আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
আমার বাবা,নানা,দাদা অনেক আগেই মারা গেছেন। আপন ভাই নেই, ১সৎ ভাই ও ৩ চাচা আছেন, কিন্তু তারা কোনো প্রকার খোঁজ খবর নেন না, যোগাযোগ নেই বহু বছর । ৪ বছর পূর্বে ২ জন সাক্ষী(১জন নারী ও ১জন পুরুষ), কাজী ও আমার স্বামীর পক্ষ থেকে ১জনকে আমার উকিল নিযুক্ত করে আমাদের বিয়ে পড়ানো হয়।আমার মা এ বিষয়ে কিছু জানতো না, পরে মেনে নিয়েছে।এখন আমার ১টি বাচ্চাও আছে, এ ৪বছরে ২বার আমার স্বামী ১ তালাক, ১ তালাক লিখে রাগান্নিত অবস্থায় আমাকে মেসেজ দিয়েছিলেন, এবং ২ বারই ২/১ দিনের মধ্যে আমরা আবার স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরে এসেছি। আমার বিয়ে,তালাক দুটোই কি হয়েছে?আমার স্বামীকে কাজী বলেছে হানাফি মাজহাব মোতাবেক আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমার স্বামী ছাড়া আমার আর কোনো অভিভাবক নেই,আবার বিয়ে পড়ানো কি জরুরি? তাহলে আমার ওলি কে হবে?আমার কি ইদ্দত পালন করতে হবে আবার বিয়ে করতে হলে? মায়ের বাড়িতে ইদ্দত করা সম্ভব নয়,আমার আম্মাই আমার মামার অধীনস্তে থাকেন।স্বামীর বাড়িতে কি ইদ্দত পালন করা যাবে?স্বামী ছাড়া আমার দায়িত্ব নেবার আর কেউ নেই, অলি হয়ে পরিবার থেকে আবার বিয়ে পরিয়ে দিতে চাচা,মামা কেউ কোনো সাহায্য করবেনা আমাকে।আমি কি আমার স্বামীর সাথে সংসার চালিয়ে যেতে পারবো?আমার পরিস্থিতি অনুযায়ী শরয়ী সমাধান কি?

1 Answer

0 votes
by (592,170 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। যথা-
বর ও কনেকে কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে ইজাব তথা প্রস্তাবনা ও কবুল বলতে হয়।

উক্ত ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 
বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী- “তোমরা বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা কর।”[মুসনাদে আহমাদ এবং সহীহ জামে গ্রন্থে হাদিসটিকে ‘হাসান’ বলা হয়েছে (১০৭২)]
۔
ইজাব ও কবুলটি উভয় সাক্ষ্যি স্বকর্ণে শুনতে হবে।

উক্ত তিনটির কোন একটি শর্ত না পাওয়া গেলে ইসলামী শরীয়তে বিবাহ শুদ্ধ হয় না।

উপরোক্ত তিনটি শর্ত  পাওয়া গেলে বিবাহ হবে,অন্যথায় বিবাহ হবেনা।
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। 

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}
,
আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
বিবাহের সেই মজলিসে আপনি ও আপনার স্বামী উভয়েই উপস্থিত ছিলেন কিনা?

যদি আপনি সেই মজলিসে উপস্থিত থেকে থাকেন আর আপনার স্বামী উপস্থিত থেকে থাকে,আর সাক্ষীগন বালেগ হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ সহীহ হয়ে গিয়েছে।
এখানে ২য় সাক্ষী হিসেবে কাজী সাহেবকে ধরা হবে।

আর যদি আপনি সেই মজলিসে উপস্থিত থেকে থাকেন আর আপনার স্বামী উপস্থিত না থেকে তার উকিলকে পাঠায়,আর সেই উকিল বা তার আদেশে কাজী সাহেব আপনাকে বিবাহের প্রস্তাব পেশ করে,আর সাক্ষীগন বালেগ হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ সহীহ হয়ে গিয়েছে।

এক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ২ তালাক পতিত হয়েছে। আর যেহেতু ইদ্দতের মধ্যেই আপনারা আবারো স্বাভাবিক সম্পর্কে ফিরে এসেছিলেন,সুতরাং রজআত হয়ে গিয়েছে।
আর ইদ্দত পালন এর প্রয়োজন নেই,নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নেয়ারও প্রয়োজন নেই।

তবে এক্ষেত্রে আপনার স্বামী আর এক তালাকের মালিক রয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে কোন সময় আপনাকে আর একটি তালাক দিলেই আপনি তার উপর সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে অন্যত্র বিবাহ বসা ব্যাতিত আর কোন উপায় থাকবেনা।

★আর যদি উক্ত বিবাহের মজলিসে আপনি উপস্থিত না থেকে থাকেন,অথবা স্বামী বা তার পক্ষের কোনো উকিল না থাকে,সেক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।

এমতাবস্থায় আপনারা নতুন করে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে বিবাহ পড়িয়ে নিবেন।
এবং পূর্বের জীবনের কৃতকর্মের উপর অনুতপ্ত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে খালেছ দিলে তওবা করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...