেমন উদাহরণ স্বরূপ খাদিমাকে আমার দুই কাজের জন্য ২০০০/- দিয়ে রাখা হইসে। এখান থেকে আমার স্বামী ২/৩/৫ শত কেটে রাখে। আবার শ্বাশুড়ি এক্সট্রা আরও ৩-৪ টা কাজ বেশি করানোতে খাদিমার প্রকৃত বিল আসে দুই হাজারের জায়গায় ৪-৫ হাজার। তখন ও-ই টাকা আমাকে দিতে হয়।

 সবসময় যে স্বামীর পকেট কাটি, তা না। যখন আমার হাতে স্বামী কোনো টাকা দেয়, বাচ্চাদের জন্য বা নিজের ঔষধের জন্য, অথবা নিজে যদি বাচ্চা পড়িয়ে দুই চার পয়সা পাই, সব চলে যায় খাদিমার খাতে। এটা নিয়েও স্বামী সন্দেহ করে যে টাকা কোথায় খরচ করি। খাদিমার খাতে খরচ করি এটা জানতে পারলে হয়তো আমানতের খেয়ানতকারী আখ্যা দিয়ে আর সংসারই করবেনা। উনি প্রচন্ড রাগী এবং বদমেজাজি। আমার শ্বাশুড়ি ও।
এখন প্রশ্ন দুইটা, এক, আমার এ-ই চৌর্যবৃত্তি ঠিক হচ্ছে কিনা। দুই, আমার শ্বাশুড়ির ব্যাগ থেকে এবার কিছু টাকা নিয়েছি। ৩০০০/- এ-ই টাকা দিয়ে এ-ই মাসের খাদিমার বেতন দিতে চাই। এ-ই চুরি কি ঠিক হলো? যদি ঠিক না হয়, আমি ফেরত দিয়ে দিবো। কারণ শ্বাশুড়ির টাকার প্রতি আমার বিন্দুমাত্র লোভ নেই। এতকাল সামনে পড়েছিলো, ধরিনি। এবার খুব কষ্ট লাগলো, এইজন্য নিয়েছি। কিন্তু ঠিক বেঠিক জানিনা, তাই রেখে দিয়েছি, খরচ করিনি।

২. শুনেছি নফল ও সুন্নাত নামাজে একাধিক নিয়ত করা যায়। সেই হিসাবে আমি কি তারাবির নামাজের নিয়তের ক্ষেত্রে একাধিক নামাজের নিয়ত করতে পারবো? যেমন প্রথম দুই রাকাত সালাতুল হাজত ও তারাবির নামাজ। পরের দুই রাকাত সালাতুত তাওবা ও তারাবির নামাজ। এমন আর কি।

1 Answer

0 votes
by (632,880 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
স্ত্রী তার স্বামীর মাল থেকে ওয়াজিব হক্ব পরিমাণ সম্পদ গ্রহণ করতে পারবে।অর্থাৎ স্বামীর উপর স্ত্রীর খোরাকি এবং নিজ সন্তানাদির খোরাকি পরিমাণ শরীয়ত কর্তৃক যা ওয়াজিব ছিলো, সেটাকে স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে।

 ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ : ﺃﻥ ﻫﻨﺪ ﺑﻨﺖ ﻋﺘﺒﺔ ﻗﺎﻟﺖ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﻥ ﺃﺑﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﺭﺟﻞ ﺷﺤﻴﺢ ﻭﻟﻴﺲ ﻳﻌﻄﻴﻨﻲ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻨﻲ ﻭﻭﻟﺪﻱ ﺇﻻ ﻣﺎ ﺃﺧﺬﺕ ﻣﻨﻪ ﻭﻫﻮ ﻻ ﻳﻌﻠﻢ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺧﺬﻱ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻚ ﻭﻭﻟﺪﻙ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ .
"হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,হিনদ বিনতে উতবা রাঃ নবী কারীম সাঃ এর কাছে (নিজ স্বামীর অভিযোগ নিয়ে এসে) বললেনঃহে রাসুলুল্লাহ সাঃ আবু সুফিয়ান একজন কৃপন মানুষ, সে আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভরণ-পোষণ দেয় না,যদ্দরুন তার অজান্তে তার মাল থেকে আমি খরছ করে ফেলি, (এ বিষয়ে শরীয়তের দিকনির্দেশনা আমাদেরকে বলুন)রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেনঃ ন্যায়সঙ্গত ভাবে তোমার ও তোমার সন্তানদের যা প্রয়োজন তা (তার অজান্তে)নিয়ে নিতে পারো(এতে কোনো অসুবিধা হবে না)।" (সহীহ বুখারীঃ৫৩৬৪)আরও বর্ণিত আছে৫৭৮৬ নং হাদীসে। 

স্বামীর উপর স্ত্রী ও নাবালিগ সন্তানদের ভরণ-পোষণ ওয়াজিব,এই ওয়াজিব হক্ব আদায় না করা দরুণ রাসুলুল্লাহ সাঃ স্বামীর অজান্তে স্বামীর মাল থেকে স্ত্রীকে উসূলের অনুমতি দিয়েছেন। এ সম্পর্কে  বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1111

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নের বিবরণমতে যেহেতু স্বামী তার দায়িত্ব সঠিকভাবে আঞ্জাম দিচ্ছে না। তাছড়া যেহেতু ঘরের কাজকর্ম স্ত্রীর দাযিত্বের বাহিরের কাজ। তাই ঘরের কাজকর্ম ও শাশুড়ির খেদমত ইত্যাদির জন্য খাদিমা রাখতে স্বামীর পকেট থেকে স্বামীর অনুমতি ব্যতিত টাকা নেয়ার সুযোগ অবশ্যই থাকবে।  সুতরাং প্রশ্নের বিবরণমতে আপনি স্বামীর অগোচরে তার টাকা থেকে খাদিমাকে টাকা দিতে পারবেন।

(২)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/3778


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...