ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব,
https://ifatwa.info/3170/ শরীয়তের বিধান অনুযায়ী অজু ভঙ্গের কারণ সমূহের মাঝে প্রথম কারনই হলো সাবিলাইন অর্থাৎ পেশাব
পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া, পেশাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে অজু করতে হবে। অর্থাৎ এই দুই রাস্তা
দিয়ে পেশাব পায়খানা ছাড়াও অন্য যা কিছু বের হোক অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে।
চাই তা হোক রক্ত,বীর্য,মযি,সাদা স্রাব, ইত্যাদি।
(الفقه الاسلام و ادلته ١/٣٧٢،ما لا بد منه)
★আর এই দুই স্থান হতে যে
কোন কিছু সামান্য পরিমান ও বের হলে অজু ভেঙ্গে যায়।
এবং নামাজে অজু ভাঙ্গলে নামাজ ও
ভেঙ্গে যাবে। হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তোমাদের
কোন ব্যক্তির ওযূ নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তার
নামায কবুল করেন না। (সহীহ আবু দাউদ,৫৪)
তবে হায়েজা নারীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট
মেয়াদ এর কম বা বেশিদিন রক্ত প্রবাহিত হওয়াকে আল্লাহর রাসূল ইস্তেহাজা বলে
আখ্যায়িত করে ওই দিন গুলোর জন্য হুকুম দিয়েছেন যে রক্ত চলা অবস্থাতেই প্রতি
ওয়াক্তে অজু করে নামাজ পড়ে নিবে।
-হাদিসে আছে, একদা ফাতিমাহ বিনতে আবূ হুবায়শ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার রক্তস্রাব হতেই থাকে এবং আমি কখনো
পবিত্র হতে পারি না। আমি কি সলাত ছেড়ে দিবো?
তিনি বলেন- না, এটা এক প্রকার শিরাজনিত রোগ, এটা হায়িযের রক্ত নয়। তুমি তোমার হায়েযের মেয়াদকাল সলাত থেকে বিরত থাকো, অতঃপর গোসল করো এবং প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য উযু করে সলাত
পড়ো, ( সহীহ,ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৬২৪)
এই মাসআলা থেকে মাজুর হওয়ার মাসআলা
পাওয়া যায়।
★এবার বলি মূল বিষয় তথা
মেয়েদের সাদা স্রাব বের হওয়া যাকে লিকুরিয়া বলে,
সাদা_স্রাবের_মাসআলা_হলো
– কারো যদি এত বেশি সাদা স্রাব নির্গত
হতে থাকে যে, কোন নামাজের সম্পূর্ন
ওয়াক্তের মাঝে এত টুকু সময় বিরত হয়না যার মাঝে সে তাড়াতাড়ি করে অজুর ফরজ অংঙ্গগুলো
ধুয়ে ফরজ নামাজ আদায় করতে পারে।
এরুপ হলে সেই মেয়ে মাজুর (অক্ষম) বলে
গন্য হবে এবং মাজুর ব্যাক্তি প্রতি ওয়াক্ত এর জন্য অজু করবে…এবং অজুর পূর্বে স্রাব ধুয়ে নিবে। এবং
পাক পায়জামা পড়বে। তারপর নামাজের মাঝে সাদা স্রাব বের হলেও নামাজ ভাঙ্গবেনা, ওভাবেই নামাজ পড়ে নিবে।
এবং সাদা স্রাব বের হওয়া ছাড়া অন্য
কোন অজু ভঙ্গকারী কিছু পাওয়া না যায় তাহলে এই ওয়াক্তে যত খুশি নামাজ পড়তে পারবে।
কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। আর যদি এরপর কখনো এমন একটা ওয়াক্ত অতিবাহিত হয় যার
মাঝে একবার ও ওই কারন পাওয়া না হয়।
অর্থাৎ একবার ও সাদা স্রাব বের না হয়।
তাহলে সে আর মাজুর থাকবেনা। এখন যদি কারো অবস্থা মাজুর এর হয়ে থাকে তাহলে এই
হুকুম। আর যদি মাজুর হওয়ার অবস্থা না হয়ে থাকে তাহলে প্রতি ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর
থেকেই অজু করতে হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১-২. শরীয়তের বিধান মতে অপবিত্র
অবস্থায় অথবা অযু বিহিন নামাজ পড়া,সেজদাহ করা জায়েজ নেই। যদি কেহ এমনটি করে,তাহলে সে গুনাহগার হবে। তাকে তওবা করতে হবে। কেহ যদি দ্বীনের প্রতি ইহানত,তিরস্কার,ঘৃণা দেখানোর জন্য অযু
ছাড়া বা অপবিত্র অবস্থায় নামাজ পড়ে,বা অযু ছাড়া/অপবিত্র
অবস্থায় সেজদাহ করে,তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
৩. প্রশ্নে উল্লিখিত ছুরতে যদি আপনার প্রবল ধারণা হয় যে, স্রাব বের হয়েছে তাহলে অজু ভঙ্গ হবে অন্যথায় সন্দেহের কোন
ভিত্তি নেই। নামাজে সাদা স্রাব বের হলে নামাজ ভেংঙ্গে যাবে এবং তখন আবারো অজু করতে
হবে আর পায়জামায় তা লেগে থাকলে তাও পালটে নিতে হবে। তবে সামান্য তথা কয়েনের চেয়ে
কম লাগলে ওই পায়জামা পড়েই নামাজ হবে। যদিও পালটে পড়াই উত্তম। এভাবে কয়েকবার অজু
করে ফরজ পড়া গেলে কস্ট হলেও কয়েকবার
অজু করতে হবে।