আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
45 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম,
১। সন্তানের বিরুদ্ধে পিতার বদদু'আ কবুল হয় জানি। কিন্তু পিতার স্বভাব যদি থাকে যেকোনো বিষয়ই উনার মনমতো না হলে বদদু'আ করার, তবেও কি তার বদদু'আ কবুল হয়?
২। অনেক সময় মায়েরা সন্তানের উপর রেগে গিয়ে বলে ফেলেন "তোমার কখনো ভালো হবে না" এই ধরণের বদদু'আ কি কবুল হয়? আমি একটা বইয়ে পড়েছি, মা  বদদু'আ করলে এরপর মাকে সন্তুষ্ট করলেও নাকি মায়ের করা পূর্বের বদদু'আ রহিত হয় না। এটা কি সত্য?
৩। ২ ভাইবোনের মধ্যেও সাধারণ বিষয়ে মাঝেমধ্যে ঝগড়া হয়, যেটা অমূলক। যেমন মজা করেই বড় ভাইবোন দুষ্টুমি করে রাগিয়ে দেয়, আবার সব পরে ঠিক হয়ে যায়। একবার ছোট ভাই  বদদু'আ করে বলেছিলো "তোর কোনোদিন বিয়ে হবেনা" এ ধরণের বদদু'আ কি কবুল হয়?
৪।  আমার এক পরিচিত ব্যক্তির  একবার তার মায়ের সাথে অনেক বড় রকমের ঝগড়া লেগেছিলো, যেখানে ওই ব্যক্তির মা তাকে সবার সামনে বদদু'আ করে বলেছিলো "তোর সামনে কোনোদিন উন্নতি হবে না" এরপর থেকে আর ওই ব্যক্তির আয় রোজকারে বরকত আসেনি। আর কোনোদিন তার সম্পদ বাড়েনি এখনো পর্যন্ত। কোনো মাসে রোজগার হয় কোনো মাসে হয় না। তবুও আল্লাহ একভাবে চালিয়ে নিচ্ছেন আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু এটা কি মায়ের বদদু'আর ফল? আল্লাহ কি কোনোভাবে নারাজ? তাহলে এখন কি করণীয়?

1 Answer

0 votes
by (592,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

পিতামাতার জন্য রাগের অবস্থায় সন্তানদের বদ দুয়া,অভিশাপ দেওয়া উচিত নয়। 
কারন কোন সময় যে আল্লাহ তায়ালা সেসব বদ দুয়া কবুল করে নিবেন,তাহা কেহই বলতে পারেনা।
এমনও হতে পারে যে পিতা মাতা বুঝে না বুঝে অযথাই সন্তানের জন্য বদ দুয়া করলো, আল্লাহ তায়ালা তা পুরোপুরি ভাবে কবুল করে নিলো,তখন এটা সন্তানের জন্য শাস্তির কারন হয়ে দাড়াবে।
বিষয়টি পিতামাতাকে বুঝানো দরকার।

উভয় পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা দরকার,যে এই অবস্থায় যেনো পৌছাতে না হয়।

পিতা মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এহেন কথা না বলার,আর সন্তান চেষ্টা করবে,এমন কোনো কাজ না করার,যাতে পিতা মাতা কষ্ট পায়।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৪)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " نَادَتِ امْرَأَةٌ ابْنَهَا، وَهْوَ فِي صَوْمَعَةٍ قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتْ يَا جُرَيْجُ. قَالَ اللَّهُمَّ أُمِّي وَصَلاَتِي. قَالَتِ اللَّهُمَّ لاَ يَمُوتُ جُرَيْجٌ حَتَّى يَنْظُرَ فِي وَجْهِ الْمَيَامِيسِ. وَكَانَتْ تَأْوِي إِلَى صَوْمَعَتِهِ رَاعِيَةٌ تَرْعَى الْغَنَمَ فَوَلَدَتْ فَقِيلَ لَهَا مِمَّنْ هَذَا الْوَلَدُ قَالَتْ مِنْ جُرَيْجٍ نَزَلَ مِنْ صَوْمَعَتِهِ. قَالَ جُرَيْجٌ أَيْنَ هَذِهِ الَّتِي تَزْعُمُ أَنَّ وَلَدَهَا لِي قَالَ يَا بَابُوسُ مَنْ أَبُوكَ قَالَ رَاعِي الْغَنَمِ ".

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মহিলা তার ছেলেকে ডাকল। তখন তার ছেলে গীর্জায় ছিল। বলল, হে জুরায়জ! ছেলে মনে মনে বলল, হে আল্লাহ্! (এক দিকে) আমার মা (এর ডাক) আর (অন্য দিকে) আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরাইজ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা আর আমার সালাত! মা আবার ডাকলেন, হে জুরায়জ! ছেলে বলল, হে আল্লাহ্! আমার মা ও আমার সালাত। মা বললেন, হে আল্লাহ্! পতিতাদের সামনে দেখা না যাওয়া পর্যন্ত যেন জুরায়জের মৃত্যু না হয়। এক রাখালিনী যে বকরী চরাতো, সে জুরায়জের গীর্জায় আসা যাওয়া করত। সে একটি সন্তান প্রসব করল। তাকে জিজ্ঞেস করা হল- এ সন্তান কার ঔরসজাত? সে জবাব দিল, জুরায়জের ঔরসের। জুরায়জ তাঁর গীর্জা হতে নেমে এসে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় সে মেয়েটি, যে বলে যে, তার সন্তানটি আমার? (সন্তানসহ মেয়েটিকে উপস্থিত করা হলে) জুরায়জ বলেন, হে বাবূস! তোমার পিতা কে? সে বলল, বকরীর অমুক রাখাল। (বুখারী ১২০৬.২৪৮২, ৩৪৩৬, ৩৪৬৬; মুসলিম ৪৫/২, হাঃ ২৫৫০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১১৩৩)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বাবা যদি বদ দু'আ দেয় অনেকাংশেই সে অভিশাপ সন্তানের গায়ে লেগে যায়।

তাই সর্বোচ্চ সতর্কতা কাম্য

এক্ষেত্রে বাবা এমনিতেই বদদু'আ দিলে বা সন্তান এক্ষেত্রে হকের পথে থাকলে আশা করি বদ দু'আ সন্তানের গায়ে লাগবেনা,তারপরে কোনো বেয়াদবি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে, এক্ষেত্রে বাবার কাছে মাফ চেয়ে নেয়ার। 

বেয়াদবির কারনে তিনি যেনো সন্তানকে ক্ষমা করে দেন,এবং উল্লেখিত অভিশাপ/বদ দুয়া যেনো কবুল না হয়,সে জন্য যেনো তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করে।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
এই ধরণের বদদু'আ কবুল হয়।

কাহারো মা এই ধরণের বদদু'আ করে ফেললে সেক্ষেত্রে সন্তানের জন্য উচিত,মায়ের কাছে মাফ চেয়ে নেয়ার। তিনি যেনো সন্তানকে ক্ষমা করে দেন,এবং উল্লেখিত অভিশাপ/বদ দুয়া যেনো কবুল না হয়,সে জন্য যেনো তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করে।

(০৩)
আশা করি এ ধরণের বদদু'আ কবুল হবেনা।

(০৪)
এটা তার মায়ের বদদু'আর ফল হতে পারে। আল্লাহ কোনোভাবে তার উপর নারাজ। 

এখন করণীয় হলো মায়ের কাছে মাফ চেয়ে নেয়ার। তিনি যেনো সন্তানকে ক্ষমা করে দেন,এবং উল্লেখিত অভিশাপ/বদ দুয়া যেনো কবুল না হয়,সে জন্য যেনো তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

...