আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (14 points)
edited by
সম্মানিত শায়খ,রিয়া হচ্ছে লোক দেখানো ইবাদত করা সেটা আমি জানি। কিন্তু গতকাল ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে জানতে পারলাম যে রিয়া হবে সে ভয়ে কোন আমল ত্যাগ করাটাও এক প্রকার রিয়া। শো অফফ এর ভয়ে/লোকে কী বলবে সেজন্য আমল পরিত্যাগ করাটাও নাকি এক প্রকার রিয়া। এটা একটু বুঝিয়ে বলেন। বহুত পেরেশানিতে আছি। এটা কীভাবে রিয়া হয়? আর এটা কি শুধু ফরজ আমলের ক্ষেত্রে নাকি সুন্নত, নফল আমলের ক্ষেত্রেও প্রোযোজ্য? ধরুন অামার পাশে কেউ অাছে তাই কুরঅান শুনতেছি না, একা হলে শুনব,বা পাশে কেউ অাছে তাই দান করতেছি না পরে করব এগুলা।
দ্বিতীয়   প্রশ্ন,,,, গত পরশুদিন আমার গার্লফ্রেন্ড আমাকে বলেছে তার সঙ্গে একটু স্টেশন যেতে ভোর বেলা ওর একটা পার্সেল আসবে, ভোর ৫ টার দিকে। ও একটা মেয়ে মানুষ এত ভোরো একা যেতে ভয় পাচ্ছে তাই বলেছে আমাকে, তখন ফজরের সময়ও হয়ে গেছিল তো আমি মসজিদে যাই ভেবেছিলাম নামাজ শেষ হয়ে গেলে যাব ওর সাথে,কিন্তু সুন্নাত পড়ার পর ওর কল আসে যে বাসওয়ালা আসছে এখনই যেতে বলছে, তাই আমি ওর সঙ্গে যাই সেজন্য আমার জামাআত মিস হয়ে যায়,পরে আমি নিজে নিজে সময় শেষ হওয়ার আগেই ফরজ নামাজ পড়ে নেই। এতে কি আমার বড় কোন গুনাহ হবে? শির্ক কুফরি কিছু হবে? আর প্রথম প্রশ্নটার উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন আল্লাহর ওয়াস্ত। এটা নিয়ে অনেক টেনশনে ভুগছি।প্লিজ। আসসালামুয়ালাইকুম।
by
ভাই তুমি জামাত মিস নিয়ে টেনশনে আছো?গার্লফ্রেন্ড এর সাথে রিলেশন যে হারাম এটা জানো না?

1 Answer

0 votes
by (72,690 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/69174/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

বিবাহ পূর্ব প্রেম পুরোপুরি নাজায়েজ।  

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

,

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে] {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

তওবার পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/5905/

গোনাহের শাস্তি ও তাওবা সম্পর্কে জানুন- https://www.ifatwa.info/906

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

,

১. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মেয়ের সাথে কথা-বার্তা, দেখা সাক্ষাত করা, মেসেজ করা, মেসেজের উত্তর ও আপনার জন্য হারাম ও কবিরা গোনাহ। ইসলাম এগুলোর অনুমতি দেওয় না। করলে গোনাহ হবে। তাই এগুলো পরিহার করা চায় এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা ও তাওবা করতে হবে।

প্রিয় ভাই! আল্লাহ তায়ালার জন্য জাহান্নামের ভয়ে  ঐ মেয়ের সাথে কথা-বার্তা, দেখা সাক্ষাত করা, মেসেজ করা, মেসেজের উত্তর দেওয়া সব কিছু বন্ধ করে দিবেন। কারণ,

,

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

إِنَّ الْمُجْرِمِينَ فِي عَذَابِ جَهَنَّمَ خَالِدُونَ. لَا يُفَتَّرُ عَنْهُمْ وَهُمْ فِيهِ مُبْلِسُونَ. وَمَا ظَلَمْنَاهُمْ وَلَـٰكِن كَانُوا هُمُ الظَّالِمِينَ. وَنَادَوْا يَا مَالِكُ لِيَقْضِ عَلَيْنَا رَبُّكَ ۖ قَالَ إِنَّكُم مَّاكِثُونَ

নিশ্চয় অপরাধীরা জাহান্নামের আযাবে চিরকাল থাকবে। তাদের থেকে আযাব লাঘব করা হবে না এবং তারা তাতেই থাকবে হতাশ হয়ে। আমি তাদের প্রতি জুলুম করিনি; কিন্তু তারাই ছিল জালেম। তারা ডেকে বলবে, হে মালেক, পালনকর্তা আমাদের কিসসাই শেষ করে দিন। সে বলবে, নিশ্চয় তোমরা চিরকাল থাকবে। সূরা যুখরুফ, আয়াত নং-৭৪-৭৭

,

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الْحَارِسِ بْنِ جَزْءٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ فِى النَّارِ حَيَّاتٍ كَاَمْثَالِ الْبُخْتِ تَلْسَعُ اِحْدَهُنَّ الْلَسْعَةَ فَيَجِدُ حمَوَتَهَا اَرْبَعِيْنَ خَرِيْفًا وَاِنَّ فِى النَّارِ عَقَارِبَ كَاَمْثَالِ الْبِغَالِ الْمُؤْكَفَةِ تَلْسَعُ اِحْدَهُنَّ الْلَسْعَةَ فَيَجِدُ حَمْوَتَهَا اَرْبَعِيْنَ خَرِيْفًا.

আব্দুল্লাহ ইবনে হারেস ইবনে জাযয়ে (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, জাহান্নামের মধ্যে ‘খোরাসানী’ উটের ন্যায় বিরাট বিরাট সাপ আছে। সে সাপ একবার দংশন করলে তার বিষ ও ব্যাথা চল্লিশ বছর পর্যন্ত থাকবে। আর জাহান্নামের মধ্যে এমন সব বিচ্ছু আছে যা পালান বাঁধা খচ্চরের মত। যা একবার দংশন করলে তার বিষ ব্যথার ক্রিয়া চল্লিশ বছর পর্যন্ত অনুভব করবে (আহমাদ, মিশকাত হা/৫৬৯১)

,

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ غِلْظَ جِلْدِ الْكَافِرِ اِثْنَانِ وَاَرْبَعُوْنَ ذِرَاعًا وَاِنَّ ضِرْسَهُ مِثْلُ اُحُدٍ وَاِنَّ مَجْلِسَهُ مِنْ جَهَنَّمَ مَا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِيْنَةِ.

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, জাহান্নামের মধ্যে কাফেরের গায়ের চামড়া হবে বিয়াল্লিশ হাত মোটা, দাঁত হবে ওহুদ পাহাড়ের সমান এবং জাহান্নামীদের বসার স্থান হবে মক্কা-মদীনার মধ্যবর্তী ব্যবধান পরিমাণ (তিরমিযী, মিশকাত হা/৫৬৭৫; হাদীছ ছহীহ; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৫৪৩১)

,

২. আপনার প্রধান কাজ তো হলো আল্লাহর কাছে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়ে তাওবা করা। আর যদি আপনি আসলেই আল্লাহর কাছে তাওবা করতে চান তাহলে প্রথমে এই পাপে পুনরায় পতিত হওয়ার সকল দরজা-জানালা বন্ধ করে দিন। এক কথায়, মেয়েটির সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ একেবারে বন্ধ করে দিন। যোগাযোগ বন্ধ করার কারণে মেয়েটি যদি মনোকষ্ট নেয় তাহলে আপনার কোনো গুনাহ তো হবেই না; বরং নিজে গুনাহ থেকে বাঁচার এবং মেয়েটিকে গুনাহ থেকে বাঁচানোর সাওয়াব পাবেন।

,

তার কথা মনে পড়ে, এমন কোনো কাজ, স্থান সবকিছু থেকেই দূরে থাকবেন। মনের কামনার বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রধান অস্ত্র হল ঈমান। ঈমান সুদৃঢ় রাখতে হবে। ধৈর্য ও মনের দৃঢ়-সংকল্পতা এবং সুপুরুষের মত মনের স্থিরতা। মনের খেয়াল-খুশীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দৃঢ়-সংকল্প হোন, যে আপনি ঐ শয়তানী কুমন্ত্রণায় সায় দেবেন না। অতএব ধৈর্যের সাথে শয়তানের বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন এবং তার অনিষ্ট থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...