আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
328 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
আসসালামুআলাইকুম।

আমরা একটা দোকান ভাড়া দিছি হিন্দুর কাছে । ভাড়া দেওয়ার সময় জানতাম না বা মাথায় ছিল না যে দাড়ি কাটলে ভাড়া দেওয়া।উচিত হবে না।কিন্তু দিয়ে ফেলছি আর ৩ বছরের চুক্তি করছি।

এখন দোকান ভাড়া বাবদ ইনকাম কি হালাল হবে।

আর এতদিন সব ঠিক ছিল আজকে হঠাৎ দেখলাম।দোকানে ওদের প্রতিমার ছবি যুক্ত একটা ক্যালেন্ডার।। এখন কিছু বলতেও পারছি না।।আবার খারাপ ও লাগতাছে।

এজন্য কি আমাদের ঈমানের কোন সমস্যা হবে?

কারণ তিন বছরের চুক্তি করা। যদিও চাইলে বিষেশ কারনে তিন মাস আগে না করতে পারবো। কিন্তু বিশেষ কোন কারন দেখাতে পারছি না।কিন্ত ওনার সাথে শেয়ারে একটা মুসলিম ভাইও আছে।ডেকোরেশন করছে অনেক টাকা দিয়ে।।তবে এইটা প্রতিজ্ঞা করছি যে তিন বছরেএ চুক্তি শেষ হলে আর চুক্তি নবায়ন করবো না।না করে দিব।।এমন অবস্থায় করনীয় কি হতে পারে।।।

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
মুহতারাম !আপনার প্রশ্নের জবাব বুঝার পূর্বে 287 নং ফাতাওয়া প্রথমে অধ্যয়যোগ্য।আমরা তথায় এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলাম যে,

অমুসলিমদের ধর্মীয় জিনিষপত্র বা বিজাতীয় সংস্কৃতির জিনিষপত্র এবং বিভিন্ন শরীয়ত বিরোধী কাজ সমূহে ব্যবহৃত জিনিষপত্রর ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে বলা যায় যে,এতে মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে-

একদল উলামায়ে কেরাম এ ক্রয়-বিক্রয় কে স্পষ্টত নাজায়েয বলেন,
তাদের দলীল হল,
কুরআনে কারীমে আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা দিয়েছেন,
ﻭَﻻَ ﺗَﻌَﺎﻭَﻧُﻮﺍْ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻭَﺍﻟْﻌُﺪْﻭَﺍﻥِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍْ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﺷَﺪِﻳﺪُ ﺍﻟْﻌِﻘَﺎﺏِ

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা-মায়েদা-২)
তাই তাদের বক্তব্য হল,শরীয়ত ও দ্বীন-ধর্ম বিরোধী কোনো কাজে সহায়তা করা কখনো জায়েয হবে না।


অন্যদিকে উলামায়ে কেরামের বিরাট একটি অংশ বলেন,
সুদ,মদ,শুকুর ব্যতীত অন্যান্য বিষয়ে মূল কাজ বৈধ হলে তা করা যাবে।যেমন গির্জায় ঝাড়ু দেওয়া, ইত্যাদি। কেননা শুধুমাত্র ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ নয়।তাই উক্ত ঝাড়ু দানের কাজ অবৈধ হবে না,চায় তা কোনো গির্জা বা অনৈসলামিক স্থানেই হোক না কেন?
যেমন ফাতাওয়া শামীতে বর্ণিত আছে,
ﻭﻟﻮ ﺁﺟﺮ ﻧﻔﺴﻪ ﻟﻴﻌﻤﻞ ﻓﻲ ﺍﻟﻜﻨﻴﺴﺔ ﻭﻳﻌﻤﺮﻫﺎ ﻻ ﺑﺄﺱ ﺑﻪ ﻷﻧﻪ ﻻ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﻓﻲ ﻋﻴﻦ ﺍﻟﻌﻤﻞ
যদি কেউ কোনো গির্জায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করে,অথবা টাকার বিনিময়ে গির্জা নির্মাণ করে দেয়, তাহলে এতে তার কোনো গুনাহ হবে না। কেননা এখানে মূল কাজে কোনো গুনাহ নাই।(রদ্দুল মুহতার,৬/৩৯২)

وصح بيع غير الخمر و مفاده صحة بيع الحشيشة الخ
মদ ব্যতীত অন্যান্য নেশদ্রব্য বিক্রি করা বৈধ,সারমর্ম হলঃ হাশীশ (একপ্রকার তামাক দ্রব্য) বিক্রিও বৈধ।(রদ্দুল মুহতার,৬/৪৫৪)

ফাতাওয়ায়ে উসমানী, ৩/৮৯,তে এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
তানক্বিহু ফাতাওয়াল হামিদিয়্যাহ,৬/৩৬৬।
মাজ্বমুআতুল ফাতাওয়া,২/২৭।
ফাতাওয়া রশিদিয়্যাহ, ৪৮৮।
ক্বিফায়াতুল মুফতী, ৯/১৪৮।


সুপ্রিয় পাঠকবর্গ!
এমন ব্যবসা যেখানে মতপার্থক্য চলে আসে সেরকম ব্যবসায় সাধারণত নিজেকে না জড়ানোই ভাল ও উত্তম। তবে যদি কোথাও শত চেষ্টা করার পরও এছাড়া অন্য কোনো ব্যবসার সুযোগ না হয়,তাই যেহেতু কিছুসংখ্যক উলামায়ে এরকম ব্যবসার অনুমোদনের পক্ষে রয়েছেন, সেহেতু এরকম ব্যবসার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।সেক্ষেত্রে গোনাহ ঐ ব্যক্তির-ই হবে, যে গোনাহকে সরাসরি সংগঠিত করবে। বিক্রতার কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 242

এবার আপনার প্রশ্নের জবাবে আসি আপনার জন্য উচিৎ ছিলো , আপনি খুজ খবর নিয়ে দোকানকে ভাড়া দিবেন,যেহেতু আপনি তিন বছরের চুক্তি করে ফেলেছেন,এবং সে ডেকোরেশন করে ফেলেছে,তাই এখন আর কিছু করার নেই।তারপরও তার সাথে আলাপ আলোচনা ও সমোঝতার বিত্তিতে চুক্তি থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করবেন।তবে খেয়াল রাখবেন যে, যাতে করে তার সাথে কোনো প্রকার অন্যায় আচরণ না হয়।
উক্ত তিন বছর আপনার জন্য ভাড়া বাবৎ টাকা গ্রহণ করা জায়েয হবে।এতে ঈমানে কোনো প্রকার সমস্যা হবে না।
 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...