আসসালামু আলাইকুম
বিয়ের পর থেকেই অশান্তি শ্বশুরবাড়ির লোক ভালো না।  অল টাইম বউয়ের পিছনে পরে থাকে।  প্রতি কাজে খুঁত ধরা, আকার ইঙ্গিতে বাপের বাড়ি থেকে জিনিস পত্র আনার কথা বুঝানো  ইত্যাদি। স্বামীর আগের স্ত্রী ছিলো চলে গেছিলো পরে স্ত্রীর পরিবার চাপ সৃষ্টি করে তালাক নিয়ে নেই।   স্বামী বউকে বলে আমার বাবা মার কারণে বউ চলে গেছে।  কিন্তু দ্বিতীয় বউ তার সংসারে যেয়ে দেখে তারও অনেক দোষ।  সে স্ত্রীর ভরণপোষণে উদাসীন।  স্ত্রীকে ইঙ্গিতে বলে যে বাপের বাড়ি থেকে জিনিস আনো। এছাড়া ও কিছু খারাপ আচারণ রয়েছে । মানুষের সাথে ব্যবহার আচরণ খারাপ।  শ্বশুরবাড়ির লোকে সাথে আচারণ খারাপ ইত্যাদি কারণে  স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোক ক্ষ্যাপা।  আর স্ত্রীর মনে ভয় জাগতে থাকে যে আগের স্ত্রী থাকতে পারেনি আমি পারবো তো?
গত রমজান মাসে স্বামী স্ত্রীকে বলেছে যে তুমি বাপের বাড়ি রোজার মাস থাকো তাহলে আমার একটু খরচ বাঁচলো দেনা আছি  চাপ কমলো। বিদ্রুপ স্ত্রীর পরিবার ও ঋণগ্রস্ত আছে এটা জানা সত্ত্বেও যখন স্বামীর দায়িত্ব স্ত্রীর ভাইয়ের উপর দিচ্ছে স্ত্রীর রাগ হয়ে গেছে।
বাপের বাড়িতে স্ত্রী এসে স্বামীকে ফোন দিয়ে বলছে স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব কার?  ইত্যাদি নিয়ে কথা উঠাইলে স্বামী স্ত্রীকে বলছে আমি তোমাকে নিতে আসছি বাড়ি চলো।  স্ত্রী বলছে আমি যাবো না।  যেদিন স্ত্রীর ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে পারবেন সেদিন যাবো এর আগে নয়। এসব বলার পর স্বামী স্ত্রীকে নিতে চলে আসছে।
স্ত্রী রাগে বলে দিয়েছে আমি যাবো না।  স্বামী বলছে কবে যাবা?  স্ত্রী বলছে যে দিন স্ত্রীর ভরণপোষণের সক্ষম হবেন।  এসব বলার পর স্ত্রী গেলো না। স্বামী বলছে তুমি এখন না গেলে আমি এখন মাদ্রাসায়  যেয়ে বরখাস্ত দিয়ে বের হবো।  তারপর কাল তোমাকে তালাক দিবো।  এই কথা বলে চলে যায়।
পরে রাতে স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে বলছে তোমার সাথে সংসার করার ইচ্ছে মরে গেছে, নিয়ত নাই। মন থেকে পুরাপুরি উঠে গেছো তোমার সাথে সংসার করবো না এই কথা তিন বার।  আজ ও করবো না কাল ও করবো না। এই কথা বলে কেটে দেয়।  স্ত্রীর পরিবারের এক প্রতিবেশীর আত্মীয় মুফতি আছেন উনার কাছে মাসাআলা শুনতে ফোন দিয়েছে  তো উনি বলেছে যে এমন কথায় ও তালাক হয়ে যায়।  তবুও আমি ছোট ফতোয়া দিতে পারবো না।  আলোচনা করে নেয়। এই বলে ঐ হুজুর স্বামীর মাদ্রাসায় বড় হুজুরের কাছে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানায়।,,,জানানোর পর হুজুর স্বামীর কাছে শোনে যে আপনার স্ত্রীকে এই কথা গুলো বলেছেন? স্বামী পরে স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে শোনে আমি তোমাকে রাগের মাথায় কী কী বলছি বলো বললাম এইগুলো বলেছেন।
বলার পর আর কোনো কথা বার্তা নেই।  স্বামী বলে যে তালাক হয়নি আমি তোমাকে নিতে আসছি। তালাক সম্পর্কে দ্বিধা দ্বন্দ্ব আছে। তাছাড়াও মেয়ের পরিবার উনার কাছে দিয়ে রাজি নয় তালাক হোক বা না হোক। ছাড়িয়ে নিবে। স্ত্রী ও আঘাত পেয়ে প্রথম  স্ত্রী থাকতে পারলো না এই ভয়ে সংসার ছাড়ার নিয়ত।
কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর স্ত্রীর পরিবার স্ত্রীকে জানায় উনার বিস্তারিত সব ঘটনা লিখে মাদ্রাসায় জমা দিতে।  তালাক না হলেও হুজুরদের বলে তালাক নিতে।  সেই কথা মতো মাদ্রাসায় সবকিছু জানানো হয়। মেয়ের পরিবার যেয়ে হুজুরদের বলে হুজুররা মেয়ের অভিভাবকদের বলে আপনাদের উচিত ছিল কাছে মাদ্রাসায় আগে আমাদের জানানো।  উনার আচারণ খারাপ আছে।  তা বাদে আমরা ও অনুমতি দিতে চাইছিলাম না। না জানি কোন মেয়ে কপাল পোড়ে। আচ্ছা যান বিষয় গুলো দেখছি।,,,
এমন দুই মাস কেটে যায় মাদ্রাসা থেকে কোনো কথা নেই। স্বামী বলে তালাক হয়নি। তালাক হয়ে গেলে আমি কথা বলতাম না।,,একদিন দেখা করো সামনাসামনি কথা বলি সেই কারণে স্ত্রী স্বামীর সাথে দেখা করেছে। মাদ্রাসায় অভিযোগ গেছে স্বামী তাই বলছে যে অভিযোগ তুলে নাও সংসার করবা বলো। সেই কথা অনুযায়ী স্ত্রী মাদ্রাসায় হুজুরের কাছে ফোন দেয়।
দিয়ে বলে সংসার ঠিকানোর মিমাংসা করতে। হুজুর স্ত্রীকে বললো দেখুন আপনার অভিযোগের সাথে আগের স্ত্রীর অভিযোগের মিল আছে।  ভেবে দেখুন আমাদের জানান। কি করবেন তা বাদে তালাকের মাসাআলা দেখা হয়নি।  বড় হুজুর দেখবে।  এই কথা শুনে স্ত্রীর রাগ হয়ে গেছে মাসাআলার আগে দেখা করছি।
তো পরে স্ত্রী হুজুর কে ফোনে বলে দেয় সংসার করবো না।  এই কথা বলার পর হুজুর স্বামীকে বলে যে আপনার স্ত্রী সংসার করবে না বলেছে। স্বামী ছাড়বে না বলে বলেছে আমার স্ত্রী বলতে পারে না বলেনি।
পরে হুজুর ফোন দিয়ে স্ত্রীকে জানায় আপনার স্বামী বিশ্বাস করছে না যে আপনি কথা গুলো বলেছেন। এক কাজ করেন আপনার অভিভাবকদের মাদ্রাসায় আসতে বলেন আর উনার ফ্যামেলি ডাকি।  তারপর স্বামী কিছু উল্টো পাল্টা করেছে যার প্রেক্ষিতে  হুজুর স্ত্রীকে বলে মাদ্রাসা থেকে সমস্যা সমাধান হবে না।  আপনারা পারিবারিক ভাবে মীমাংসা করে নেন।,,,,,এই ক্ষেত্রে তালাকের মাসাআলা স্পষ্ট পাইনি।
তারপর ১ মাস চুপ যোগাযোগ নেই কোনো। স্ত্রীর ভাই স্বামীর কাছে তালাক চাইতে ফোন দিতে বলে।  স্ত্রী স্বামীর কাছে ফোন দিয়ে বলে সহজে দিবেন?  নাকি কেস করতে হবে।  এসব কথা হওয়ার পর স্বামী একটা বার সুযোগ চাই বিভিন্ন কথা বলে।  দেখা করো এখনো তো স্বামী। তো স্ত্রী দেখা করলে বলে একটা সুযোগ দেও তোমার মন মতো হতে পারি কিনা।  এসব বলার পর স্ত্রী স্বামীকে সুযোগ দিতে চাই।
কিন্তু মেয়ের পরিবার রাজি নয়। মেয়ের পরিবার বলছে যে ঐ কথায় তালাক হয়ে গেছে।  প্রতিবেশীর আত্মীয় যিনি মুফতি উনি বলছেন।  যে মাদ্রাসায় উনি অস্বীকার করছে যে বলে নাই।  এই ক্ষেত্রে  উনার কোনো ফতোয়া দেয়নি। বলেছে উনি যদি মিথ্যা বলে হিসাব দেওয়া লাগবে।
এখন স্ত্রী বিপাকে স্বামী বলছে অন্য মাদ্রাসা থেকে ফতোয়া নিয়েছি তালাক হয়নি। আবার মেয়ের পরিবার বলছে হয়ে গেছে।
কোনো কথায় বিশ্বাস করতে পারছে না।
মেয়ের পরিবার বলছে তালাক হয়ে গেছে কিছুর প্রয়োজন নেই বিয়ে দেওয়া যাবে। কিন্তু কথা যদি তালাক না হয় তাহলে যিনা। আবার যদি স্ত্রী স্বামীর কাছে ফিরে যায় তালাক হয়ে গেলে যিনা।
স্ত্রী বর্তমান একটা কওমি মহিলা মাদ্রাসার মুয়াল্লিমা। স্ত্রীর মাদ্রাসার বড় আলেমা আপা বলছে তালাকের ফতোয়া তো ঐ ভাবে দেয় না। উনি যা বলেছে আমার মতে হয়ে গেছে এক তালাক।  কিন্তু ইদ্দতের আগে দেখা করেছো বলে হয়নি।
আর এক মাদ্রাসায় এই সমস্যার ফতোয়া চাওয়া হইলে বলে স্বামী স্ত্রীর উপায়ের কথা না শুনে দিতে পারবো না।
কিন্তু সমস্যা স্বামীর দাবি তালাক হয়নি এ বিষয়ে কোনো কথা বলবে না।  অন্যদিকে স্ত্রীর পরিবার বলে স্বামী মাদ্রাসায় অস্বীকার করেছে বলে ফতোয়া দেয়নি।