আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

–1 vote
555 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।

১. শবে বরাতের রাতে পরিবারের সবাই খাওয়ার জন্য ভালো খাবারের আয়োজন করা হলে, জরুরী মনে না করে, তাহলে কি সমস্যা হবে? আর রুটি বানালে কি বিদাআত হবে? যদি পরিবারে আগে থেকেই রুটি বানানোর রেওয়াজ থাকে?

২. লাইলাতুল কদর এর রাত খুঁজে পাওয়ার সর্বোত্তম পন্থা কোনটি? কিভাবে সহজে এই রাতকে পাবো? বাংলাদেশে কি আলাদাভাবে জানিয়ে দেয়া হয় এই রাত সম্পর্কে?

৩. কুরআনে মোট কয়টি দুআ উল্লেখিত আছে, আল্লাহর কাছে চাওয়ার মতো?

৪. হায়েজের কারণে রমজানের যে রোযাগুলো কাযা হয়, সেগুলো পরবর্তী রমজান আসার আগে রাখা কি ওয়াজিব? অনেকেই এই বিষয়টি জানে না। তাই এমন কাযা রোজা অনেক জমা হয়ে গেছে। এইক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ে কাযা রোজা রাখার ক্ষেত্রে কোনগুলো আগে রাখতে হবে? আগের জমে যাওয়া রোযাগুলো নাকি নতুন রমজানের কাযা রোজাগুলো?

৫."ওয়া আলাইকুম আসসালাম" নাকি "ওয়া আলাইকুমুস সালাম"  কোনটা সঠিক উচ্চারণ?  
জাযাকাল্লাহু খইরন
closed

1 Answer

+1 vote
by (589,140 points)
selected by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) 
1163 নং ফাতাওয়ায় আমরা স্পষ্টকরে বলেছি যে, শবে বরাতের রাতে বিশেষ কোনো আ’মল নাই।সুতরাং শবে বরাত উপলক্ষ্যে বিশেষ কোনো খাবার দাবারের আয়োজনকে জরুরী বা সওয়াবের কাজ মনে করা সম্পূর্ণ বিদ’আত।হ্যা সওয়াবের কাজ বা জরুরী মনে না করে, কেউ যদি শবে বরাতের দিনে ভালো কোনো খাবারের আয়োজন করে, তাহলে এমনটা করার রুখসত থাকবে।হ্যা এই দিনে বিশেষ ভাবে রুটি বানানোর যদি কোনো রেওয়াজ থাকে,তাহলে এটা অবশ্যই বিদ’আত হবে।

(২)
লাইলাতুল কদর অনির্দিষ্ট। আল্লাহ বিশেষ হেকমতে এই দিনকে লুকিয়ে রেখেছেন।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ :  مَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদত করে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমাযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।(সহীহ বোখারী-১৯০১,সহীহ মুসলিম-৭৫৯, আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৭৭৭)

লাইলাতুল কদর পাওয়ার সর্বোত্তম পন্থা হল, আপনি সারা রমজান ইবাদত করবেন। যদি সারা রমজান ইবাদত করা সম্ভব না হয়,তাহলে অন্তত রমজানের শেষ দশ ইবাদত করবেন।বিশেষকরে শেষ দশের বেজো[ড় রাত্রিতে ইবাদত করবেন।রমজানের শেষ দশের বেজোড় রাত্রির সমূহের মধ্যে ২৭ তারিখ উল্লেখযোগ্য। তবে লাইলাতুল কদর নির্দিষ্ট নয়।

(৩)

[ ১ ] رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ
অর্থঃ হে আমাদের প্রভু! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও। আর আগুনের আযাব থেকে আমাদেরকে বাঁচাও।সূরা আল-বাকারা ২ : ২০১। 

[২] رَبَّنَا لا تُؤَاخِذْنَا إِنْ نَسِيْنَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلا تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْراً كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلا تُحَمِّلْنَا مَا لا طَاقَةَ لَنَا بِهৃ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَآ أَنْتَ مَوْلانَا فَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থঃ হে আমাদের রব! যদি আমরা ভুলে যাই কিংবা ভুল করি তবে তুমি আমাদেরকে পাকড়াও করো না।হে আমাদের রব! পূর্ববর্তীদের উপর যে গুরুদায়িত্ব তুমি অর্পণ করেছিলে সে রকম কোন কঠিন কাজ আমাদেরকে দিও না।হে আমাদের রব! যে কাজ বহনের ক্ষমতা আমাদের নেই এমন কাজের ভারও তুমি আমাদের দিও না। তুমি আমাদের মাফ করে দাও, আমাদের ক্ষমা কর। আমাদের প্রতি রহম কর। তুমি আমাদের মাওলা। অতএব কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।সূরা আল-বাকারা ২ : ২৮৬।

[৩] رَبَّنَا لا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ
অর্থঃ হে আমাদের রব! যেহেতু তুমি আমাদেরকে হেদায়াত করেছ, কাজেই এরপর থেকে তুমি আমাদের অন্তরকে বক্র করিও না। তোমার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দাও। তুমিতো মহাদাতা। সূরা আলে-ইমরান ৩ : ৮।

[৪] رَبِّ هَبْ لِي مِنْ لَدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً إِنَّكَ سَمِيعُ الدُّعَاءِ
অর্থঃ হে আমার পরওয়ারদেগার! তোমার কাছ থেকে আমাকে তুমি উত্তম সন্তান-সন্ততি দান কর। নিশ্চয়ই তুমিতো মানুষের ডাক শোনো। সূরা আলে-ইমরান ৩ : ৩৮। 

[৫] رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَإِسْرَافَنَا فِي أَمْرِنَا وَثَبِّتْ أَقْدَامَنَا وَانْصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ
অর্থঃ হে আমাদের রব! আমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দাও। যেসব কাজে আমাদের সীমালঙ্ঘন হয়ে গেছে সেগুলোও তুমি ক্ষমা কর। আর (সৎপথে) তুমি আমাদের কদমকে অটল রেখো এবং কাফের সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে তুমি আমাদেরকে সাহায্য কর।সূরা আলে-ইমরাহ ৩ : ১৪৭।

[৬] সূরা আলে-ইমরান ৩ : ১৯৪। [৭] সূরা আল-মায়িদা ৫ : ১৮৩। [৮] সূরা আল-আ’রাফ ৭ : ২৩। [৯] সূরা আল-আ’রাফ ৭ : ৪৭। [১০] সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪০। [১১] সূরা ইবরাহীম ১৪ : ৪১। [১২] সূরা কাহ্ফ ১৮ : ১০।[১৩] সূরা হূদ ২০ : ২৫। [১৪] সূরা হূদ ২০ : ১১৪। [১৫] সূরা আম্বিয়া ২১ : ৮৯। [১৬] সূরা মু’মিনূন ২৩ : ৯৭-৯৮। [১৭] সূরা আল-ফুরক্বান ২৫ : ৬৫-৬৬। [১৮] সূরা আল-ফুরক্বান ২৫ : ৭৪। (১৯-২২) সূরা আশ-শু’আরা ২৬ : ৮৩,৮৪,৮৫,৮। [২৩] সূরা আন-নাম্ল ২৭ : ১৯। [২৪] সূরা ‘আনকাবূত ২৯ : ৩০। [২৫] সূরা আস-সাফ্ফাত ৩৭ : ১০০। [২৬] সূরা আহকাফ ৪৬ : ১৫।

(৪)
মালিকি মাযহাব এবং হাম্বলী মাযহাব মতে নামায রোযা কাযা হলে সাথে সাথেই কাযা করা ওয়াজিব।মালিকি মাযহাব মতে উযরের কারণে কাযা হলে দেড়ীতে কাযা করা যাবে।আর বিনা উযরে কাযা হলে সাথে সাথেই কাযা করা ওয়াজিব।হানাফি মাযহাবমতে নামায রোযা রোযা দেড়ীতে কাযা করা যাবে।জায়েয রয়েছে।সাথে সাথেই কাযা করা ওয়াজিব নয়।

কাযা রোযা আদায় করার সময় এভাবে নিয়ত করবে যে, আমার জিম্মায় যত ফজরের রোযা কাযা রয়েছে, সে অনাদায়কৃত রোযা সমূহের মধ্য থেকে প্রথম রোযাকে এখন কাযা আদায় করছি” এমন নিয়তে রোযার কাযা আদায় করবে।ঠিক উল্টোভাবেও করা যায়। অর্থাৎ যত রোযা কাযা আছে তার সর্বশেষ অনাদায়কৃত কাযার নিয়ত করছি। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 968


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...