ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির
রহীম
জবাব,
https://ifatwa.info/95704/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা
হয়েছে যে, হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا
وَهْبُ بْنُ بَقِيَّةَ، أَخْبَرَنَا خَالِدٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، - يَعْنِي
ابْنَ إِسْحَاقَ - عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا
قَالَتِ السُّنَّةُ عَلَى الْمُعْتَكِفِ أَنْ لاَ يَعُودَ مَرِيضًا وَلاَ يَشْهَدَ
جَنَازَةً وَلاَ يَمَسَّ امْرَأَةً وَلاَ يُبَاشِرَهَا وَلاَ يَخْرُجَ لِحَاجَةٍ
إِلاَّ لِمَا لاَ بُدَّ مِنْهُ وَلاَ اعْتِكَافَ إِلاَّ بِصَوْمٍ وَلاَ اعْتِكَافَ
إِلاَّ فِي مَسْجِدٍ جَامِعٍ
ওয়াহব ইবন বাকীয়্যা
......... আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ই‘তিকাফের জন্য সুন্নাত
এই যে, সে যেন কোন রোগীর পরিচর্যার জন্য গমন না করে, জানাযার নামাযে
শরীক না হয়, স্ত্রীকে স্পর্শ না করে এবং তার সাথে সহবাস না করে। আর সে যেন বিশেষ প্রয়োজন
ব্যতীত মসজিদ হতে বের না হয়। রোযা ব্যতীত ই‘তিকাফ
নেই এবং জামে মসজিদ ব্যতীত
ই‘তিকাফ শুদ্ধ নয়।
(আবু দাউদ ২৪৬৫)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
أَنَّ
عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا – زَوْجَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ – قَالَتْ: وَإِنْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ «لَيُدْخِلُ عَلَيَّ رَأْسَهُ وَهُوَ فِي المَسْجِدِ، فَأُرَجِّلُهُ،
وَكَانَ لاَ يَدْخُلُ البَيْتَ إِلَّا لِحَاجَةٍ إِذَا كَانَ مُعْتَكِفًا»
আম্মাজান আয়শা রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ মসজিদে থাকা অবস্থায় আমার দিকে মাথা বাড়িয়ে দিতেন
আর আমি তা আঁচড়িয়ে দিতাম এবং তিনি যখন ইতিকাফে থাকতেন, তখন [প্রাকৃতিক] প্রয়োজন ছাড়া ঘরে প্রবেশ করতেন না। {বুখারী, হাদীস নং-২০২৯, ১৯২৫, ১৯০২}
ইতেকাফরত অবস্থায় বান্দা
নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্যান্য সকল বিষয় থেকে আলাদা করে নেয়। ঐকান্তিকভাবে
মশগুল হয়ে পড়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের নিরন্তর সাধনায়। এতেকাফ ঈমান বৃদ্ধির একটি মূখ্য
সুযোগ। সকলের উচিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজের ঈমানী চেতনাকে প্রাণিত করে তোলা ও উন্নতর
পর্যায়ে পৌছেঁ দেয়ার চেষ্টা করা।
কুরআনুল কারিমে বিভিন্নভাবে
ইতেকাফ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,
আমি ইবরাহীম ও ইসমাইলকে
আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, এতেকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো। (বাকারাহ-125)
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, তোমরা মসজিদে এতেকাফ কালে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করো না।
(বাকারাহ-187)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামের অসংখ্য হাদীস এতেকাফ সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে, তার মধ্য হতে কিছু হাদীস নিচে উল্লেখ করা হল:
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম রমজানের শেষ দশ দিন এতেকাফ করতেন। (বুখারি-2025)
রসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজানের
শেষের দশকে এতেকাফ করেছেন, ইন্তেকাল পর্যন্ত। এরপর
তাঁর স্ত্রী গণ এতেকাফ করেছেন। (বুখারি-2026)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমজানে দশ দিন এতেকাফ করতেন, তবে যে বছর তিনি পরলোকগত হন,
সে বছর তিনি বিশ দিন এতেকাফে
কাটান। (তিরমিযী-808)
উত্তম হল নফল ইবাদত বেশী
বেশী করা। যেমন সলাত আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার,
তাসবীহ-তাহলীল তথা সুবহানাল্লাহ, আল-হামদুলিল্লাহ,
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার,
তাওবাহ-ইস্তেগফার, দু‘আ, দুরূদ ইত্যাদি ইবাদতে
সর্বাধিক সময় মশগুল থাকা। তাছাড়া শরীয়া বিষয়ক ইলম চর্চা করা। পার্থিব ব্যাপারে কথাবার্তা বলা, অনর্থক গল্পগুজব ও আলোচনা থেকে বিরত থাকা উচিত, তবে পারিবারিক কল্যাণর্থে বৈধ কোন বিষয়ে অল্পস্বল্প কথাবার্তা
বলার মধ্যে কোন দোষ নেই।
ইতিকাফ যে সকল কারণে ভঙ্গ
হয়ে যায় তা হলো :
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে
মাসজিদ থেকে বের হলে।
২. কোন শিরক বা কুফরী
কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে
গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস
শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে
কোন প্রকার যৌনসম্ভোগ করলে।
বিস্তারিত জানুনঃ- https://www.ifatwa.info/43382/
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে বিশেষ প্রয়োজনে
ব্যবসায়িক পণ্য মসজিদে উপস্থিত না করে শুধু ম্যাসেজের রিপ্লাই দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবসা
করা জায়েয আছে। তবে মনে রাখতে হবে যে, ইতেকাফের উদ্দেশ্য যেহেতু দুনিয়াবি কাজকর্ম থেকে
অবসর নিয়ে ইবাদতে আত্মনিয়োগ করা, তাই রমজানে বা রমজানের বাইরে যে কোনো সময় ইতেকাফে বসলে ইবাদতের
দিকেই মনোযোগী থাকা উচিত।
সাধারণত
যারা অনলাইন ব্যবসা করেন, তারা ইতেকাফে বসলে মসজিদে অবস্থান করেও এ সব ব্যবসার কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রথমত, মসজিদ ইবাদত-বন্দেগির জায়গা। দ্বিতীয়ত,
ইতিকাফ হল দুনিয়াবী ব্যস্ততা ত্যাগ
করে ইবাদতের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করা। সুতরাং পণ্য উপস্থিত না করলেও ব্যাপকভাবে
বেচা-বিক্রি ও কাস্টমারদের সাথে আলোচনায় লিপ্ত হওয়া ইতিকাফের উদ্দেশ্য পরিপন্থি ও মাকরুহ।
সুতরাং একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ইতিকাফ অবস্থায় এভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের চুক্তিতে লিপ্ত হওয়া
যাবে না। আর পণ্য কোনো অবস্থাতে হাজির করা যাবে না। কেননা মসজিদে পণ্য হাজির করা মাকরূহে
তাহরীমী তথা নাজায়েয। (ফাতাওয়া খানিয়া ১/২২২)