আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ উস্তাজ

আমি https://ifatwa.info/111979/ আই ফতোয়া প্রশ্নে জানতে চেয়েছিলাম পাত্র যদি কানাডার পুলিশ অফিসার হিসাবে চাকরি করেন এমন পাত্রের ব্যপারে আগানো উচিত হবে কিনা।

আলহামদুলিল্লাহ্‌, আপনি আপনার সুবিজ্ঞ উত্তরের মাধ্যমে দ্বীনদারি ও দুনিয়াবি কুফু মিলাতে বলেছেন এবং ইস্তেখারার নামাজ ও পরিবারের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন। 

আমার আম্মা ছেলের বায়োডাটা যদিও পছন্দ হয়েছে কিন্তু আমার প্রাথমিক কথা বার্তা আগানোর আগে একটা জিনিস স্পষ্ট ভাবে জানা প্রয়োজনঃ 

 

আমার আগের করা  প্রশ্নের কারন মূলত ছিল যেহেতু ছেলে,  নন মুসলিম কান্ট্রিতে কুফফারদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় আছেন এই ধরণের পাত্র বিয়ে করা ইসলামে জায়েজ কিনা?

 আমার কনসারন দুইটা- ১/  নন মুসলিম কান্ট্রিতে বসবাস (এটা কি ইসলাম সমর্থন করে?) ও ২/ কুফফারদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থায়  তার চাকরি

আমি ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখলাম তাদের পুলিশদের সমকামীদের/LGBTQ  রেলি প্রটেক্ট করতে হয়., সমকামীদের রেইনবো ব্যাচ ও LGBTQ   উদযাপনী বছরে ইউনিফর্মের সাথে পড়তে হয়েছে দেখলাম। তাই আমি কনফিউজড। (ছেলেকে যদি ও কিছুই জিজ্ঞেস করা হয় নি তাই জানি না তাকে ও এসব কাজ করতে হয় কিনা)

 

কথা এগুলে হয়ত কুফুর মিল পরীক্ষা করা যাবে ইন শা আল্লাহ্ কিন্তু তার আগেই ইসলাম ধর্মমতে এই ধরণের ক্ষেত্রে বিয়ে জায়েজ কিনা তা জানা প্রয়োজন।  জায়েজ হলে কি কি প্রশ্ন করবো তাকে এসব ব্যাপার সহ কুফু মাপার জন্য বললে উপকার হয় ইন শা আল্লাহ্‌

(উস্তাজ আমার পরিবার মডারেট, দ্বীনের জ্ঞান মডারেটদের মত কিছুটা । তবে আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমার উপর চাপায় দিবেন না উনারা কোন সিদ্ধান্ত ইন শা আল্লাহ্‌। তাই উলামায় কেরাম ও মুরুব্বি হিসাবে আপনাদের মতামত ই স্পষ্ট ভাবে আশা করছি। দয়া করে আপনাদের স্পষ্ট বিজ্ঞ মতামত দিয়ে সাহায্য করবেন বোনকে ইন শা আল্লাহ্‌)।

জাঝাকাল্লাহু খাইরন 

1 Answer

0 votes
by (71,340 points)

ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু।

বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম।

জবাবঃ

https://www.ifatwa.info/80658/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

وَعَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَرِيَّةً إِلَى خَثْعَمَ فَاعْتَصَمَ نَاسٌ مِنْهُمْ بِالسُّجُودِ فَأَسْرَعَ فِيهِمُ الْقَتْلَ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَمَرَ لَهُمْ بِنِصْفِ الْعَقْلِ وَقَالَ: «أَنَا بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ مُقِيمٍ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ؟ قَالَ: «لَا تَتَرَاءَى نَارَاهُمَا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ

জারীর ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খস্’আম সম্প্রদায়ের মুকাবিলায় একটি ক্ষুদ্র বাহিনী পাঠালেন। অতঃপর উক্ত সম্প্রদায়ের কিছু সংখ্যক লোক আত্মরক্ষার জন্য সাজদারত হলো, কিন্তু দ্রুতবেগে তাদেরকে হত্যা করা হলো। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছল। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মৃত ব্যক্তির উত্তারাধিকারীদেরকে অর্ধেক দিয়াত (রক্তপণ) পরিশোধ করার জন্য হুকুম দিয়ে বললেন, যে সকল মুসলিমরা মুশরিকদের মাঝে বসবাস করে, আমার ওপর তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। সাহাবীগণ জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রসূল, এরূপ কেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কেননা তাদের উচিত ছিল অনতিদূরে অবস্থান করা, যাতে একে অপরের আগুন পর্যন্ত দৃষ্টিপাত না হয়। (আবূ দাঊদ ২৬৪৫, তিরমিযী ১৬০৪,ছহীহাহ ৬৩৬.মিশকাত ৩৫৪৭)

,

কাফির রাষ্ট্রে বসবাসের জন্য অবশ্যই দুটো প্রধান শর্ত পূরণ হতে হবে। যথা:

প্রথম শর্ত: বসবাসকারীকে স্বীয় দ্বীনের ব্যাপারে আশঙ্কামুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ তার এমন ‘ইলম, ঈমান ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে, যা তাকে দ্বীনের ওপর অটল থাকার মতো এবং বক্রতা ও বিপথগামিতা থেকে বেঁচে থাকার মতো আত্মবিশ্বাসের জোগান দেয়। আর কাফিরদের প্রতি তার অন্তরে শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকতে হবে। অনুরূপভাবে কাফিরদের সাথে মিত্রতা ও তাদের প্রতি ভালোবাসা থেকে তাকে দূরে থাকতে হবে। কেননা তাদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করা এবং তাদেরকে ভালোবাসা ঈমানের পরিপন্থি।

,

মহান আল্লাহ বলেছেন,

 لَا تَجِدُ قَوْمًا يُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ يُوَادُّونَ مَنْ حَادَّ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَلَوْ كَانُوا آبَاءَهُمْ أَوْ أَبْنَاءَهُمْ أَوْ إِخْوَانَهُمْ أَوْ عَشِيرَتَهُمْ

“তুমি আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোনো জাতিকে পাবে না, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বিরোধীদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে; যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, কিংবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়।” [সূরাহ মুজাদালাহ: ২২]

,

মহান আল্লাহ আরও বলেছেন,

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَتَّخِذُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَىٰ أَوْلِيَاءَ ۘ بَعْضُهُمْ أَوْلِيَاءُ بَعْضٍ ۚ وَمَنْ يَتَوَلَّهُمْ مِنْكُمْ فَإِنَّهُ مِنْهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ. فَتَرَى الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِمْ مَرَضٌ يُسَارِعُونَ فِيهِمْ يَقُولُونَ نَخْشَىٰ أَنْ تُصِيبَنَا دَائِرَةٌ ۚ فَعَسَى اللَّهُ أَنْ يَأْتِيَ بِالْفَتْحِ أَوْ أَمْرٍ مِنْ عِنْدِهِ فَيُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا أَسَرُّوا فِي أَنْفُسِهِمْ نَادِمِينَ

“হে মু’মিনগণ, ইহুদি-খ্রিষ্টানদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে অবশ্যই তাদেরই একজন। নিশ্চয় আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে হিদায়াত দেন না। সুতরাং তুমি দেখতে পাবে, যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তারা কাফিরদের মধ্যে (বন্ধুত্বের জন্য) ছুটছে। তারা বলে, ‘আমরা আশঙ্কা করছি যে, কোনো বিপদ আমাদেরকে আক্রান্ত করবে।’ অতঃপর হতে পারে আল্লাহ দান করবেন বিজয় কিংবা তাঁর পক্ষ থেকে এমন কিছু, যার ফলে তারা তাদের অন্তরে যা লুকিয়ে রেখেছে, তাতে লজ্জিত হবে।” [সূরাহ মা’ইদাহ: ৫১-৫২]

,

নাবী বলেছেন, الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّমানুষ যাকে ভালোবাসে, সে (পরকালে) তার সাথেই থাকবে।” [সাহীহ বুখারী, হা/৬১৬৯; সাহীহ মুসলিম, হা/২৬৪০]

,

আল্লাহ’র শত্রুদের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা মুসলিমের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক কাজ। কেননা তাদেরকে ভালোবাসলে তাদের সাথে একাত্মতা পোষণ করা এবং তাদের অনুসরণ করা, কিংবা কমপক্ষে তাদের কর্মের বিরোধিতা না করা—জরুরি হয়ে যায়। একারণে নাবী বলেছেন, “মানুষ যাকে ভালোবাসে, সে (পরকালে) তার সাথেই থাকবে।”

,

দ্বিতীয় শর্ত: নিজের দ্বীনকে প্রকাশ করার মতো সক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ, বসবাসকারী ব্যক্তি কোনো প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই ইসলামের নিদর্শনাবলি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন। নামাজ, জুমু‘আহ ও জামা‘আত—যদি তার সাথে জামা‘আতে নামাজ ও জুমু‘আহ প্রতিষ্ঠা করার মতো কেউ থেকে থাকেন—প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না।

,

অনুরূপভাবে জাকাত, রোজা, হজ ও অন্যান্য শার‘ঈ নিদর্শন প্রতিষ্ঠা করতে বাধাগ্রস্ত হবেন না। যদি এসব কাজ করার সক্ষমতা না থাকে, তাহলে তখন হিজরত ওয়াজিব হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে বসবাস করা জায়েজ হবে না।

,

বিস্তারিত জানুনঃ-

https://ifatwa.info/13775/

,

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

,

১. উপরে উল্লেখিত ২ টি শর্ত মানতে পারলে অমুসলিম দেশে  যেতে পারবেন বা বসবাস জায়েজ আছে অন্যথায় যাওয়া জায়েজ নেই। আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী কোনো মুসলিম দেশে যাওয়া বা বসবাস করা উত্তম হবে।

,

২. উক্ত পুলিশের চাকরীতে যদি হারাম কাজ করা লাগে তাহলে ঐ চাকরী করা জায়েজ নেই। আর ঐ সব দেশে দ্বীন পালন করা একটু কঠিন। তাই তাকে বিয়ে করলে পরবর্তীতে সেখানে বসবাস করলে সন্তানদের দ্বীন পালনের ক্ষেত্রে আশংকা রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...