সকাল-সন্ধ্যায় তিন কুল (সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস) তিনবার করে পড়ার কথা হাদীসে বর্ণিত হয়ছে।
عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خُبَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ خَرَجْنَا فِي لَيْلَةٍ مَطِيرَةٍ وَظُلْمَةٍ شَدِيدَةٍ نَطْلُبُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي لَنَا – قَالَ – فَأَدْرَكْتُهُ فَقَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا ثُمَّ قَالَ ” قُلْ ” . فَلَمْ أَقُلْ شَيْئًا . قَالَ ” قُلْ ” . قُلْتُ مَا أَقُولُ قَالَ ” قُلْ : هوَ اللَّهُ أَحَدٌ وَالْمُعَوِّذَتَيْنِ حِينَ تُمْسِي وَتُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ تَكْفِيكَ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ”
আবদুল্লাহ ইবন খুবায়ব তাঁর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ এক বর্ষণমুখর রাতে গভীর অন্ধকারে আমাদের জন্য দু’আ করার উদ্দেশ্যে আমারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে তালাশ করতে বের হলাম। এক স্থানে গিয়ে আমি তাঁকে পেলাম।
তখন তিনি বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না।
তিনি আবার বললেনঃ বল।
আমি কিছুই বললাম না। পুনরায় তিনি আমাকে বললেনঃ বল। আমি বললামঃ কি বলব?
তিনি বললেনঃ “সকাল-সন্ধ্যায় কুল হুয়াল্লাহু আহাদ এবং মুআওয়াযাতায়ন (কুল আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস) তিন বার পাঠ করবে; তবে তা সব কিছুর ক্ষেত্রে তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।”
[তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৭৫ [আল মাদানী প্রকাশনী]
★হাদীসটির সনদ হাসান, তা’লীকুর রাগীব ১/২২৪, আল কালিমুত তাইয়্যিব ১৯/৭]
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তিন বার তিন বার করে প্রত্যেক সুরা পড়ে তার পর দুই হাতে ফু দিয়ে পুরো শরীরের উপর উক্ত হাত ফিরাইবেন।
এটাই অনেকে বলেছেন।
তবে এক্ষেত্রে শুধু সুরা পড়াই মূল বিষয়।
হাত দিয়ে মুছে দেওয়ার কথা হাদীসে নেই।
এটি বুযুর্গানে দ্বীনের আমল।
عَنْ عَرْوَةَ بْنِ نَوْفَلٍ، عَنْ أَبِيهِ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَهُ: «مَا جَاءَ بِكَ؟» ، قَالَ: جِئْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ تُعَلِّمُنِي شَيْئًا أَقُولُهُ عِنْدَ مَنَامِي، قَالَ: «إِذَا أَخَذْتَ مَضْجَعَكَ فَأَقْرَأْ قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ، ثُمَّ نَمْ عَلَى خَاتِمَتِهَا فَإِنَّهَا بَرَاءَةٌ مِنَ الشِّرْكِ»
হযরত উরওয়া বিন নাউফেল তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ তাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন এসেছো? তিনি বললেন, এজন্য এসেছি, যাতে আপনি আমাকে কিছু শিক্ষা দিন, যা আমি শোয়ার সময় পড়তে পারি। রাসূল সাঃ ইরশাদ করলেন, যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন “কুল ইয়াআয়্যুহাল কাফিরূন” পড়বে। তারপর এটি শেষ করে শুইবে। কেননা, এটি শিরক থেকে মুক্ত করে। {আলআদাব লিইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪৩, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৬৫২৮, সুনানে কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-১০৫৬৯}
عَنْ عَائِشَةَ، ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَتَى إِلَى فِرَاشِهِ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ، ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا، وَقَرَأَ فِيهِمَا: قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ، ثُمَّ مَسْحَ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ، يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا (3) أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ، يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। প্রতি রাতে রাসূল সাঃ যখন বিছানায় আসতেন, তখন দুই তালুকে একত্র করতেন। তারপর তাতে ফুঁ দিতেন। পড়তেন “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ” এবং “কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক” ও “কুল আউজু বিরাব্বিন নাছ”। তারপর শরীরের যতটুকু অংশ সম্ভব মুছে দিতেন। শুরু করতেন মাথা ও চেহারা ও শরীরের সামনের অংশ থেকে। এভাবে তিনবার করতেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৮৫৩, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০১৭}
(০৩)
নিয়ম হলো, মাসবুক (যে ইমামের সাথে এক বা একাধিক রাকাত পায়নি ) ইমামের দুই দিকে সালাম ফিরানো শেষ হওয়ার পর ছুটে যাওয়া রাকাত আদায় করার জন্য দাঁড়াবে। কিন্তু অনেককে দেখা যায় ইমাম সালাম ফিরানো শুরু করার সাথে সাথে উঠে যায়। এটা অনুত্তম।
ইমামের দুই দিকে সালাম ফেরানোর পরেই মাসবুকের দাঁড়ানো উচিত। এর আগে দাঁড়ানো অনুত্তম।
(খিজানাতুল আকমাল : ১/৫৮;
বাদায়িউস সানায়ে : ১/৫৬৩; হালবাতুল মুজাল্লি : ২/৪৬৪;
হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি, পৃষ্ঠা : ২৫২)
ইমাম সাহেবের উভয় দিকে সালাম ফিরানোর পর মাসবুক তার অবশিষ্ট নামায আদায়ের জন্য দাঁড়াবে। ইমামের প্রথম সালামের পরই দাঁড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়। কারণ ইমাম সাহু সিজদা দিলে মাসবুকেরও ইমামের সাথে সিজদা করা আবশ্যক। আর ইমামের সাহু সিজদা নেই এটা প্রায় নিশ্চিত হবে দ্বিতীয় সালামের পর। তাই দ্বিতীয় সালামের পরই মাসবুক দাঁড়াবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক ৩১৫৫)
আলবাহরুর রায়েক ১/৩৭৮; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/১০৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৯১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৯৭)
আরো জানুনঃ
,
(০৪)
নামাজের সময় দাঁড়ানো অবস্থায় দৃষ্টি সিজদার দিকে থাকবে, রুকু অবস্থায় থাকবে দুই পায়ের মাঝখানে, বসা অবস্থায় থাকবে কোলের দিকে, সিজদা অবস্থায় থাকবে নাকের দিকে। (কিতাবুল মাবসুত : ১/২৮)