আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
27 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।

১.কেউ ওযু ছাড়া সে যে কারনেই তার ওযু ভাঙ্গুক কিন্তু সে জানে সে ওযু করে নেই । এমতাবস্থায় সে ওযু ছাড়া সিজদা দিলে কি তার ঈমানে সমস্যা হবে

২.কেউ ওযু করার পর জানালো তার ওযু ভেঙ্গে গেছে কিন্তু অলসতাবসত সে ওযুবিহীন নামায পড়ে নিল এবং সিজদা দিলে । তাহলে কি এই দরুন তার ঈমান ভেঙ্গে যাবে বা ঈমানের অন্য সমস্যা ( কাফের,মুশরিক) হবে

৩. আমার প্রায় সাদাস্রাব হয় কিন্তু মাযুর না। অন্য সময় আমার সাদাস্রাব ঠিকই হয় কিন্তু আমি বুঝতে পারিনা তো নামাযরত অবস্থায় আমার সাদা স্রাব হওয়ার ব্যাপারে আমি সন্দেহে থাকি বুঝতে পারিনা।এ অবস্থায় কি আমার নামাজ চালিয়ে যাওয়া ঠিক হবে

1 Answer

0 votes
by (64,590 points)
edited ago by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/3170/  শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  অজু ভঙ্গের কারণ সমূহের মাঝে প্রথম কারনই হলো সাবিলাইন অর্থাৎ পেশাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হওয়া, পেশাব পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে অজু করতে হবে। অর্থাৎ এই দুই রাস্তা দিয়ে পেশাব পায়খানা ছাড়াও অন্য যা কিছু বের হোক অজু ভঙ্গ হয়ে যাবে। চাই তা হোক রক্ত,বীর্য,মযি,সাদা স্রাব, ইত্যাদি।

(الفقه الاسلام و ادلته ١/٣٧٢،ما لا بد منه)

আর এই দুই স্থান হতে যে কোন কিছু সামান্য পরিমান ও বের হলে অজু ভেঙ্গে যায়।

এবং নামাজে অজু ভাঙ্গলে নামাজ ও ভেঙ্গে যাবে। হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কোন ব্যক্তির ওযূ নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় ওযূ না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা’আলা তার নামায কবুল করেন না। (সহীহ আবু দাউদ,৫৪)

তবে হায়েজা নারীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মেয়াদ এর কম বা বেশিদিন রক্ত প্রবাহিত হওয়াকে আল্লাহর রাসূল ইস্তেহাজা বলে আখ্যায়িত করে ওই দিন গুলোর জন্য হুকুম দিয়েছেন যে রক্ত চলা অবস্থাতেই প্রতি ওয়াক্তে অজু করে নামাজ পড়ে নিবে।

-হাদিসে আছে, একদা ফাতিমাহ বিনতে আবূ হুবায়শ (রাঃ) রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার রক্তস্রাব হতেই থাকে এবং আমি কখনো পবিত্র হতে পারি না। আমি কি সলাত ছেড়ে দিবো?

তিনি বলেন- না, এটা এক প্রকার শিরাজনিত রোগ, এটা হায়িযের রক্ত নয়। তুমি তোমার হায়েযের মেয়াদকাল সলাত থেকে বিরত থাকো, অতঃপর গোসল করো এবং প্রতি ওয়াক্ত সলাতের জন্য উযু করে সলাত পড়ো, ( সহীহ,ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ৬২৪)

এই মাসআলা থেকে মাজুর হওয়ার মাসআলা পাওয়া যায়।

এবার বলি মূল বিষয় তথা মেয়েদের সাদা স্রাব বের হওয়া যাকে লিকুরিয়া বলে,

সাদা_স্রাবের_মাসআলা_হলো

 কারো যদি এত বেশি সাদা স্রাব নির্গত হতে থাকে যে, কোন নামাজের সম্পূর্ন ওয়াক্তের মাঝে এত টুকু সময় বিরত হয়না যার মাঝে সে তাড়াতাড়ি করে অজুর ফরজ অংঙ্গগুলো ধুয়ে ফরজ নামাজ আদায় করতে পারে।

এরুপ হলে সেই মেয়ে মাজুর (অক্ষম) বলে গন্য হবে এবং মাজুর ব্যাক্তি প্রতি ওয়াক্ত এর জন্য অজু করবেএবং অজুর পূর্বে স্রাব ধুয়ে নিবে। এবং পাক পায়জামা পড়বে। তারপর নামাজের মাঝে সাদা স্রাব বের হলেও নামাজ ভাঙ্গবেনা, ওভাবেই নামাজ পড়ে নিবে।

এবং সাদা স্রাব বের হওয়া ছাড়া অন্য কোন অজু ভঙ্গকারী কিছু পাওয়া না যায় তাহলে এই ওয়াক্তে যত খুশি নামাজ পড়তে পারবে। কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। আর যদি এরপর কখনো এমন একটা ওয়াক্ত অতিবাহিত হয় যার মাঝে একবার ও ওই কারন পাওয়া না হয়।

অর্থাৎ একবার ও সাদা স্রাব বের না হয়। তাহলে সে আর মাজুর থাকবেনা। এখন যদি কারো অবস্থা মাজুর এর হয়ে থাকে তাহলে এই হুকুম। আর যদি মাজুর হওয়ার অবস্থা না হয়ে থাকে তাহলে প্রতি ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই অজু করতে হবে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১-২. শরীয়তের বিধান মতে অপবিত্র অবস্থায় অথবা অযু বিহিন নামাজ পড়া,সেজদাহ করা জায়েজ নেই। যদি কেহ এমনটি করে,তাহলে সে গুনাহগার হবে। তাকে তওবা করতে হবে। কেহ যদি দ্বীনের প্রতি ইহানত,তিরস্কার,ঘৃণা দেখানোর জন্য অযু ছাড়া বা অপবিত্র অবস্থায় নামাজ পড়ে,বা অযু ছাড়া/অপবিত্র অবস্থায় সেজদাহ করে,তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।    

৩. প্রশ্নে উল্লিখিত ছুরতে যদি আপনার প্রবল ধারণা হয় যে, স্রাব বের হয়েছে তাহলে অজু ভঙ্গ হবে অন্যথায় সন্দেহের কোন ভিত্তি নেই। নামাজে সাদা স্রাব বের হলে নামাজ ভেংঙ্গে যাবে এবং তখন আবারো অজু করতে হবে আর পায়জামায় তা লেগে থাকলে তাও পালটে নিতে হবে। তবে সামান্য তথা কয়েনের চেয়ে কম লাগলে ওই পায়জামা পড়েই নামাজ হবে। যদিও পালটে পড়াই উত্তম। এভাবে কয়েকবার অজু করে ফরজ পড়া গেলে কস্ট হলেও কয়েকবার অজু করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...