আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম
১. অবিবাহিতা মেয়ের ভরনপোষণের দায়িত্ব তার বাবার। মেয়েটি মাশাআল্লাহ কিছু টাকা আয় করে। যদি তার বাবার টাকায় হালাল-হারামের মিশ্রণ ঘটে, যদিও তা কারো হক্ব নষ্ট করা হারাম টাকা নয়, ব্যাংকের সুদ ঘটিত হারাম টাকা। তাহলে তার বাবার টাকায় খাওয়া-পরা কি তার জন্য হালাল হবে? তার বাবার টাকায় জীবনযাপনের কারণে কি তার দুআ কবুলের শর্ত পূরণ হবে না? এখানে উল্লেখযোগ্য যে তার ফ্যামিলি প্র‍্যাক্টিসিং না, আর তার আয়ও আহামরি কিছু না যে আলাদা রান্নাঘর দিয়ে তাতে রান্না করবে। এখন প্রশ্ন হলো, যেহেতু দুআ কবুলের শর্ত হালাল খাবার খাওয়া। মেয়েটির উপর কি নিজের টাকায় খাবার খরচ চালানো ওয়াজিব হয়ে গেছে কিনা?


২. একইভাবে সহশিক্ষা তো এমনিই হারাম। সহশিক্ষা যেহেতু কোনো সওয়াবের কাজ না তাই সহশিক্ষার খরচ চালানোর দায়িত্বও কি মেয়ের?

1 Answer

0 votes
by (592,170 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/33630/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে,
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

★★প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী বোন!
শরীয়ত উপার্জন সক্ষম বালেগ পুরুষ এর উপর আরো অনেকের লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছে।যেমন, উপার্জন অক্ষম মাতা-পিতা, নাবালিগ ছেলে,মেয়ে,স্ত্রী সহ অনেকের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে একজন পুরুষের উপর।
এখন অভিবাবকের সম্পদ হারাম হলে, সেই সম্পদ থেকে খরছ না করে নিজ মাল থেকে খরছ করাই উচিৎ,যদি নিজের সম্পদ থাকে।তবে বালেগ ছেলের উপর ওয়াজিব যে,তার সম্পদ না থাকলেও সে হালাল তরিক্বায় তার জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করবে।হ্যা উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে।কেননা এই উপার্জন অক্ষম ব্যক্তিগণকে ভরণপোষণ করা তার একান্ত দায়িত্ব ছিলো।সুতরাং গোনাহ ঐ অভিবাবকের ই হবে।(বিস্তারিত জানতে দেখুন-ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/১২৭)

উল্লেখিত মেয়ে তার বাবার ইনকাম গ্রহন করে চলতে পারবে,তবে যতটুকু প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই নিবে,বেশি নিবেনা।
তার দোয়া ইবাদত কবুল হবে,ইনশাআল্লাহ।    

তিনি চাইলে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে নিজে উপার্জন করতে পারেন।
তবে শরীয়তের সমস্ত শর্ত মেনে উপার্জন করতে না পারলে সেটির অনুমতি নেই।
,
★সর্বপরি মেয়ে হয়ে  ইনকাম করে বাবা কে হালাল ইনকাম খাওয়ানো আবশ্যকীয় নয়। 
মেয়ে  যথেষ্ট শিক্ষিত হয়েও যদি ইনকাম করতে না চায় পর্দায় থাকতে চায় সেক্ষেত্রে জায়েজ হবে।
এতে কোনো সমস্যা নেই।  

আরো জানুনঃ

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত বোন তার প্রয়োজনীয় খরচ,খাবার তার বাবার টাকা হতে নিতে পারবে। এক্ষেত্রেও তার দুয়া ইবাদত কবুল হবে।

তবে তার বাবার অধিকাংশ ইনকাম হারাম হলে সেক্ষেত্রে মেয়েটি কোনোভাবেই তার বাবার টাকা হতে প্রয়োজন অতিরিক্ত খরচ নিতে পারবেনা,প্রয়োজন অতিরিক্ত খাবার খেতে পারবেনা,প্রয়োজন অতিরিক্ত পোশাক নিতে পারবেনা।

এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হবে একটি পদ্ধতি রয়েছে, সেটি হল মেয়েটি যেহেতু নিজে হালাল ভানে ইনকাম করছে, সুতরাং তার খাবার বাবদ যে টাকা ব্যয় হবে সম্পূর্ণ টাকা (যতটুকু তার সাধ্যে কুলায়) সে তার বাবাকে দিবে। কোনো না কোনো নাম দিয়ে দিবে,বলবে যে আপনি এই টাকা হতে আমার বাজার করবেন, কোন কাপড়ের প্রয়োজন হলে সে কাপড়ের টাকা তিনি তার বাবাকে দিয়ে বলবেন যে আমার টাকা হতে তিনি যেন কাপড় ক্রয় করেন।

এটা সবচেয়ে উত্তম পদ্ধতি হবে।

তবে এতে ঝামেলা সৃষ্টি হওয়ার শংকা থাকলে এমনটি না করার পরামর্শ থাকবে। 

(০২)
না,এ খরচ চালানোর দায়িত্বও কোনোভাবেই মেয়ের নয়।

কোনোপ্রকারের খরচ চালানোর দায়িত্বই মেয়ের নয়। বিবাহের আগ পর্যন্ত সবই তার বাবার দায়িত্ব। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...