আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আমার বয়স ২৫+, একজন অবিবাহিত। আমার একটি বড় ধরণের শারীরিক সমস্যা আছে। তবে সুচিকিৎসার ফলে এখন সুস্থ আছি, তবে মেডিসিন খেয়ে যেতে হচ্ছে আর পায়ে একটু সমস্যা আছে, তবে বাইরে কোথাও যাওয়া আসা করতে পারি। আমার যখন রোগ ধরা পড়ে অনেক কষ্টে আমার আব্বু আম্মু আমার চিকিৎসা করান। এরপর প্রায় ২/২.৫ বছর সুস্থ ছিলাম, পায়ের সমস্যাটা ভালো ছিলো। তখন আমার অনেক বিয়ে করতে ইচ্ছে হতো, কিন্তু পরিবার থেকে রাজি ছিলনা আর পারিবারিক কিছু সমস্যাও ছিল। তাই আমিও তাদেরকে বিয়ের জন্য বলতে পারিনি।

তারপর আবার যখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাই, আবার শুরু হয় চিকিৎসা, মেডিকেলে মেডিকেলে দৌড়াদৌড়ি। ২০২৩ সালে অপারেশনের মাধ্যমে আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে সুস্থ করে তোলেন। তবে অপারেশনের পর থেকে আমার বিয়ে করার আগ্রহটা আগের মতো আর নেই। হ্যাঁ, আমি বুঝি যে এখন বিয়ে করতে হবে বা বিয়ে করার অনেক প্রয়োজন, দেরি করা ঠিক না। কিন্তু আমার বেশিরভাগ সময় বিয়ে বিষয়টাকে পাত্তা দিতে ইচ্ছা করে না। এমনকি দু'আ করাও বাদ দিয়ে দিছি, ইচ্ছে করে না বা অলস লাগে। তবে বুঝি যে একজন দ্বীনদার জীবনসঙ্গী দরকার, যে আমার ভরণপোষণের দায়িত্ব নিবে, আমাকে আমার সমস্যার সাথে মন থেকে মেনে নিবে, তাহলে আমি দুনিয়াদারি ছেড়ে দিতাম। আমি অর্ধেকদ্বীনে, আহলিয়ায় বায়ো দিয়ে রেখেছি। কিন্তু কেউ আমার রোগের কথা শুনলেই রিজেক্ট করে দেয়।

আমি জানি যে আমার সমস্যার জন্য বিয়ে করা হয়ত ফরয না। এ অবস্থায় আমার কী করা উচিত। আমি বিয়ের আগ পর্যন্ত কোনো হালাল চাকুরি করার ইচ্ছা পোষণ করি। কারণ আমার সারাজীবন ডাক্তারের কন্সাল্টে থাকতে হবে এবং ওষুধ খেয়ে যেতে হবে, রোগটাই এমন। এজন্য আমার একটি আর্নিং সোর্স দরকার। আমার শুধু মনে হয়, আমার সমস্যার জন্য কেউ আমাকে বিয়ে করবে না। যতই সুন্দর, ব্রিলিয়ান্ট হই না কেন, এই একটা জিনিসের জন্য কেউ আমাকে মানবে না। কেউ মানলেও তাদের ফেমিলির জন্য তারা পিছিয়ে যাবে। এই বিষয়গুলোর জন্যই মূলত আমার বিয়ে নিয়ে বেশি চিন্তা হয় না।

আমার প্রশ্ন হলো, এমতাবস্থায় কি আমার চাকুরির জন্য প্রস্তুতি নেয়া ঠিক হবে? আর চাকুরির জন্য যদি কোচিং করি সেখানে তো সহশিক্ষা, আবার যদি চাকরি পাই, সেখানেও পুরুষ থাকবে। এখন আমার কী করা উচিত?


আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ করি টুকটাক। তবে প্রফেশনালি শিখতে পারি নি, কারণ এ মূহুর্তে টাকা দিয়ে প্রফেশনাল কোর্স করা সম্ভব না। আমরা ঋণী পরিবার। ছোটখাট কাজ করে তো আর মাস চালানো যায় না। নইলে ফ্রিল্যান্সিং করলেও আমার অনেক ভালো হত।

আর বিজনেস করার প্রবল ইচ্ছা নেই। কারণ এজন্য ফেসবুকে অনেক এক্টিভ থাকতে হয়৷ আর ফেসবুকে এক্টিভ থেকে দ্বীনী পড়াশুনা কঠিন বলে আমার মনে হয়। তাই সুপরামর্শ দিয়ে আমাকে সাহায্য করবেন প্লিজ?

1 Answer

0 votes
by (592,380 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

যে নারী স্বামীর একান্ত অনুগতা ও পবিত্র সে নারীর বড় মর্যাদা রয়েছে ইসলামে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.

‘‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৫৪।)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيْ النِّسَاءِ خَيْرٌ؟ قَالَ: «الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَلَا مَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَان

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, কোন্ রমণী সর্বোত্তম? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে স্বামী স্ত্রীর প্রতি তাকালে তাকে সন্তুষ্ট করে দেয়, স্বামী কোনো নির্দেশ করলে তা (যথাযথভাবে) পালন করে এবং নিজের প্রয়োজনে ও ধন-সম্পদের ব্যাপারে স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করে না।
হাসান :
(নাসায়ী ৩২৩১, আহমাদ ৭৪২১, ইরওয়া ১৭৮৬, সহীহাহ্ ৮৩৩৮, সহীহ আল জামি‘ ৩২৯৮.মিশকাত ৩২৭২।)

★স্ত্রীর নিকট স্বামীর মর্যাদা বিরাট। এই মর্যাদার কথা ইসলাম নিজে ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, ‘‘স্ত্রীর জন্য স্বামী তার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।’’

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
একবার এক নারী সাহাবী রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন, জী, আছে। নবীজী বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন? সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, فانظري أين أنت منه، فإنما هو جنتك ونارك
 হাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস ৯৫২; মুসনাদে আহমাদ, ৪/৩৪১ হাদীস ১৯০০৩; মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস ২৭৬৯; সুনানে কুবরা, বায়হাকী, হাদীস ১৪৭০৬)

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا.

‘‘যদি আমি কাউকে কারো জন্য সিজদা করতে আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।’’

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
নিজের জান্নাতে যাওয়ার পথকে সুগম ও সহজ করতে এবং দুনিয়াবী অনেক গুনাহ থেকে হেফাজতে থাকার লক্ষ্যে প্রশ্ন উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য বিবাহের পরামর্শ থাকবে।

আপনি বিবাহের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন এবং মহান রব্বুল আলামীনের দরবারে দোয়া চালিয়ে যাবেন।

বিবাহের চেষ্টার পাশাপাশি এক্ষেত্রে আপনি চাইলে শরীয়তের সমস্ত শর্তাবলী মেনে চাকরিও করতে পারে

এ সংক্রান্ত শর্তাবলী বিস্তারিত বিধান জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...