আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
17 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু ওয়ালাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি একজন ডিজাইনার। ডিজাইনের ক্ষেত্রে ডিজাইনকে ফুটিয়ে তুলতে আকর্ষণীয় ফন্ট ব্যবহার করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় ব্যবহার করা ফন্টটি পেইড হয়ে থাকে। জেনে না জেনে এরকম পেইড ফন্ট ব্যবহার করছি যা কিনার সামর্থ আমার কিংবা অন্যান্য সব ডিজাইনারদের ও নেই। একেকটা ফন্টের দাম ২০০ থেকে শুরু করে হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে। আমি যদি এসব ফন্ট ব্যবহার করার পর(ফ্রি তে পাওয়া যায়)ফন্ট এর মালিকদের নামে সামর্থ অনুযায়ী দান/সদকাহ করে ফেলি তাহলে কি হবে? আমি দাওয়াহ ডিজাইন করি আর এখন টুকটাক পেইড ওয়ার্ক করতেছি তবে সেই মূল্য দিয়ে ফন্ট কিনা সম্ভব না।

1 Answer

0 votes
by (585,060 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

https://ifatwa.info/66897/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
আবিস্কার এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয়
আবিস্কার সত্ত্ব এমন একটি সত্ত্বকে বলা হয়, যা প্রচলিত নিয়মানুসারে কিংবা আইনগত দিক দিয়ে ওই ব্যক্তির অনুকূলে থাকে,যে ব্যক্তি নতুন কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে বা কোনো জিনিষের নতুন আকৃতি বা রূপ দান করেছে।আর আবিস্কার সত্ত্বের অর্থ হল,এককভাবে ওই ব্যক্তির জন্যই নিজের আবিস্কৃত জিনিষ বানানোর এবং বাজারজাত করার অধিকার থাকবে।আবার কোনো কোনো সময় আবিস্কারক তার আবিস্কার সত্ত্ব অন্য কারো কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর সত্ত্ব ক্রয়কারী তখন আবিস্কারকের মত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওই জিনিষ প্রস্তুত করে থাকে।এমনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কিতাব, বই লিখে কিংবা সংকলন করে, তাহলে ওই কিতাব-বই, প্রকাশ-প্রচার ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বাজারজাত করার অধিকার লেখক বা সংখকলকের জন্য সংরক্ষিত থাকে।আবার কোনো কোনো সময় কিতাবের লেখক ওই সত্ত্ব অন্যের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর ওই সময় ক্রেতা এই কিতাবের প্রকাশ-প্রচার এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করার সত্ত্বাধিকারী হয়ে যায়।যে অধিকার পূর্বে লেখকের ছিল,সেই অধিকার চলে আসে ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে। 
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1197

https://ifatwa.info/48167/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
কেহ যদি অন্যের টিশার্ট ডিজাইন দেখে দেখে ডিজাইন করা,বা  তাহা হতে কিছু অংশ কাটসাট করে নিজের ডিজাইনে নিয়ে আসাটা জায়েয হবে না।এবং এভাবে ইনকাম করাটাও জায়েয হবে না।
অর্ধেক ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি. চুরি করলে অর্ধেক ইনকাম হারাম।পূর্ণ ডিজাইন এভাবে ধোকাবাজি, চুরি করলে পূর্ণ ডিজাইন হারাম।

তবে যদি সেই ডিজাইন যে মূলত করেছে,তার থেকে বা কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমতি নিয়ে সে তার ডিজাইন দেখে দেখে এসব করে ইনকাম করে,তাহলে তার একাজ ও ইনকাম জায়েজ হবে।

https://ifatwa.info/52640/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
অন্যায় ভাবে কোনো কিছু ব্যবহার করা শরীয়তে জায়েজ নেই।
কাহারো অনুমতি ছাড়া তার ডিজাইন এভাবে ব্যবহার করে ইনকাম করা তাকে ধোকা দেয়ার শামিল, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
  
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়। (বায়হাক্বী- শু‘আবুল ঈমান, দারাকুত্বনী- মুজতাবা)
সহীহ : আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২,মিশকাতুল মাসাবিহ ২৯৪৬।)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মালিকের অনুমতি ছাড়া তার ডিজাইন এভাবে ব্যবহার করে ইনকাম করা, তাকে ধোকা দেয়ার শামিল, বিধায় তাহা জায়েজ নেই।

এক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনি যদি টাকা দিতে চান, এক্ষেত্রে মূল মালিক কে টাকা দিতে হবে।
অথবা মূল মালিকের কাছ হতে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।  অনেক চেষ্টার পরেও মূল মালিক কে খুঁজে না পেলে বা তার সাথে যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা না হলে সেক্ষেত্রে আপনি টাকাটি দান সদকাহ করতে পারেন।

এক্ষেত্রে মালিককে টাকা দিলে অথবা মালিক পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে দান করলে হক আদায় হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিবেন, আল্লাহ তায়ালা আপনাকে ক্ষমা করবেন,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...