আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।

আমি একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। যখন জরুরত ছিল তখন আমি সেখানে চাকরি নেই।যদিও আমি পরিপূর্ণ পর্দা করে যাই তবুও পুরুষ শিক্ষক থাকার কারণে কাজের ক্ষেত্রে কথা বলতে হয়।আমার মনে হচ্ছে আমার দ্বারা গুনাহ হচ্ছে।তাই আমি চাকরিটা ছেড়ে দিতে চাচ্ছি। কিন্তু আমার বাবা-মা এবং পরিবারের কেউ তাতে রাজি নয়।যেহেতু তাদের ইসলামিক নলেজ কম তাই ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে তারা এটা কখনোই বিবেচনা করবে না।আমি বলেছি আমার অসুবিধা হচ্ছে,বরং এর বিকল্প কিছু করার কথা বলেছি।কিন্তু তাদের মতে আর যাই করি না কেন চাকরী ছাড়া যাবে না।আমি কিছুতেই তাদের বুঝাতে পারছি না।এক্ষেত্রে আমি যদি তাদের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ফিতনা থেকে বাচতে চাকরিটা ছেড়ে দেই তাহলে কি আমার গুনাহ হবে অথবা তাদের হক নষ্ট করা হবে???তাড়াতাড়ি উত্তর দিলে মুনাসিব হবে।

জাযাকুমুল্লাহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (65,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/72090/   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রয়োজন, অপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নি, যার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

রাসূলুল্লাহ বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

নারী গোপন জিনিস, যখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّতাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়।

যেমন,

যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।

চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।

কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।

চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।

কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।

নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

বিস্তারিত  জানুনঃ https://ifatwa.info/5112/

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে হাত মোজা পা মোজা পরিধান করে পূর্ণ পর্দা করে আপনি চাকরি করতে পারেন।  এক্ষেত্রে স্যারদের সাথে কথা বলার ক্ষেত্রে একাকিত্ব যেনো না হয়,জীবনঘনিষ্ঠ কোনো বিষয় ও হাসাহাসি মূলক কোনো বিষয় আলোচনা করবেননা।

জরুরী কথা হলে অল্প কথায় শেষ করে দিবেন কন্ঠস্বর নরম না করে মোটা করার চেষ্টা করবেন। তবে উপরোক্ত শর্ত মেনে যদিও চাকুরী করা জায়েজ, তবুও এমতাবস্থায় বিশেষ প্রয়োজন না থাকায় উক্ত চাকুরী না করাই উত্তম হবে।

আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আপনি চাকুরী ছাড়লে আপনার কোন গুনাহ হবে না। বরং আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম জাযা দান করবেন ইনশাআল্লাহ। তবে পারিবারক শৃঙ্খলা বজায়ার্থে আপনি হেকমত ও ভালোবাসার সাথে তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন। প্রয়োজনে স্থানীয় কোন আলেম বা আত্নীয়-স্বজনদের মাঝে কোন দ্বীনদার মান্যবর ব্যক্তি থাকলে তাদের মাধ্যমে পরিবারকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য দ্বীনের পথে চলা সহজ করুন।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...