ওয়া আলাইকুমস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
1163 নং ফাতাওয়ায় আমরা স্পষ্টকরে বলেছি যে, শবে বরাতের রাতে বিশেষ কোনো আ’মল নাই।সুতরাং শবে বরাত উপলক্ষ্যে বিশেষ কোনো খাবার দাবারের আয়োজনকে জরুরী বা সওয়াবের কাজ মনে করা সম্পূর্ণ বিদ’আত।হ্যা সওয়াবের কাজ বা জরুরী মনে না করে, কেউ যদি শবে বরাতের দিনে ভালো কোনো খাবারের আয়োজন করে, তাহলে এমনটা করার রুখসত থাকবে।হ্যা এই দিনে বিশেষ ভাবে রুটি বানানোর যদি কোনো রেওয়াজ থাকে,তাহলে এটা অবশ্যই বিদ’আত হবে।
(২)
লাইলাতুল কদর অনির্দিষ্ট। আল্লাহ বিশেষ হেকমতে এই দিনকে লুকিয়ে রেখেছেন।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদত করে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমাযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।(সহীহ বোখারী-১৯০১,সহীহ মুসলিম-৭৫৯, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৭৭৭)
লাইলাতুল কদর পাওয়ার সর্বোত্তম পন্থা হল, আপনি সারা রমজান ইবাদত করবেন। যদি সারা রমজান ইবাদত করা সম্ভব না হয়,তাহলে অন্তত রমজানের শেষ দশ ইবাদত করবেন।বিশেষকরে শেষ দশের বেজো[ড় রাত্রিতে ইবাদত করবেন।রমজানের শেষ দশের বেজোড় রাত্রির সমূহের মধ্যে ২৭ তারিখ উল্লেখযোগ্য। তবে লাইলাতুল কদর নির্দিষ্ট নয়।
(৩)
[ ১ ] رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও। আর আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও।সূরা আল-বাকারা ২ : ২০১।
[২] رَبَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِيْنَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْراً كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلا تُحَمِّلْنَا مَا لا طَاقَةَ لَنَا بِهৃ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنْتَ مَوْلانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থঃ হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করো না।হে আমাদের রব! পূর্ববর্তীদের উপর যে গুরুদায়িত্ব তুমি অর্পণ করেছিলে সে রকম কোন কঠিন কাজ আমাদেরকে দিও না।হে আমাদের রব! যে কাজ বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই এমন কাজের ভারও তুমি আমাদের দিও না। তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের ক্ষমা কর। আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি আমাদের মাওলা। অতএব কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।সূরা আল-বাকারা ২ : ২৮৬।
[৩] رَبَّنَا لا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
অর্থঃ হে আমাদের রব! যেহেতু তুমি আমাদেরকে হেদায়াত করেছ, কাজেই এরপর থেকে তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করিও না। তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। তুমিতো মহাদাতা। সূরা আলে-ইমরান ৩ : ৮।
[৪] رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ
অর্থঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! তোমার কাছ থেকে আমাকে তুমি উত্তম সন্তান-সন্ততি দান কর। নিশ্চয়ই তুমিতো মানুষের ডাক শোনো। সূরা আলে-ইমরান ৩ : ৩৮।
[৫] رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থঃ হে আমাদের রব! আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দাও। যেসব কাজে আমাদের সীমালঙ্ঘন হয়ে গেছে সেগুলোও তুমি ক্ষমা কর। আর (সৎপথে) তুমি আমাদের কদমকে অটল রেখো এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।সূরা আলে-ইমরাহ ৩ : ১৪৭।
[৬] সূরা আলে-ইমরান ৩ : ১৯৪। [৭] সূরা আল-মায়িদা ৫ : ১৮৩। [৮] সূরা আল-আ’রাফ ৭ : ২৩। [৯] সূরা আল-আ’রাফ ৭ : ৪৭। [১০] সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪০। [১১] সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪১। [১২] সূরা কাহ্ফ ১৮ : ১০।[১৩] সূরা হূদ ২০ : ২৫। [১৪] সূরা হূদ ২০ : ১১৪। [১৫] সূরা আম্বিয়া ২১ : ৮৯। [১৬] সূরা মু’মিনূন ২৩ : ৯৭-৯৮। [১৭] সূরা আল-ফুরক্বান ২৫ : ৬৫-৬৬। [১৮] সূরা আল-ফুরক্বান ২৫ : ৭৪। (১৯-২২) সূরা আশ-শু’আরা ২৬ : ৮৩,৮৪,৮৫,৮। [২৩] সূরা আন-নাম্ল ২৭ : ১৯। [২৪] সূরা ‘আনকাবূত ২৯ : ৩০। [২৫] সূরা আস-সাফ্ফাত ৩৭ : ১০০। [২৬] সূরা আহকাফ ৪৬ : ১৫।
(৪)
মালিকি মাযহাব এবং হাম্বলী মাযহাব মতে নামায রোযা কাযা হলে সাথে সাথেই কাযা করা ওয়াজিব।মালিকি মাযহাব মতে উযরের কারণে কাযা হলে দেড়ীতে কাযা করা যাবে।আর বিনা উযরে কাযা হলে সাথে সাথেই কাযা করা ওয়াজিব।হানাফি মাযহাবমতে নামায রোযা রোযা দেড়ীতে কাযা করা যাবে।জায়েয রয়েছে।সাথে সাথেই কাযা করা ওয়াজিব নয়।
কাযা রোযা আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের রোযা কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত রোযা সমূহের মধ্য থেকে প্রথম রোযাকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে রোযার কাযা আদায় করবে।ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত রোযা কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
968