আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
49 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (16 points)

হে নবী! আল্লাহ্ আপনার জন্য যা বৈধ করেছেন আপনি তা নিষিদ্ধ করছেন কেন? আপনি আপনার স্ত্রীদের সস্তুষ্টি চাচ্ছেন; আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [সূরা তাহরিম, আয়াত ১]

ইসলামবিরোধীর দাবি, এখানে নবী শিরক করেছেন (নাউযুবিল্লাহ)। তিনি স্ত্রীদের সন্তুষ্টি কামনায় হালালকে হারাম করছেন! এটার উত্তর কি হবে?

1 Answer

0 votes
by (65,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

یٰۤاَیُّهَا النَّبِیُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَاۤ اَحَلَّ اللّٰهُ لَكَ ۚ تَبۡتَغِیۡ مَرۡضَاتَ اَزۡوَاجِكَ ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ

হে নবী! আল্লাহ তোমার জন্য যা বৈধ করেছেন, তুমি তা অবৈধ করছ কেন? তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি চাচ্ছ? আর আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা তাহরীম আয়াত-১)

উপরোক্ত আয়াত সম্পর্কে তাদের দাবী একেবারেই অবান্তর ও ভিত্তিহীন। আয়াতটির প্রকৃত তাফসীর নিচে দওয়া হয়েছে।

 নবী করীম (সাঃ) যে জিনিসকে নিজের উপর হারাম করে নিয়েছিলেন তা কি ছিল? যার কারণে মহান আল্লাহ অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা রয়েছে, যা সহীহ বুখারী ও মুসলিম ইত্যাদিতে বর্ণিত হয়েছে। ঘটনা হল, তিনি যয়নাব বিনতে জাহশ্ (রাঃ)র কাছে কিছুক্ষণ থাকতেন এবং সেখানে মধু পান করতেন। হাফসা এবং আয়েশা (রায্বিয়াল্লাহু আনহুমা) স্বাভাবিকতার অধিক সময় তাঁর সেখানে থাকার পথ বন্ধ করার জন্য ফন্দি আঁটলেন যে, তাঁদের কারো কাছে যখন তিনি আসবেন, তখন তাঁরা বলবেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি 'মাগাফীর' খেয়েছেন? আপনার মুখ থেকে 'মাগাফীর'এর গন্ধ আসছে। ('মাগাফীর' এক প্রকার গাছের মিষ্ট আঠা, যা খেলে মুখে এক প্রকার গন্ধ সৃষ্টি হয়।) সুতরাং তাঁরা পরিকল্পনা অনুযায়ী তা-ই করলেন। উত্তরে তিনি বললেন, "আমি তো যয়নাবের ঘরে কেবল মধু পান করেছি। এখন আমি শপথ করছি যে, আর কখনও তা পান করব না। তবে এ কথা তোমরা অন্য কাউকে বলো না।" (বুখারীঃ সূরা তাহরীমের তফসীর) সুনানে নাসাঈর বর্ণনায় এসেছে যে, তা ছিল একটি ক্রীতদাসী যাকে তিনি নিজের উপর হারাম করে নিয়েছিলেন। (সুনানে নাসায়ী ৩/৮৩)

পক্ষান্তরে কিছু অন্য আলেমগণ নাসাঈর এ বর্ণনাকে দুর্বল গণ্য করেছেন। এর বিশদ বর্ণনা অন্যান্য কিতাবে এইভাবে এসেছে যে, তিনি ছিলেন মারিয়া ক্বিবত্বিয়া (রাঃ)। যাঁর গর্ভে নবী করীম (সাঃ)-এর পুত্র ইবরাহীম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি একদা হাফসা (রাঃ) র ঘরে এসেছিলেন। তখন হাফসা (রাঃ) ঘরে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁদের (নবী (সাঃ) ও মারিয়া ক্বিবত্বিয়ার) উপস্থিতিতেই হাফসা (রাঃ) এসে যান। তাঁকে নবী (সাঃ)-এর সাথে নিজের ঘরে নির্জনে দেখে তিনি বড়ই নাখোশ হলেন। নবী (সাঃ)ও এ কথা অনুভব করলেন এবং তিনি হাফসা (রাঃ) কে খোশ করার জন্য কসম খেয়ে মারিয়া ক্বিবত্বিয়া (রাঃ) কে নিজের উপর হারাম করে নিলেন। আর হাফসা (রাঃ) কে তাকীদ করলেন যে, তিনি যেন এ কথা অন্য কাউকে না বলেন। ইমাম ইবনে হাজার প্রথমতঃ বলেন যে, এ ঘটনা বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যা একে অপরকে বলিষ্ঠ করে। দ্বিতীয়তঃ তিনি বলেন যে, হতে পারে একই সময়ে উভয় ঘটনাই এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার কারণ হয়েছে। (ফাতহুল বারী, সূরা তাহরীমের তাফসীর) ইমাম শওকানীও এ কথার সমর্থন করে উভয় ঘটনাকে সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন। এ থেকে পরিষ্কার হয়ে যায় যে, আল্লাহর হালাল করা জিনিসকে হারাম করার অধিকার কারো নেই। এমন কি রসূল (সাঃ)-এরও ছিল না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
আল্লাহর হালাল করা জিনিসকে হারাম করার অধিকার কারো নেই। এমন কি রসূল (সাঃ)-এরও ছিল না।

এর মানে কি, নবী কিছুক্ষনের জন্য হলেও হালালকে হারাম বলেছিলেন? (নাউযুবিল্লাহ) 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...