আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
51 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ আমি ভুল ক্রমে বুঝতে পারি নি যে আমার হায়েজ হয়েছে,,আমি হায়েজ অবস্থায় কয়েক পারা কুরআন তিলাওয়াত করি পরবর্তী তে আমি বুঝতে পারি যে আমি হায়েজ অবস্থায় তিলাওয়াত করেছি।।এখন আমার কি করনীয়?? পুনরায় কি সেই পারাগুলো আমার তিলাওয়াত করা জরুরি?? নাকি কবুল হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (70,170 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/83772/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যেঅপবিত্র বা হায়েয অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা যাবে না। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/793  

হায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত করা যাবে কি না?এ সম্পর্কে উলামাদের মধ্যে মতবেদ রয়েছে। জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম বলেনহায়েয অবস্থায় কুরআন তেলাওয়াত মহিলাদের জন্য হারামযতক্ষণ না তারা পবিত্র হবে।তবে দু'আ  যিকিরের নিয়তে কুরানের আয়াত পড়া যাবে।তেলাওয়াতের নিয়তে পড়া যাবে না।যেমন,বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।রাব্বানা আ'তিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ।এ জাতীয় কুরআনের আরো অন্যান্য আয়াত।

তারা দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেন,হায়েয অবস্থায় কুরআনকে স্পর্শ করা যাবে না।হায়েয অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত সম্পর্কে স্পষ্টকরে কিছু আসেনি।তবে হাদীসে স্পষ্টভাবে কুরআন তিলাওয়াত নিয়ে বর্ণিত হয়েছে,

(১) হায়েযা মহিলা জুনুবী মহিলার মতই।যেহেতু উভয়ই গোসলের মাধ্যমে পবিত্র হন।হযরত আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,

 عن علي بن أبي طالب رضي الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم  كان يعلمهم القرآن وكان لا يحجزه عن القرآن إلا الجنابة "

রাসূলুল্লাহ সাঃ লোকদিগকে কুরআন শিক্ষা দিতেন।জানাবত তথা সহবাস ও স্বপ্নদোষ পরবর্তী অপবিত্রতা ব্যতীত অন্যকোনো জিনিষ কুরআন শিক্ষা থেকে বাধা দিত না।(সুনানু আবি-দাউদ-১/২৮১,সুনানু তিরমিযি-১৪৬,সুনানু নাসাঈ-১/১৪৪,সুনানু ইবনি মা'জা-১/২০৭মসনদে আহমদ-১/৮৪,সহীহ ইবনে খুযাইমাহ-১/১০৪)

হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,

عن ابن عمر رضي الله عنهما أن النبي صلى الله عليه وسلم  قال : " لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئاً من القرآن

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,হায়েযা এবং জুনবী ব্যক্তি কুরআন থেকে কিছুই পড়তে পারবে না।(সুনানু তিরমিযি-১৩১) বিস্তারিত জানুন-৩৮৯

★★শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের হায়েজ অবস্থায় কুরআন শরিফ স্পর্শ করাতেলাওয়াত করা জায়েজ নেই।  হায়েজনেফাসগোসল ফরজ থাকা অবস্থায় কুরআনে কারীম পড়া হারাম।  তবে যিকির,দোয়া সম্বলিত আয়াত,দ্বীনি কিতাব সমুহ পড়তে কোনো সমস্যা নেই।   (কিতাবুন নাওয়াযেল ৩/১১০)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عن ابن عمر : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال لا تقرأ الحائض ولا الجنب شيئا من القرآن (سنن الترمذى، ابواب الطهارات، باب ما جاء في الجنب والحائض : أنهما لا يقرأن القرآن، رقم الحديث-131

অনুবাদ-হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-ঋতুবতী মহিলা এবং গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি কোরআন পড়বে না। (সুনানে তিরমিযীহাদীস নং-১৩১,সুনানে দারেমীহাদীস নং-৯৯১মুসনাদুর রাবীহাদীস নং-১১মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহাদীস নং-১০৯০মুসন্নাফে আব্দুর রাজ্জাকহাদীস নং-৩৮২৩)

হায়েয অবস্থায় অনেক আমল করা যায় যেমন,

১) যত খুশি যিকির করা যায়।

২) যত খুশি ইস্তেগফার করা যায়।

৩) জাহান্নামের ভয়াবহতা নিয়ে গভীর চিন্তা করা যায়। [কারণ হায়েজ অবস্থায় সময় বেশি পাওয়া যায়]

৪) জান্নাত নিয়ে গভীর চিন্তার সাগরে ডুবে থাকা যায়।

৫) অতিমাত্রায় দুরুদ পাঠ করা যায়।

৬) দোয়া কবুলের সময়গুলোতে বেশি বেশি দোয়া করা যায়।

৭) রাতের শেষাংশে অল্প সময়ের জন্য উঠে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা যায়।

৮) সবথেকে বড় কথাঅতিমাত্রায় দোয়াদুরুদ- যিকিরইস্তেগফার পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং নেকির পাল্লা ভারি করা যায় যা নাজাতের পথ।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই / বোন!

গোসল ফরজ হওয়া অবস্থায় বা হাযেজ অবস্থায় মুখস্থ করা সূরা গুলোকেও পড়া যাবে না। দেখে দেখেও পড়া যাবে না। তবে দু'আর অর্থ সম্ভলিত আয়াত যেগুলির শুরুতে  'রাব্বানারয়েছেসেই সব আয়াতগুলোকে দু'আর নিয়তে তিলাওয়াত করা যাবে। দেখে দেখেও পড়া যাবে। আবার মুখস্থ থেকেও তেলাওয়াত করা যাবে।

তবে এমতাবস্থায় ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড তথা পূর্ণ আয়াতকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে আপনি একটি একটি শব্দ উচ্চারণ করে তেলাওয়াত করতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা হবে না। সুরা বাকারার শেষ আয়াত,, সুরা কাফিরুনতিন কুলআয়াতুল কুরসী যেহেতু দু'আ হিসেবে পড়ার কথা হাদিসে এসেছেতাই এগুলো পড়া যাবে। অর্থাৎ যে সমস্ত আয়াতে দুআর অর্থ বিদ্যমান রয়েছেসেগুলো দুআর নিয়তে পড়া যাবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ভুলক্রমে হায়েয অবস্থায় তেলাওয়াতের কারণে গুনাহ হবে না। কারণ, আপনি পবিত্র মনে করেই তেলাওয়াত করেছেন। তবে আপনার জন্য সতর্কতা মূলক ভাবে উক্ত পারাটি পুনরায় পড়া নেওয়াই শ্রেয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...