আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসসালামুয়ালাইকুম ওরাহমাতিল্লাহি ওবারাকাতুহ। উস্তাদ কিছু প্রশ্ন ছিল।

১.আমার নিকট আত্মীয় input/out agency এর ব্যবসা করে।এই ব্যবসা কী হালাল?

২.তাদের দেওয়া উপহার কী আমি গ্রহণ করতে পারবো? তাদের বাসা -বাড়ি,গাড়ি ,ফিসারি যদি এই টাকায় হয়ে থাকে তাহলে কী আমি সেগুলো ব্যবহার করতে/ ঐ ফিসারীর মাছ খেতে পারবো?আমার ৮০% সন্দেহ হচ্ছে তাদের অর্থ -সম্পদ, উপহার হারাম।তারা  ফিসারীর মাছ বাসায় পাঠালে কি খাওয়া যাবে?যদি খাওয়া জায়েজ না হয় তাহলে মেয়ে হিসেবে আমার করনীয় কী?আমি একজন ছাত্রী সুতরাং আমার কোনো উপার্জন নেই যা দিয়ে আমি হালাল খাবার কিনবো/দান করব।

৩.কেউ যদি হারাম উপার্জন থেকে হালাল ব্যবসা দেয়,তখন কী সেই লোকের উপহার গ্রহণ করা যাবে/উনার ঐ ব্যবসার পণ্য ব্যবহার করা যাবে? উনি ঐ ব্যবস্যা হালাল উপার্জন দিয়ে শুরু করছে নাকি হারাম উপার্জন দিয়ে শুরু করছে আমি শিউর জানি না।তবে ৫০% মনে হচ্ছে হারাম উপার্জন থেকেই করা। এমতাবস্থায় আমার জন্য কী করনীয়।

***

1 Answer

0 votes
ago by (64,590 points)
edited ago by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/55895/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ সম্পর্কে মাসআলা আমরা নিম্নের আলোচনা থেকেই বুঝতে পারবো,

 فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে নাযতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

 সুতরাং বিত্তশালীর জন্য হারাম মাল থেকে হাদিয়া গ্রহণ কখনো জায়েয হবে না। তবে যাকে হাদিয়া দেয়া হচ্ছেতিনি যদি এমন মিসকিন হন যেতার উপর যাকাত ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণ সম্পদ নেই। তাহলে এমন ব্যক্তির জন্য উক্ত হাদিয়া গ্রহণ জায়েয। কেননা হারাম টাকার বিধান হলতা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া। নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء

 

 যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)

রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,

وَفِي جَامِعِ الْجَوَامِعِ: اشْتَرَى الزَّوْجُ طَعَامًا أَوْ كِسْوَةً مِنْ مَالٍ خَبِيثٍ جَازَ لِلْمَرْأَةِ أَكْلُهُ وَلُبْسُهَا وَالْإِثْمُ عَلَى الزَّوْج ِتَتَارْخَانِيَّةٌ

যদি স্বামী সন্দেহজনক মাল দ্বারা খাদ্য বা কাপড় ক্রয় করে,তাহলে স্ত্রীর জন্য উক্ত খাদ্য এবং কাপড়-কে গ্রহণ করা জায়েয রয়েছে। গোনাহ অবশ্য স্বামীরই হবে। (তাতারখানিয়া) (রদ্দুল মুহতার-৬/১৯১)

শরীয়ত উপার্জন সক্ষম বালেগ পুরুষ এর উপর আরো অনেকের লালন পালনের দায়িত্ব দিয়েছে। যেমনউপার্জন অক্ষম মাতা-পিতানাবালিগ ছেলেমেয়ে,স্ত্রী সহ অনেকের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে একজন পুরুষের উপর।

এখন অভিবাবকের সম্পদ হারাম হলেসেই সম্পদ থেকে খরচ না করে নিজ মাল থেকে খরচ করাই উচিৎ,যদি নিজের সম্পদ থাকে। তবে বালেগ ছেলের উপর ওয়াজিব যেতার সম্পদ না থাকলেও সে হালাল তরিক্বায় তার জীবিকা নির্বাহ করার চেষ্টা করবে। হ্যা উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে। কেননা এই উপার্জন অক্ষম ব্যক্তিগণকে ভরণপোষণ করা ঐ উপার্জন সক্ষম ব্যক্তির একান্ত দায়িত্ব ছিলো। সুতরাং গোনাহ ঐ অভিবাবকের-ই হবে। বিস্তারিত জানতে দেখুন-(ফাতাওয়ায়ে উসমানী-৩/১২৭)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.  সাধারণত nput/out agency ব্যবসা সরাসরি হারাম বলা যাবে না। তবে কেউ যদি অবৈধ ভাবে ব্যবসা করে তাহলে তা জায়েয হবে না।

২-৩. প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে উপার্জন অক্ষম ব্যক্তির জন্য অভিবাবকের  হারাম মাল থেকে তাওবাহ-ইস্তেগফারেরর সাথে প্রয়োজন পর্যন্ত খোরাকি গ্রহণ করা বৈধ রয়েছে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণ করা জায়েয নেই। সুতরাং আপনার জন্য  কারো ইনকাম হারাম হওয়া সম্পর্কে জেনে শুনে তার থেকে হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েজ হবে না। তবে যদি হারাম হওয়ার সুনির্দিষ্ট কোন প্রমাণ আপনার কাছে না থাকে তাহলে অহেতুক কারো সম্পর্কে হারাম ধারণা করা যাবে না।  তবে আপনার প্রবল ধারণা যদি হয় যে তার ইনকাম হারাম তাহলে আপনি তার প্রাপ্ত হাদিয়া নিজে ব্যবহার না করে গরিব অসহায় ব্যক্তিদেরকে সওয়াবের নিউজ ছাড়া দিয়ে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...