আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
367 views
in সালাত(Prayer) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম

১) ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর ৩ কুল পড়ে শরীর মাসেহ করার হাদিস কি যইফ?

২) মাগরিবের পর ৩ কুল পড়লে কি ঘুমানোর আগে না পরলেও কি সারা রাত নিরাপত্তা ?

৩) জামাতে কয়েক রাকাত মিস গেলে- ইমাম সালাম ফিরানোর পর দাঁড়াব ?

৪) বৈঠকে নজর কোথায় থাকবে ?

৫) সালাফি আলেমরা বলে- " আশ'আরি,মাতুরিদির প্রথম ইমামদের আকিদা ঠিক ছিল,কিছু কাল পরে পরবর্তীরা এসে বিভিন্ন বাতিল ফিরকার সাথে বাহাস করত,এরকম ভাবে সেই সব বাতিল ফিরকার কিছু বাতিল আকিদা আশ'আরি,মাতুরিদি আকিদায় প্রবেশ করে " ...তাদের দাবি কি সত্যি ?

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
সকাল-সন্ধ্যায় তিন কুল (সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস)   তিনবার করে পড়ার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়ছে। 

عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَنَا – قَالَ – فَأَدْرَكْتُهُ فَقَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا . قَالَ ” قُلْ ” . قُلْتُ مَا أَقُولُ قَالَ ” قُلْ : هوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ”
আবদুল্লাহ ইবন খুবায়ব তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক বর্ষণমুখর রাতে গভীর অন্ধকারে আমাদের জন্য দু’আ করার উদ্দেশ্যে আমারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তালাশ করতে বের হলাম। এক স্থানে গিয়ে আমি তাঁকে পেলাম।
তখন তিনি বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না।
তিনি আবার বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না। পুনরায় তিনি আমাকে বললেনঃ বল। আমি বললামঃ কি বলব?
তিনি বললেনঃ “সকাল-সন্ধ্যায় কুল হুয়াল্লাহু আহাদ এবং মুআওয়াযাতায়ন (কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস) তিন বার পাঠ করবে; তবে তা সব কিছুর ক্ষেত্রে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।”
[তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৭৫ [আল মাদানী প্রকাশনী] 
★হাদীসটির সনদ হাসান, তা’লীকুর রাগীব ১/২২৪, আল কালিমুত তাইয়্যিব ১৯/৭]


★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিন বার তিন বার করে প্রত্যেক সুরা পড়ে তার পর দুই হাতে ফু দিয়ে পুরো শরীরের উপর উক্ত হাত ফিরাইবেন।
এটাই অনেকে বলেছেন।
তবে এক্ষেত্রে শুধু সুরা পড়াই মূল বিষয়। 
হাত দিয়ে মুছে দেওয়ার কথা হাদীসে নেই।
এটি বুযুর্গানে দ্বীনের আমল। 
,
(০২)
হ্যাঁ সেটিও যথেষ্ট হবে।
 
তবে ঘুমানোর আগে পড়ার জন্য আলাদা ভাবে হাদীস এসেছে।
তাই ঘুমানোর আগেও পড়বেন।     
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
عَنْ عَرْوَةَ بْنِ نَوْفَلٍ، عَنْ أَبِيهِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ: «مَا جَاءَ بِكَ؟» ، قَالَ: جِئْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ تُعَلِّمُنِي شَيْئًا أَقُولُهُ عِنْدَ مَنَامِي، قَالَ: «إِذَا أَخَذْتَ مَضْجَعَكَ فَأَقْرَأْ قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ، ثُمَّ نَمْ عَلَى خَاتِمَتِهَا فَإِنَّهَا بَرَاءَةٌ مِنَ الشِّرْكِ»

হযরত উরওয়া বিন নাউফেল তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ তাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন এসেছো? তিনি বললেন, এজন্য এসেছি, যাতে আপনি আমাকে কিছু শিক্ষা দিন, যা আমি শোয়ার সময় পড়তে পারি। রাসূল সাঃ ইরশাদ করলেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন “কুল ইয়াআয়্যুহাল কাফিরূন” পড়বে। তারপর এটি শেষ করে শুইবে। কেননা, এটি শিরক থেকে মুক্ত করে। {আলআদাব লিইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৩, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৬৫২৮, সুনানে কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-১০৫৬৯}


عَنْ عَائِشَةَ، ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَتَى إِلَى فِرَاشِهِ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ، ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا، وَقَرَأَ فِيهِمَا: قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ، ثُمَّ مَسْحَ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ، يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا (3) أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ، يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। প্রতি রাতে রাসূল সাঃ যখন বিছানায় আসতেন, তখন দুই তালুকে একত্র করতেন। তারপর তাতে ফুঁ দিতেন। পড়তেন “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ” এবং “কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক” ও “কুল আউজু বিরাব্বিন নাছ”। তারপর শরীরের যতটুকু অংশ সম্ভব মুছে দিতেন।  শুরু করতেন মাথা ও চেহারা ও শরীরের সামনের অংশ থেকে। এভাবে তিনবার করতেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৮৫৩, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০১৭}

(০৩)

নিয়ম হলো, মাসবুক (যে ইমামের সাথে এক বা একাধিক রাকাত পায়নি ) ইমামের দুই দিকে সালাম ফিরানো শেষ হওয়ার পর ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার জন্য দাঁড়াবে। কিন্তু অনেককে দেখা যায় ইমাম সালাম ফিরানো শুরু করার সাথে সাথে উঠে যায়। এটা অনুত্তম।

ইমামের দুই দিকে সালাম ফেরানোর পরেই মাসবুকের দাঁড়ানো উচিত। এর আগে দাঁড়ানো অনুত্তম।
(খিজানাতুল আকমাল : ১/৫৮;
বাদায়িউস সানায়ে : ১/৫৬৩; হালবাতুল মুজাল্লি : ২/৪৬৪;
হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি, পৃষ্ঠা : ২৫২)

ইমাম সাহেবের উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর মাসবুক তার অবশিষ্ট নামায আদায়ের জন্য দাঁড়াবে। ইমামের প্রথম সালামের পরই দাঁড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ ইমাম সাহু সিজদা দিলে মাসবুকেরও ইমামের সাথে সিজদা করা আবশ্যক। আর ইমামের সাহু সিজদা নেই এটা প্রায় নিশ্চিত হবে দ্বিতীয় সালামের পর। তাই দ্বিতীয় সালামের পরই মাসবুক দাঁড়াবে।

(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৩১৫৫)
আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৭)

আরো জানুনঃ 
,
(০৪)

নামাজের সময় দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে, রুকু অবস্থায় থাকবে দুই পায়ের মাঝখানে, বসা অবস্থায় থাকবে কোলের দিকে, সিজদা অবস্থায় থাকবে নাকের দিকে। (কিতাবুল মাবসুত : ১/২৮)
,
(০৫)
এ দাবী সঠিক নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...