আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (10 points)
আমরা জানি ইসলামে আত্মীয়তার সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।কিন্তু আমি জানতে চাচ্ছি ঠিক কতটুক সীমা পর্যন্ত আত্মীয়ের খোঁজখবর রাখা আমার জন্য আবশ্যক?মানে আমার দাদা-দাদি,নানা-নানি তাদের বাড়ির মানুষও তো আমার আত্মীয়।আমার অনেক বড় আত্মীয়গোষ্ঠী আছে।আমি জানতে চাই ঠিক কতটুকু সম্পর্ক পর্যন্ত খোঁজখবর রাখা আবশ্যক?

1 Answer

0 votes
by (64,590 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব:-

https://ifatwa.info/82378/   নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, আত্মীয়তার সর্ম্পক দুই ধরনের হয়- সাধারণ সম্পর্ক এ সম্পর্কটি ব্যাপক এবং বিস্তৃত। যাকে বলা হয় দ্বীনি সম্পর্ক। একজন মানুষের সঙ্গে ঈমানি বন্ধনের কারণে তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। ঈমানদারদের সঙ্গে ভালবাসা রাখা। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা। সব সময় তাদের কল্যাণে কাজ করা।

তাদের ক্ষতি হয় এমন কাজকে তাদের থেকে প্রতিহত করা। তাদের জন্য ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। লেন-দেন ও যাবতীয় ব্যবহারিক কর্মকাণ্ডে বৈষম্য দূর করা এবং তাদের ন্যায় সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ তাদের হকগুলো আদায় করা।

যেমন- অসুস্থদের দেখতে যাওয়া; তাদের হকসমূহের ব্যাপারে সচেতন থাকা; তাদের গোসল দেয়া; জানাযার নামাজ আদায় করা; দাফন-কাফন ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করা।

>> বিশেষ সম্পর্কমাতা-পিতা উভয় দিক থেকে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়তা রক্ষা করা। তাদের হক বা অধিকারসমূহ এবং তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সন্তানের ওপর ওয়াজিব বা আবশ্যক।

যেমন- পিতামাতার খরচ বহন করা; তাদের খোঁজ-খবর নেয়া; প্রয়োজনের সময় বিশেষ করে বার্ধক্যে তাদের পাশে থাকা।

আর যখন অনেক আত্মীয়ের অধিকার একত্রিত হয়; তখন নিকটাত্মীয় হওয়ার ক্ষেত্রে অধিকার বাস্তবায়ন অগ্রাধিকার পাবে। পর্যায়ক্রমে তারপর যেটি তুলনামূলক কাছের সেটি অগ্রাধিকার পাবে।

নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার ধরন আল্লাম ইবনু আবি জামরাহ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন-

>> আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা অনেক সময় মালামাল ও ধন-সম্পদ দ্বারা হয়;

>> প্রয়োজনের সময় সাহায্য করার দ্বারা হয়;

>> ক্ষতিকে প্রতিহত করার মাধ্যমে হয়;

>> পরস্পরের সঙ্গে হাসি-খুশি ও ব্যবহারের মাধ্যমে হয়;

>> দোয়া করার দ্বারাও হয়;

>> সাধ্যানুযায়ী কারো কাছে কল্যাণকর কিছু পৌঁছানো দ্বারাও হয়;

>> সাধ্য ও সামর্থ অনুযায়ী ক্ষতি থেকে বাঁচানোর দ্বারাও হয় এবং তাদের উপকার করার দ্বারাও হয়। সুতরাং সময় সুযোগ তেমন না মিললে শুধু ফোনে কথা বলেও আত্মীয়তা সম্পর্ক ঠিক রাখা যাবে। তবে সময় সুযোগ হলে মাঝে মাঝে অল্প সময়ের জন্য হলেও নিকটতম আত্মীয়দের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা দরকার। আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা নাজায়েজ,এক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক কঠোরভাষা ব্যবহার করেছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

.(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/4223/

ذَهَبَ فُقَهَاءُ الْحَنَفِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ إِلَى أَنَّ دَرَجَاتِ الصِّلَةِ تَتَفَاوَتُ بِالنِّسْبَةِ لِلأَْقَارِبِ، فَهِيَ فِي الْوَالِدَيْنِ أَشَدُّ مِنَ الْمَحَارِمِ، وَفِيهِمْ أَشَدُّ مِنْ غَيْرِهِمْ . وَلَيْسَ الْمُرَادُ بِالصِّلَةِ أَنْ تَصِلَهُمْ إِنْ وَصَلُوكَ؛ لأَِنَّ هَذَا مُكَافَأَةٌ، بَل أَنْ تَصِلَهُمْ وَإِنْ قَطَعُوكَ . فَقَدْ رَوَى الْبُخَارِيُّ وَغَيْرُهُ لَيْسَ الْوَاصِل بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنَّ الْوَاصِل الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا

হানাফি ফুকাহায়ে কেরাম,এবং শাফেয়ী ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন,সিলাহ রেহমি আত্মীয়তার স্থরভেদে প্রযোজ্য হবে।মাহরামের তুলনায় মাতা-পিতার জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।আর গায়রে মাহরামের তুলনায় মাহরামের জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।সিলাহ রেহমির অর্থ এটা নয় যে,কেউ আপনার সাথে ভালো ও উত্তম ব্যবহার করল,আর বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন।কেননা এটার নাম তখন সিলাহ রেহমি না হয়ে  মুকাফা'।বরং আত্মীয় কেউ আপনার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ককে ছিন্ন করার পরও আপনি তার দিকে উত্তম ব্যবহার নিয়ে অগ্রসর হবেন এটাই হলো মূলত সিলাহ রেহমি।যেমন সহীহ বুখারী সহ বিভিন্ন রেওয়াতে এসেছে,সিলাহ রেহমি এটা নয় যে,আত্মীয় কারো ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন,বরং সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার পরও তার সাথে ভালো ব্যবহার করার নামই হলো সিলাহ রেহমি।(৩/৮৪)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1577

আরো জানুনঃ-

https://ifatwa.info/4017

https://ifatwa.info/4223

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

আত্মীয় কারা? যাদের সাথে সম্পর্ক না রাখলে গুনাহ হবে। সে সমস্ত আত্মীয় হলোঃ- বাবার দিক হতে, দাদা,দাদী,পরদাদা,পরদাদী,ভাই,ভাতিজা,ভাতিজি,এবং এই দুইজনের সন্তানের ধারাবাহিক সন্তান, বোন,ভাগ্নে,ভাগ্নি,এবং এই দুইজনের সন্তানের ধারাবাহিক সন্তান,চাচা,তার সন্তান,তার সন্তানের সন্তান,ফুফু,তার সন্তান,তার সন্তানের সন্তান। মায়ের দিক হতে আত্মীয়ঃ-নানা, নানী, পরানানা, পরনানী, খালা, মামা, এই দুইজনের পুরো বংশ। স্ত্রীর দিক হতে আত্মীয়ঃ- স্ত্রীর মা,বাবা,ভাই,বোন,তাদের সন্তান,তাদের সন্তানের সন্তান। স্বামীর দিক হতে আত্মীয়ঃ- স্বামীর মা, বাবা, ভাই, বোন, তাদের সন্তান, তাদের সন্তানের সন্তান।

আরো জানুন: https://www.ifatwa.info/1577


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...