আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
43 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ওস্তাদ। আমার বাবা মায়ের বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩১ বছর। আমার বাবা প্রায় সময় আমার মাকে মারধর করে আঘাত করে বড় কোনো কারণ ছাড়াই। আমার বাবা আমার  মায়ের মৃত বাবা মাকে নিয়ে গালাগালি করে। বাবাকে আমি ভালো করে বুঝিয়ে বললে কিছু শোনে না, সে নিজে যায় বোঝে তাই করে। ভালো মন্দ কোন কথা শোনে না। আমি পরিবার থেকে একটু দূরে থাকি চাকরির কারণে। পরে শুনি যে প্রায় সময় আমার মাকে মেরেছে। আমার বাবা তার নিজের মান-সম্মানের তোয়াক্কা করে না।আশেপাশের যত লোকজন আছে সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে, মারামারি করে। আমার মাকে অনেকবার ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলেছে। এ সময় বাবাকে কল দিলে তিনি আমার ফোন রিসিভ করেন না এবং রিসিভ করলে আমার কথা না শুনে ফোন রেখে দেন।তাকে অনেকবার বুঝিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি। কিছুদিন আগে আমার মায়ের সব আত্মীয়স্বজনকে কল করে জানায় যে আমার মাকে রাখবে না। আমার মা শারীরিকভাবে অসুস্থ ,ঘরের সব কাজ করতে পারে না। চেষ্টা করে কিন্তু সবসময় শরীরে কুলিয়ে ওঠে না। এখন সে কেন করে না বা কেন করতে  পারে না এজন্যও তাকে মারে। সদ্য আমার বাবার দিকের এক আত্মীয় আমার বাবাকে আর মা কে ইফতারের দাওয়াত দেয়। আব্বু আগে আগেই সেখানে গিয়ে মা কে কল দিয়ে সেখানে যেতে বলেন। কিন্তু মায়ের শরীর খারাপ থাকায় এবং ঘরের কিছু জরুরি কাজ থাকায় তিনি দাওয়াতে যাওয়ার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন । বাবা সেখান থেকে এসে মাকে মারেন এবং যা তা কথা বলেন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এরপর আমি মার সাথে কথা বলার সময় তার কান্নার শব্দ পেলে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করি। পরে তিনি সব ঘটনা আমাকে খুলে বলেন। এরপর আমি বাবাকে কল দেই, কিন্তু তিনি আমার ফোন রিসিভ করেন না এবং এবং আমাকে কল দেওয়ার কারণে মাকে বলেন ঘর থেকে বের হয়ে যেতে।
মায়ের ও কিছু ছোট ভুল ত্রুটি আছে। বাবা যখন গালাগালি বা ঝগড়া করেন, তখন মা সব সময় চুপ থাকেন না। মায়ের বাবা মা, বোনদের নিয়ে কিছু বললে মা প্রতিউত্তর দেন। বাবার কিছু কথা বা কাজ ভুল হয়েছে জানালে বাবা তিনি ক্ষেপে যান। তাই আমি মাকে বাবার কোন ভুল ধরতেই নিষেধ করেছি। কিন্তু লাভ হচ্ছে না।এই ৩১ বছরে আমার বাবা আমার মা কে অনেক মেরেছে। এত সামান্য বিষয়েও মেরেছে যে সেগুলো বলার মতো না।

উস্তাদ, এখন ছেলে হিসেবে আমার কর্তব্য কি এবং আমার মায়ের কর্তব্য বা কি হতে পারে? আমি বাবা মা দুইজনকেই অনেক বুঝিয়েছি কিন্তু কাজ হয়নি। মা কে বলেছি কোন কথাই না বলতে। কিন্তু তাতেও কিছু হচ্ছে না।
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের হেদায়েত দান করুন এবং হেফাজত করুন আমীন।

1 Answer

0 votes
by (606,750 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .


সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

★স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ-
স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা।
স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি। 
প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার বাবা আপনার মায়ের উপর মারাত্মক অন্যায় করেছেন।
প্রতিনিয়ত জুলুম করেই চলেছেন।

মূলত মহান আল্লাহ তায়ালার সামনে জবাবদিহিতার ভয় না থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে।

তাই আপনার প্রতি পরামর্শ যে আপনি আপনার বাবাকে দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের সাথে যুক্ত করে দিতে পারেন। তাকে চিল্লায় পাঠাতে পারেন।

এটা কোনোভাবে সম্ভব না হলে পারিবারিকভাবে সমস্ত মুরব্বিদের মাধ্যমে বৈঠক করে আপনার বাবাকে ভালোভাবে বুঝাতে পারেন, ইনশাআল্লাহ এতে কাজ হবে।

(এক্ষেত্রে আপনার মা চাইলে আইনি সহায়তাও নিতে পারেন।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
reshown ago by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ উস্তাদ।
বাবার সাথে কথা বলেছি এ নিয়ে। তাকে বুঝিয়েছি। বলেছি ঝামেলা করলে দুই পরিবারের মুরব্বীদের ডাকবো। তিনি বলেন ডাকতে। 
তাবলীগ জামাতের বিষয়ে বলেছি চিল্লায় যেতে, তিনি যাবেন না। তিনি মনে করেন স্ত্রী সামান্য ভুল করলেও তাকে আঘাত করা বৈধ। কয়েকদিন আগের ঝামেলা নিয়ে আজকে আবার ঝামেলা করেছে।


তিনি তার নিজের কাজকেই সঠিক বলছেন।তিনি যে কাজই করেন সেটাই সঠিক, অন্য সবাই ভুল করে।
আমি ঝামেলা নিয়ে বুঝাতে যাবার কারণে এখন আমার সাথে ঠিক মত কথা বলেন না।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...