প্রিয় বোন,
আপনার প্রশ্নটি অনেক সুন্দর ও গঠনমূলক। আপনারা যে পরস্পরকে ভালোবাসেন এবং দ্বীনের পথে একে অপরকে সহায়তা করেন, এটি নিঃসন্দেহে একটি মহান সম্পর্ক। তবে, আপনার প্রশ্নের গভীরে যাওয়া জরুরি—আপনারা কি সত্যিই শুধু আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসছেন, নাকি এর মধ্যে নফসের কোনো অংশ আছে?
ভালোবাসা আল্লাহর জন্য হলে এর লক্ষণ কী?
১. দ্বীনি উন্নতির জন্য সম্পর্ক – যদি এই বন্ধুত্ব আপনাদের দ্বীনের পথে এগিয়ে নেয়, গুনাহ থেকে বাঁচায়, এবং পরস্পরকে জান্নাতের দিকে আহ্বান করে, তাহলে এটি ইনশাআল্লাহ আল্লাহর জন্য হবে।
2. আবেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে – ভালোবাসা আল্লাহর জন্য হলেও, যদি তা অতি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে (যেমন: সবসময় একে অপরকে নিয়ে ভাবা, অতিরিক্ত যোগাযোগ করা, আবেগঘন চিঠি লেখা ইত্যাদি), তাহলে তা ধীরে ধীরে নফসের দিকে ধাবিত হতে পারে।
3. স্বাধীনতা বজায় রাখা – যদি একজন ছাড়া অন্যজন নিজেকে অসম্পূর্ণ মনে করে বা দূরে থাকার চিন্তায় অস্থির হয়, তবে সম্পর্কের মধ্যে দুনিয়াবি সংযুক্তির ঝুঁকি রয়েছে।
4. আল্লাহর সন্তুষ্টি মুখ্য থাকে – যদি সম্পর্কটি আপনাদেরকে ইবাদাতে উদ্যমী করে, তাহলে এটি খাঁটি হতে পারে। তবে, যদি এটি দুনিয়াবি মানসিক প্রশান্তির একটি মাধ্যম হয়ে ওঠে, তাহলে তা নফসের তাবেদারিতে পরিণত হতে পারে।
আপনার করণীয় কী?
- নিজেদের পর্যালোচনা করুন – আপনারা কি একে অপরের জন্য জান্নাতের পথ সুগম করছেন, নাকি একে অপরের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছেন?
- সম্ভব হলে একটু দূরত্ব বজায় রাখুন – যদি মনে হয় যে সম্পর্কটি অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছে, তবে কিছুটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করুন।
- ইস্তেখারার ফলাফলের প্রতি আস্থা রাখুন – আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, যাতে তিনি আপনাদের সম্পর্ককে পবিত্র রাখেন এবং সঠিক পথ দেখান।
- আল্লাহর জন্য ভালোবাসার মানদণ্ড নির্ধারণ করুন – সম্পর্কের মূল লক্ষ্য হতে হবে দ্বীনের উন্নতি, একে অপরকে তাকওয়ায় সাহায্য করা, এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
যদি আপনাদের সম্পর্ক খাঁটি হয়, তাহলে এটি আল্লাহর জন্যই থাকবে, কিন্তু যদি নফস এতে প্রবেশ করে, তাহলে ধীরে ধীরে তা অনুভব করা যাবে। তাই সময়-সময় নিজের অন্তরকে যাচাই করুন এবং আল্লাহর কাছে হেদায়েত চান।
আল্লাহ আপনাদেরকে সত্যিকারের দ্বীনি সম্পর্ক বজায় রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।