আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
السلام عليكم و رحمة الله و بركاته

আমি জেনারেল লাইনে বলা যায় মোটামুটি (মন্দের ভালো) সহশিক্ষামুক্ত একট ভার্সিটিতে অনার্স ১ম সেমিস্টারে পড়ছি English language and literature সাবজেক্ট নিয়ে। আমার একদমই কোনো ইচ্ছা নাই জেনারেল লাইনে পড়ার কারণ আমার মনে হচ্ছে এইখানে অযথা টাইম নষ্ট ছাড়া আর কিছুই হাসিল হচ্ছে না আমার। আমার বাসা থেকে ভার্সিটি অনেক দুরে। আমি জার্নি করে পুরাই ক্লান্ত হয়ে যাই। আমি অনলাইনে ফরজে 'আইনের একট কাফেলাতে যুক্ত আছি, কিন্তু আমি কিছুই পড়তে পারছি না ঠিক মতো! বলতে গেলে এইকুল ও হচ৬না ঐকুলও হচ্ছে না। আমি চাচ্ছি বিয়ের পর ভার্সিটিতে পড়া ছেড়ে দিবো মা-বাবাকে না জানিয়ে। এটাতে কি আমার গুনাহ হবে? আমার মুলত ঘর থেকেই বের হতে ইচ্ছা করে না। নজরের হিফাযত করতে পারি না। আমার চাকরি করারও ইচ্ছা নাই। আমি কি করবো এমতাবস্থায়?

1 Answer

0 votes
by (67,530 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/1179/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মাশাআল্লাহ আপনার দ্বীনের প্রতি আগ্রহের কারনে। নিয়তের কারনে আপনি যে ভার্সিটিতে পড়ছেন পুরোটাই নেকির কারন হতে পারে। আপনি যদি এরকম নিয়ত করেন আমি যে, পড়াশোনা করছি এই পড়াশোনাকে দাওয়াতের কাজে লাগাবো। তবে ইনশাআল্লাহ অবশ্যই আপনার পুরো পড়াশোনাই নেকির কারন হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে ভার্সিটিতে দাওয়াতের কাজের  একটা বিশাল সুযোগ থাকে। যে স্টুন্টেগুলোর সাথে এখন সবসময় চলা ফেরা করছেন একদিন এমন হবে এদের সাথে আর দেখা নাও হতে পারে কিংবা এমন পজিশনে চলে গেলে তাকে রিচ করাই কঠিন হচ্চে। এরকম কিছু ফ্রেন্ডকে যদি দ্বীনের দিকে নিয়ে আসতে পারেন তবে এইটা হবে আপনার সারা জীবনের কামাই। ঐ ফ্রেন্ড যত আমল করবে সব আমলের একটা অংশ আপনার আমল নামায় আসতে থাকবে। তাই এখন সবচেয়ে প্রথম কাজ হলো আপনার বর্তমান পড়াশোনাকে গুরুত্ব দেওয়অ। এসব দুনিয়াবি পড়ালেখা করে কি হবেএটাও নেক সুরতে শয়তানের ধোকা।

দ্বিতীয়ত, আপনি দাওয়াতের মেহেনতের সাথে যুক্ত হতে পারেন। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাবলীগ জামাত থাকলে তাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন। যেটা দ্বারা আপনি দাওয়া শিখতে পারবেন।

তৃতীয়ত, আপনার পড়াশোনার পাশাপাশি  IOM অনলাইন মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারেন।  শুধু ইউটিউব আপনার জ্ঞানকে অগোছালো করে দিবে। কোন একটা মাদ্রাসার গোছালো শিক্ষা পদ্ধতি আপনার ইলমে কে গুছিয়ে নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ....

একজন সাধারন মুসলমানের জন্য জীবন চলার জন্য ততটুকু ইলমই ফরজ যা দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজন। যেমন: হালাল, হারাম, বিভিন্ন আহকামের বিষয়..ইত্যাদি..

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় গুলির বিধান বুঝার জন্য এ সংক্রান্ত শরীয়াহ এর মূলনীতিগুলো জেনে নেই,তাহলে এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝা যাবে। প্রথমে সহ শিক্ষা সংক্রান্তঃ  দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি। (বুখারী ৪৮০৮, মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১. শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২. চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না। মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না। সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। (ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...