ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির
রহীম
জবাব,
https://ifatwa.info/1179/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মাশাআল্লাহ আপনার দ্বীনের প্রতি আগ্রহের কারনে। নিয়তের কারনে আপনি যে ভার্সিটিতে
পড়ছেন পুরোটাই নেকির কারন হতে পারে। আপনি যদি এরকম নিয়ত করেন আমি যে,
পড়াশোনা করছি এই পড়াশোনাকে দাওয়াতের
কাজে লাগাবো। তবে ইনশাআল্লাহ অবশ্যই আপনার পুরো পড়াশোনাই নেকির কারন হয়ে যেতে পারে।
বিশেষ করে ভার্সিটিতে দাওয়াতের কাজের একটা
বিশাল সুযোগ থাকে। যে স্টুন্টেগুলোর সাথে এখন সবসময় চলা ফেরা করছেন একদিন এমন হবে এদের
সাথে আর দেখা নাও হতে পারে কিংবা এমন পজিশনে চলে গেলে তাকে রিচ করাই কঠিন হচ্চে। এরকম
কিছু ফ্রেন্ডকে যদি দ্বীনের দিকে নিয়ে আসতে পারেন তবে এইটা হবে আপনার সারা জীবনের কামাই।
ঐ ফ্রেন্ড যত আমল করবে সব আমলের একটা অংশ আপনার আমল নামায় আসতে থাকবে। তাই এখন সবচেয়ে
প্রথম কাজ হলো আপনার বর্তমান পড়াশোনাকে গুরুত্ব দেওয়অ। এসব দুনিয়াবি পড়ালেখা করে কি
হবে? এটাও নেক সুরতে শয়তানের ধোকা।
দ্বিতীয়ত,
আপনি দাওয়াতের মেহেনতের সাথে যুক্ত
হতে পারেন। যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাবলীগ জামাত থাকলে তাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন। যেটা
দ্বারা আপনি দাওয়া শিখতে পারবেন।
তৃতীয়ত,
আপনার পড়াশোনার পাশাপাশি IOM অনলাইন মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারেন। শুধু ইউটিউব আপনার জ্ঞানকে অগোছালো করে দিবে। কোন
একটা মাদ্রাসার গোছালো শিক্ষা পদ্ধতি আপনার ইলমে কে গুছিয়ে নিয়ে আসবে ইনশাআল্লাহ....
একজন সাধারন
মুসলমানের জন্য জীবন চলার জন্য ততটুকু ইলমই ফরজ যা দৈনন্দিন জীবনের জন্য প্রয়োজন। যেমন:
হালাল, হারাম, বিভিন্ন আহকামের বিষয়..ইত্যাদি..
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয় গুলির
বিধান বুঝার জন্য এ সংক্রান্ত শরীয়াহ এর মূলনীতিগুলো জেনে নেই,তাহলে এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝা যাবে। প্রথমে সহ শিক্ষা সংক্রান্তঃ দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা
ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে
এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
زُيِّنَ
لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء
মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে
নারী…। (সূরা আলি ইমরান
১৪)
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَا تَرَكْتُ
بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ
আমি আমার পরে মানুষের মাঝে
পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি। (বুখারী ৪৮০৮,
মুসলিম ২৭৪০)
ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে
এসেছে,
فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال
والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك
সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে
পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের
জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া। (ফাতাওয়া
লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)
★ একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয
আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات জরুরত
নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)
তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন
করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি
মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।
কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَاتَّقُوا
اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ
অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে
ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক
শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত
শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন কলেজ-ভার্সিটিতে
শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।
১. শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম
জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২. চোখকে সব সময় নিচু করে
রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার
দিকে তাকানো যাবে না। মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা
যাবেই না। সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। (ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)