আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
30 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (5 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওস্তাদ।
আমি কিছুদিন আগে আমার পালিত বাবা মার দেয়া কিছু জমি থেকে একটা অংশ বিক্রি করি। যার কাছে বিক্রি করি তার সাথে কথা ছিল ও যদি অন্যত্র কোথাও জমি বিক্রি করে তাহলে যেন আমাকে জানায়। অন্যত্র জমি বিক্রির ক্ষেত্রে আমি ফাস্ট পার্টি। আমার যদি তখন সামর্থ্য থাকে আমি কিনে রাখবো নতুবা অন্যত্র বিক্রি করার অধিকার রাখবে।
কিছুদিন পর শুনলাম সে একই জমি দেখিয়ে থেকে তিনজন লোকের কাছ থেকে বায়না নিয়েছে। পরে তাকে প্রশ্ন করায় সে অস্বীকার করে।  সর্বশেষ আমরা জানতে পারি যে সে এক লোকের কাছ থেকে ২৭ লক্ষ টাকা নিয়েছে তার নামে দলিল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। আমি এখনো তার কাছে ১৩ লক্ষ টাকা পাওনা। এখন আমাদের জমি আমাদের কাছে পুনরায় ফেরত দেওয়ার কথা বললে সে বাড়তি দাম চাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সেটা যদি হয় অযৌক্তিক সেটা তো আর মানা সম্ভব নয়। কারণ জমি বিক্রি করেছি কিছুদিন হয় সর্বোচ্চ দুই বছর। আমরা চাচ্ছি ওকে কিছু পরিমাণ টাকা লাভ দিয়ে জমি ফিরিয়ে আনতে। এবং ও যে লোকের কাছ থেকে ২৭ লক্ষ টাকা বায়না নিয়েছে তার কাছে কিছু টাকা বাড়তি নিয়ে জমি বিক্রি করতে চাচ্ছি।
মূল ঘটনা বর্ণনা করার পরে আমার প্রশ্ন যে,  আমি যে ওর কাছ থেকে কিছু টাকা বাড়তি দিয়ে জমি ফিরিয়ে এনে অন্যত্র কিছু দর বাড়িয়ে জমি বিক্রি করি তাহলে কি সেটা বেইনসাফি হবে?

1 Answer

0 votes
by (592,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যাতিত ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যার কাছে সেই জমিটি বিক্রি করেছেন, সে জমিটি মূলত তারই মালিকানায় রয়েছে। এর একচ্ছত্র মালিকানা একমাত্র তারই। আপনার এক্ষেত্রে কোন মালিকানা নেই।

আপনি এক্ষেত্রে শুধু তার থেকে বাকি ১৩ লক্ষ টাকাই পাবেন। অন্য কোনো কিছু পাবেননা,কোনো অধিকার খাটাতেও পারবেননা,এটাও বলতে পারবেননা যে সেই জমি আমার কাছেই বিক্রয় করতে হবে,অন্য কারো কাছে নয়,এভাবে বলার অধিকার আপনার নেই।

এক্ষেত্রে এটা তার ইচ্ছা,সে যার কাছে মন চায় বিক্রয় করতে পারে,এতে সে বিষয়টি আপনাকে জানাতে বাধ্য নয়। 

এই জমির একচ্ছত্র মালিকানা একমাত্র তারই। সুতরাং সে যাহা ইচ্ছা,শরীয়তের গন্ডির মধ্যে থেকে করতে পারে,আপনি তাকে কোনো বাধা দিতে পারবেননা।

কোন ভাবে তার উপর কোনো জোর জবরদস্তি করার অধিকার শরিয়ত আপনাকে দেয়নি।

হ্যাঁ যদি সে নিজে সন্তুষ্টি চিত্তে উক্ত জমি আপনার কাছে বিক্রয় করে, এক্ষেত্রে তার থেকে সেই জমিটি ক্রয় করে আপনি অন্যত্রে বা ওই ২৭ লক্ষ টাকা যিনি দিবেন তার কাছে বিক্রি করতে পারেন।

তবে বিষয়টি হতে হবে তার সন্তুষ্টিতে। কোন জোর জবরদস্তি করা যাবে না, কোন ধোকার আশ্রয় নেওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে যেহেতু একজন ২৭ লক্ষ টাকা বায়না দিয়েছে,সুতরাং তারা উভয়ে সেই বিষয়টি মিমাংসা করার আগ পর্যন্ত আপনি সেই জমির কোন দামাদামি করতে পারবেন না।

 হ্যাঁ যদি সেই বায়না দাতা ব্যক্তি সে জমিটি নিজের থেকেই আর ক্রয় করতে না চায়, বায়নার টাকা ফিরিয়ে নেয়, অথবা ঐ জমির মালিক নিজেই সন্তুষ্টি চিত্তে সেই বায়নার টাকা ফিরিয়ে দেয়, তার কাছে আর বিক্রয় না করে, সেক্ষেত্রে আপনি জমির দামাদামি করতে পারেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। 

وَعَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَبِعِ الرَّجُلُ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ وَلَا يَخْطِبْ عَلَى خِطْبَةِ أَخِيهِ إِلَّا أنْ يأذَنَ لَهُ» . رَوَاهُ مُسلم

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো লোক তার মুসলিম ভাইয়ের বেচাকেনার কথার বলার সময় নিজে বেচাকেনার কথা উত্থাপন করতে পারবে না। আর কোনো মুসলিম ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের উপর নিজে বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারবে না। তবে হ্যাঁ, যদি ঐ ভাই তা অনুমতি দেয়, তাহলে পারবে।(মিশকাত-২৮৫০)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 203 views
...