আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in হজ ও উমরা (Hajj and Umrah) by (16 points)


আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ। 
আমি একজন প্রফেশনাল ফ্রীল্যান্সার এবং  IOM এর আলিম কোর্স এর ২৪১১ ব্যাচের একজন ছাত্র ।

আমি পৃথকভাবে উমরা ও হজ্ব করতে চাই, ইনশাআল্লাহ । এর জন্য টাকা জমানোর হালাল উপায় ও টাকার বর্তমান মূল্য ধরে রাখতে চাই। 
 আমার কাছে Payoneer USD থাকে।(আমি চাইলে আমার Payoneer একাউন্টে ডলার রেখে দিতে পারি বর্তমান টাকার মূল্য ধরে রাখার জন্য।  কিন্তু এটি অনলাইন ভিত্তিক ব্যাংক হওয়ার কারণে এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ)  Payoneer ডলার ব্যাংক এ ট্রানফার করে টাকা নেই। 
ইতিমধ্যে কিছুদিন আগে আমি ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টও করেছি। 


এখন আমি টাকার বর্তমান মূল্য ধরে রেখে টাকা জমানোর সেরা উপায় জানতে চাই:


১. ব্যাংকে মাসিক সঞ্চয় করা যাবে কি ?  
যেমন: বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকের Hajj Savings Scheme. তাদের এই পদ্ধতি ইসলামী শরীয়ত অনুসরণ করে ?নাকি শুধু নামেই ইসলাম ?

২. পশুপালন। 
যেমন : আমার মূলধন , অন্যের লালন-পালন /শ্রম, এবং পশুর খাবার যোগান ।  এই পদ্ধতি হালাল হতে হলে  ইসলাম এর কি কি শর্ত মানতে হবে। 

আমাদের দেশে/এলাকায় দেখি মালিক গরু কিনে দেয়।  এরপর অন্যজন পশুর খাবারের যোগানসহ লালন পালন করে। মালিক চাইলেই তা বিক্রি করা হয়। মূলধন বাদে লাভ ২ জনে  ভাগ করে নেয়। লাভ হলেও অনেক সময় পশু লালন-পালনকারীর লোকসান হতে পারে। যেমন: পশুর মূল্য ৫০ হাজার।  বছর শেষে বিক্রি হলো ৭০ হাজারে। তাহলে লাভ  হলো ২০ হাজার।  তাহলে প্রত্যেকে পাবে ১০ হাজার করে। কিন্তু দেখা গেলো পশু লালন-পালনকারীর শ্রম বাদেই ১১ হাজার টাকা পশু খাদ্য কিনতে হয়েছে। তাহলে পশু লালন-পালনকারীর ১ হাজার টাকা লোকসান, পক্ষান্তরে মালিকের ১০ হাজার টাকা লাভ। এক্ষেত্রে :

২.১: মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে পশু খাদ্যর মূল্য  কিভাবে সমন্বয় করতে হবে। 
আবার , শ্রমিকের  পশু খাদ্য কিনতে হয় নি। যেমন শ্রমিক তার নিজের ক্ষেতের ঘাস পশু কে খাওয়ালো।  সেক্ষেত্রে ?
২.২ শ্রমিক অন্যের ক্ষেতের ঘাস না বলে পশুকে খাওয়ালো। অনেক সময় ক্ষেতের মালিকের সম্মতি থাকে , আবার থাকে না ? এক্ষেত্রে এই হারামের দায়ভার কার ?

৩. টাকার বর্তমান মূল্য  ধরে রাখতে  টাকা দিয়ে ডলার/সৌদি রিয়াল/স্বর্ণ  কি কিনে রাখা কি উচিত হবে ? 
আপনার  কোনো পরামর্শ ? 

1 Answer

0 votes
by (598,170 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)

ইসলামী ব্যাংক গুলোতে একাউন্ট খোলাএবং মুনাফা গ্রহন বিষয়ে  উলামায়ে কেরামদের মাঝে ২ টি মত রয়েছে।

,

এক পক্ষ বলেন যে ইসলামী ব্যাংক গুলো তাদের কার্যক্রম নিয়ে যেসব দাবী করে থাকেন,তা যদি সঠিক হয়,তাহলে সেখানে একাউন্ট খোলা জায়েজ আছে,এবং মুনাফা গ্রহনও জায়েজ আছে।  

আরেক পক্ষ বলেন যেবাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখা ভাল। 


জানা মতে বাংলাদেশে কোন ব্যাংকই সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামীক রুলস মেনে ব্যাংকিং করছে না। তাই একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ব্যাংকে টাকা না রাখা ভাল। কিন্তু প্রয়োজন হওয়ার কারণে একাউন্ট খোলা জায়েজ। ডিপোজিট এ জাতীয় দীর্ঘমেয়াদী কোন একাউন্ট খোলা জায়েজ হবে না।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ব্যাংকে মাসিক হোক আর দীর্ঘমেয়াদী হোক,মোনোভাবেই সঞ্চয় করা যাবেনা।

(০২)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

রাসূল (সাঃ) বলেনঃ

أتقوا الظلم فإن الظلم ظلمات يوم القيامة
তোমরা জুলুম থেকে বিরত থাকো। কেননা কিয়ামতের দিন জুলুমের পরণিাম হবে খুবই অন্ধকার। (মুসলিম)

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★শরীয়তে ধোকামুলক কোনো চুক্তি বৈধ নয়। 

সহীহ পদ্ধিত হল, গরুর মালিক লালন-পালনকারীর সাথে নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চুক্তি করবে। সেক্ষেত্রে গরু থেকে প্রাপ্ত যাবতীয় আয় গরুর মালিক পাবে আর লালন-পালনকারী খাবারের খরচ ও নির্ধারিত পারিশ্রমিক পাবে। (আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৩৯৮; আলবাহরুর রায়েক ৮/৩৮)

কেউ গরু ছাগল বর্গা দিতে চাইলে তার জায়েয পদ্ধতি হল, প্রথমে গরু বা ছাগলের মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। যেমন একটি গরুর মূল্য চল্লিশ হাজার টাকা। অতপর অর্ধেক গরু অর্ধেক দামে তথা বিশ হাজার টাকায় বর্গা গ্রহণকারীর নিকট বিক্রি করবে এবং বাকি অর্ধেক মূল্য সে অপারগ হলে ক্ষমা করে দিবে অথবা পরবর্তীতে তার সুবিধা মত সময়ে পরিশোধ করার সুযোগ দিবে। এরপর বর্গা গ্রহণকারী গরু বা ছাগল লালন-পালন করতে থাকবে। লালন-পালন শেষে তারা উভয়ে গরু ছাগল, দুধ ও বিক্রি পরবর্তি লভ্যাংশতে অর্ধাঅর্ধি মালিক হবে। আর লালন-পালনের খরচ উভয়ে সমান ভাবে বহন করবে। আর এ পদ্ধতিই উত্তম।

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে গরু বর্গা দেয়া জায়েজ নয়।  

এক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত জায়েজ পদ্ধতি অবলম্বন করলে বৈধ হবে।

(০৩)
টাকার বর্তমান মূল্য  ধরে রাখতে টাকা দিয়ে ডলার/সৌদি রিয়াল/স্বর্ণ কিনে রাখা যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে আপনাকে অবশ্যই সেই টাকা/ডলার/সৌদি রিয়াল/স্বর্ণের যাকাত প্রতি বছর আদায় করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 250 views
0 votes
1 answer 113 views
...