ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কিছু না করে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান।তার/তাদের হেদায়তের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করুন। এবং তার বিচার চেয়ে আল্লাহর কাছে আহাজারি করে কান্নাকাটি করুন। আল্লাহ অবশ্যই আপনার দুআকে কবুল করবেন।
জালিমের শাস্তি নিয়ে কিছু হাদীস লক্ষণীয়……...
রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা অত্যাচারীকে অবকাশ দিয়ে থাকেন। অবশেষে যখন তাকে পাকড়াও করেন, তখন আর তাকে ছাড়েন না। অতঃপর তিনি এ আয়াতটি পাঠ করেনÑ তোমার প্রভুর ধরা এরূপ যে, যখন তিনি অত্যাচারী জনপদকে পাকড়াও করেন তখন খুব মারাত্মক ও কঠোরভাবেই পাকড়াও করেন।’ (বুখারি : ৪৭৩২; মুসলিম : ৬৭৪৬)।
অত্যাচারীরা অন্যের পাপ বহন করবে : অত্যাচারী ও জালিমের পরিণতি হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। পরকালে জালিমকে মজলুমের পাপ বহন করতে হবে। আর জালিমের সৎ কাজের সওয়াব মজলুমকে দেওয়া হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা কি জানো দরিদ্র কে? সাহাবিগণ বললেন, আমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি তো দরিদ্র যার অর্থ-সম্পদ নেই। তখন রাসুল (সা.) বললেন, কেয়ামতের দিন আমার উম্মতের মধ্যে ওই ব্যক্তিই দরিদ্র হবে, যে দুনিয়া হতে নামাজ, রোজা ও জাকাত আদায় করে আসবে এবং সঙ্গে সঙ্গে ওইসব লোকও আসবে, সে কাউকে গালি দিয়েছে, কারও ওপর অপবাদ দিয়েছে, কারও সম্পদ গ্রাস করেছে, কাউকে হত্যা করেছে এবং কাউকে প্রহার করেছে। সুতরাং এ হকদারকে তার নেকি দেওয়া হবে। আবার ওই হকদারকে তার নেকি হতে প্রদান করা হবে। এভাবে হকদারের হক পরিশোধ করার আগে যদি তার নেকি শেষ হয়ে যায় তখন তাদের গুনাহসমূহ ওই ব্যক্তির ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (মুসলিম : ৬৭৪৪)। আরও বলেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন হকদারকে তার প্রাপ্য হক পরিশোধ করা হবে। এমনকি শিংবিশিষ্ট ছাগল হতে শিংবিহীন ছাগলের প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’ (মেশকাত : ৪৯০১)।
অত্যাচারে সাহায্য করা অত্যাচারের শামিল : সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা জুলুম, অন্যায় ও অত্যাচারের প্রতিরোধ করে। জুলমের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার থাকে। আবার এমন কিছু লোক আছে তারা জুলমকে রোধ করে না, বরং জুলমের পরিধি বৃদ্ধি করে দেয়। জালিম ও অত্যাচারীকে সহযোগিতা করে। এ প্রকারের লোক জালিমের অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো জালিমের শক্তি বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে তার সঙ্গে চলে; অথচ সে জানে যে ওই ব্যক্তি জালিম, তখন সে ইসলাম থেকে বের হয়ে গেল।’ (মেশকাত : ৪৯০৮)। আরও বলেন, ‘কেয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সেই বান্দাই মর্যাদায় নিকৃষ্ট সাব্যস্ত হবে, যে অন্যের পার্থিব কল্যাণে নিজের আখেরাত ধ্বংস করেছে। অর্থাৎ কোনো জালিমের কাজে সাহায্যে করেছে।’ (ইবনে মাজাহ : ৪১০১)
অত্যাচারের কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় : জালিম শুধু নিজের অভিশাপ টেনে আনে না, বরং তার অত্যাচারে দেশে দুর্ভিক্ষ ও অনাহারও বিরাজ করে। দেশে অশান্তি সৃষ্টি হয়। অন্যায়-অপরাধের ঘটনা বৃদ্ধি পাই। এমনকি পশু-পাখিরাও অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একদা তিনি জনৈক ব্যক্তিকে বলতে শোনেন, জালিম একমাত্র নিজেরই ক্ষতি করে থাকে। এ কথা শুনে হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর কসম! তুমি ঠিকই বলেছ। তবে
জালিমের অত্যাচারের অভিশাপে সারস পাখিও নিজের বাসায় কাতর অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।’ (মেশকাত : ৪৯০৯)