আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আসসালামু আলাইকুম,ওয়া রহমাতুল্লহ,

১.আমি যে টেবিলে পড়ি তা অন্য একজনের এখন এতে পা দেওয়া এর উপর জিনিস পত্র রাখা কি জায়েয?কারণ এতে টেবিল দূর্বল হতে পারে (জিনিসপত্র বেশি ভারী না,ধরুন হাড়ি পাতিল, বই,খাতা ,ক্যালকুলেটর, জ্যামিতি বক্স ইত্যাদি যেগুলোতে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম।তবে কিছুটা ভারি হতে পারে যেমন হাতুড়ি তবে তাতেও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম)
আর আমি টেবিলে সম্ভবত উত্তেজিত বশত যৌনাঙ্গ (কাপড় সহ ও কাপড় ছাড়া) এতে লাগিয়েছি আবার অনেক সময় খাবার তেল ও লেগেছে।এখন আমার করণীয় কি?

২.মনে মনে কাউকে গালি দিলে তার হক কি নষ্ট হয়?

৩.প্রস্রাবের পর যৌনাঙ্গ ধৌত করার পর চেক করলে দেখি যৌনাঙ্গের ছিদ্রে নয় বরং ছিদ্র থেকে একটু কাছাকাছি পানির ছোটা দেখলাম। আমার প্রবল ধারণা এটা প্রস্রাব নয় বরং এটা  পানির ফোটা।এখন আমি তা ধৌত না করলে আমি কি নাপাক থাকব? এই অবস্থায় আমার নামাজ পড়তে  পারব?

৪.মোবাইলে যখন ক্লাস করি  তখন কেউ বিরক্ত হয় কি না তা আমি জানিনা।সাউন্ড কমিয়ে রাখার চেষ্টা করি। এখন কেউ যদি বিরক্ত হয় কিন্তু আমাকে অবহিত না করে তবে আমার কি গুনাহ হবে ও বান্দার হক নষ্ট হবে?(আমার ঘর থেকে অন্য ঘরে আওয়াজ শুনার সম্ভাবনা আছে )

৫.বাথরুমে কমোড এর পানির ছিটা প্যান্টে লেগেছে কিনা সন্দেহ হল। তবে আমার প্রবল ধারণা হলো লাগেনাই। আবার পায়খানা শেষে ধোয়ার সময় প্যান্টে পানির ছিটা লেগেছে কিনা সন্দেহ হলো তবে আমার প্রবল ধারণা হলো যে লাগেনাই ।এখন দুই অবস্থায় আমি কি পাক থাকব?

৬.নামাজে বৈঠকে ইচ্ছা করে বা ভুল করে যদি ডান পা আলাদাভাবে ডান দিকে একটু সাইড করলাম বা বাম দিকে সাইড করলাম আবার ইচ্ছা করে বা ভুল করে বাম পা একইভাবে বাম দিকে বা ডান দিকে সাইড করলাম এতে নামাজ কি ভেঙ্গে যাবে ? আর এতে কি গুনাহ হবে?

৭. আমার কিছু কাযা রোজা আছে ।আমি চাচ্ছি যে,শাবান এর ১৫ তারিখ থেকে কাযা রোজাগুলো আদায় করব।২০২২ সালে শাবান মাসে দুইটা রোজা রাখছিলাম এরমধ্যে একটা ভেঙ্গে ফেলেছিলাম। সম্ভবত আমি ১ম যে রোজা রেখেছি সেটা ভেঙ্গে ফেলেছিলাম।২০২৩ সালে আমি রোজাবস্থায় হস্তমৈথুন করে ফেলেছিলাম এরকমটা হয়েছে চারটি রোজা আরেকটিতে ভুল করে কুলি করার সময় পানি খেয়েছিলাম।তবে এখানে কোন কোন দিনের রোজা ভেঙ্গে গিয়েছিল তা মনে নেই তবে মনে আছে যে আমি ৩য় রোজাতে হস্তমৈথুন করে ফেলেছিলাম।২০২৪ সালে সম্ভবত ২৯ তম রোজায় হস্তমৈথুন করে ফেলেছিলাম (হস্তমৈথুন করেছি তা নিশ্চিত তবে কততম রোজায় করেছি তা নিশ্চিত না )।আর হ্যা ২০২৪ বা ২৩ সালের শাবান মাসে কোনো একটি কাযা রোজা সম্ভবত আদায় করেছিলাম। ঐ কাযা  রোজা আসলে আদায় করেছি কিনা তা সিউর না তবে প্রবল ধারণা যে তা আদায় করেছি।এখন আমি চাচ্ছি যে কাযা রোজা আদায় সম্ভবত করেছি তা সহ আমি আমার জীবনের সকল কাযা রোজা আদায় করতে চাই।আমি চাচ্ছি প্রথমে ২০২২ সালের শাবান মাসে যে নফল রোজা ভেঙ্গে ফেলেছিলাম তা ১৫ ই শাবানে রাখব। তবে আমি যে কাযা রোজা রাখব তা আমি কাউকে বলব না।আর পরবর্তীতে রমজান মাস শুরুর আগে যথাক্রমে সিরিয়ালভাবে ২০২৩ সালের কাযা রোজা গুলো এপর ২০২৪ সালে যে একটি রোজা ভেঙ্গে গিয়েছে তা আমি কাযা আদায় করব।
অর্থাৎ ১৫ ই শাবানে ২০২২ সালে ভেঙ্গে ফেলা নফল রোজাটি,এরপর ২০২৩ সালের ৫ টি কাযা রোজা, এরপর ২০২৪ সালের কাযা রোজা আদায় করব ।আমি এক্ষেত্রে নিয়ত করব (নফল ও ফরজ রোজা দুইটির ক্ষেত্রে) যে, "আমার জীবনের যতগুলো কাযা রোজা আছে তার মধ্যে ১ম টা আদায় করছি "।তা সাহরী খাওয়ার আগে মনে মনে বলব। শরীয়তমতে এভাবে আমি আমার কাযা রোজা আদায় করতে পারব ?আর ১৫ শাবান রোজা রাখলে কেউ যদি  মনে করে  যে নফল রোজা রেখেছি তবে কি আমার রোজা হবে? আর আমি যে কাযা রোজা রেখেছি তা না বলার কারণে কি আমার গুণাহ হবে? আর আমি ২০২৩ ও ২০২৪ সালের কাযা রোজাও না বলে রাখতে চাই এক্ষেত্রে কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কেন রোজা রাখছি তাহলে আমি বলব যে,"শাবান মাস তাই রোজা রাখছি"।কারণ আমি হস্তমৈথুনের কথা প্রকাশ করতে চাই না।কারণ গুণাহের কথা প্রকাশ করা জায়েয হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে । এখন এভাবে বলা কি জায়েয হবে?আর রোজাতে কোনো প্রভাব পড়বে?

৮.শবে বরাতের রাতে যদি কাযা নামাজ আদায় করি তবে কি শবে বরাত এর সওয়াব পাব?

৯.শবে বরাতে ইস্তেগফার যদি জিকিরের নিয়তে পড়ি তবে কি শবে বরাতের সওয়াব পাব?

১০. কাযা নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে কি ধারাবাহিকতা তথা ১ম কাযা নামাজ থেকে শেষ কাযা নামাজ আদায় বা শেষ কাযা নামাজ থেকে ১ম কাযা নামাজ আদায় এভাবেই পড়তে হয় নাকি মাঝখান দিয়ে অর্থ ১ম কাযা নামাজ ও শেষ কাযা নামাজের মঝে যেসব কাযা নামাজ আছে সেখান থেকে আদায় করা যায়?

১১.প্যান্টে নাপাক পানি যা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র  বিন্দুর মত যেমন:  ‌"." (এর কম-বেশি হতে পারে) এর মত কয়েকটি(১০-২০ টার মত তবে এদের একসাথে করলে পাচ টাকার কয়েনের সমপরিমাণ হয়না) ফোটা যদি লাগে তবে এই প্যান্ট পড়ে নামাজ আদায় হবে?

১২ কাপড় বা শরীরে নাপাকি লেগেছে কিনা সন্দেহ হলো কিন্তু আমার প্রবল ধারণা যে লাগেনাই এক্ষেত্রে আমি কি পাক থাকব?

1 Answer

0 votes
by (591,570 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যাতিত ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এক্ষেত্রে সেই টেবিলের মালিকের অনুমতি নিয়ে সেউ টেবিলে পা দেয়া এর উপর জিনিস পত্র রাখা জায়েজ হবে। অন্যথায় নয়।

হ্যাঁ যদি পূর্ব থেকেই টেবিলের মালিক অনুমতি দিয়ে থাকে, অথবা টেবিলের মালিকের মন ও সমর্থন পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে সে টেবিলের উপর পা দেওয়া যাবে, কোন কিছু রাখা যাবে।

★শেষোক্ত আপনি আর আর কোনোক্রমেই করবেননা।
এক্ষেত্রে যেহেতু টেবিল নাপাক হয়নি,তাই টেবিল পাক করার প্রয়োজন নেই।

(০২)
এতে তার হক নষ্ট হবেনা।

(০৩)
এটি বাহিরে বের হয়ে না আসলে সমস্যা নেই।
আপনি পাক থাকবেম,এ অবস্থায় নামাজ আদায় করতে পারবেন।

আর বাহিরর বের হলে সেক্ষেত্রে তাহা ধৌত না করলে আপনি নাপাক থাকবেন। পুনরায় অযু আবশ্যক হবে।

এই অবস্থায় তাহা এক দিরহাম থেকে কম হলে তাহা না ধুয়েও নামাজ পড়তে পারবেন।

এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হলে পাক না করে নামাজ আদায় জায়েজ হবেনা।

(০৪)
এতে কাহারো ঘুম বা ইবাদতে ব্যঘাত সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে আপনার গুনাহ হবে।
অন্যথায় সমস্যা নেই।

(০৫)
এমতাবস্থায় প্যান্টে নাপাকির গন্ধ বা চিহ্ন না পেলে প্যান্টকে পাক হিসেবেই ধরবেন।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরন মতে এতে আপনার নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।

(০৭)
শরীয়তমতে এভাবে আপনি আপনার কাযা রোজা আদায় করতে পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে যেহেতু একাধিক বছরের রোযার কাজা আদায় করতে হবে,তাই বছর নির্দিষ্ট করবেন।

১৫ শাবান রোজা রাখলে কেউ যদি  মনে করে  যে নফল রোজা রেখেছেন, অথচ আপনি কাজা রোযার নিয়ত করেছেন,সেক্ষেত্রে আপনার কাজা রোজা আদায় হবে।

আপনি যে কাযা রোজা রেখেছেন, তা না বলার কারণে আপনার গুণাহ হবেনা।

আপনি ২০২৩ ও ২০২৪ সালের কাযা রোজাও এভাবে না বলে রাখতে চাইলে কোনো সমস্যা নেই। এভাবে বলা জায়েয হবে।আর রোজাতে কোনো প্রভাব পড়বেনা।

(৮-৯
পাবেন,ইনশাআল্লাহ। 

(১০)
এভাবেও আদায় করা যাবে।
তবে ফুকাহায়ে কেরামগন যেভাবে নিয়ত করার কথা শিখিয়েছেন,সেভাবে আদায় করবেন
অর্থাৎ যত নামায কাযা আছে তার সর্বশেষ বা সর্বপ্রথম অনাদায়কৃত কাযা নামাজের নিয়ত করছি। 

বিস্তারিত জানুনঃ- 

(১১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এই প্যান্ট পড়ে নামাজ আদায় হবে।

(১২)
এক্ষেত্রে শরীরে/কাপড়ে নাপাকির গন্ধ বা চিহ্ন না পেলে শরীরে/কাপড়কে পাক হিসেবেই ধরবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...