আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
26 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
السَّلَامُ عَلَيْكُم وَرَحْمَةُ اللّٰهِ وَبَرَكَاتُهُ

১। আমার বাসা থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুরত্ব গুগল ম্যাপ অনুযায়ী ৪৫.৫ কিলোমিটার। এক্ষেত্রে আমার জন্য কি মাহরাম ছাড়া সফর করা জায়েজ আছে?

২। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহশিক্ষামুক্ত আলহামদুলিল্লাহ। আর প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়েদের জন্য আলাদা বাস দেয়া হয়। কিন্তু আমার বাসা দূরে হওয়ায় বাসে উঠতে ১ ঘন্টার রাস্তা আমাকে নিজে যেতে হবে প্রাইভেট সিএনজিতে একা। সিএনজিতে শুধু ড্রাইভার আর আমি থাকবো। এরপর বাকি পথ মেয়েদের বাসে। উল্লেখ্য, আমার সাথে যাওয়ার মতো কোনো মাহরাম নেই।

আর ২য় পদ্ধতি হচ্ছে, বাসা থেকে ২০.১ কিলোমিটার দূরে প্রতিষ্ঠানের মহিলা হোস্টেলে থাকতে হবে। সেখান থেকে সরাসরি মেয়েদের বাসটাতে উঠা যাবে। ঐ এক গাড়িতেই যাওয়া আসা করা যাবে।
এখন, আমার পর্দার জন্য কোন পদ্ধতিতে যাওয়া আসা করা বেশি উত্তম হবে? অর্ধেক রাস্তা প্রাইভেট সিএনজিতে গিয়ে বাসা থেকে যাতায়াত করা? নাকি হোস্টেলে থেকে মেয়েদের বাসেই যাতায়াত করা? একটু পরামর্শ দেন উস্তাদ, আমি আমার পর্দার ব্যাপারে খুবই ভয়ে আছি। এজন্য সহশিক্ষায় ভর্তি হইনি। বাসার আশেপাশে কোনো সহশিক্ষামুক্ত প্রতিষ্ঠানও নেই। আমি ঘরে থাকতে চাচ্ছি খুব করে। কিন্তু পরিবার কোনোভাবেই মানছে না। তাই বাধ্য হয়ে দূরের ঐ সহশিক্ষামুক্ত প্রতিষ্ঠান নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। সহশিক্ষায় পড়া সম্ভব না আমার পক্ষে কোনোভাবে। আমার জন্য দুয়া করবেন উস্তাদ, যেন ঘরেই থাকতে পারি ইন শা আল্লাহ।

جزاك الله خيرا في الدنيا والأخرة

1 Answer

0 votes
by (584,400 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো  মহিলাদের জন্য তার মাহরাম পুরুষ ব্যতীত ৪৮মাইল বা তদাপেক্ষা বেশী দুরুত্বের সফর করা জায়েয নয়। এর কম হলে জায়েয আছে । তবে সর্বাবস্থায় মাহরাম পুরুষের সাথে সফর করাই উত্তম। আর গাইরে মাহরামদের সাথে সফর করা মারাত্তক গোনাহ।হাদীসে মাহরাম ব্যতীত মহিলাদের সফরের ব্যপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। -বুখারী শরীফ হা: নং১০৮৬,ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪২।
,
সফর কমপক্ষে ৭৮ কিলোমিটারের চেয়ে কম হলে মহিলাগণ পর্দার সাথে একা একা সফর করতে পারবে। ৭৮ কিলোমিটারের চেয়ে বেশি হলে স্বামী বা মাহরাম ছাড়া কারো সাথে বা একা সফর করা জায়েজ নয়। {আহসানুল ফাতওয়া-৪/৯৫}
,
عن أبي سعيد الخدري قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم لا يحل لإمرأة تؤمن بالله واليوم الآخر أن تسافر سفرا يكون ثلاثة أيام فصاعدا إلا ومعها أبوها أو ابنها أو زوجها أو أخوها أو ذو محرم منها

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তাআলা এবং কিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে
এমন কোন মহিলার জন্য জায়েজ নয়, তিন দিন বা এর চেয়ে অধিক দিনের সফর করে অথচ তার সাথে তার পিতা, তার ছেলে, বা তার স্বামী বা তার ভাই কিংবা কোন মাহরাম না থাকে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪২৩}
,
আরো জানুনঃ
.
কোনো নারীর জন্য দুরবর্তি সফর (৭৮ কিলোমিটার)  মাহরাম পুরুষ ছাড়া সফর করা জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

وَعَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ وَلَا تُسَافِرَنَّ امْرَأَةٌ إِلَّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ. فَقَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ اكْتُتِبْتُ فِىْ غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا وَخَرَجَتِ امْرَأَتِىْ حَاجَّةً قَالَ: اِذْهَبْ فَاحْجُجْ مَعَ اِمْرَأَتِكَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

 [‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পুরুষ যেন কক্ষনো কোন স্ত্রীলোকের সাথে এক জায়গায় নির্জনে একত্র না হয়, আর কোন স্ত্রীলোক যেন কক্ষনো আপন কোন মাহরাম ব্যতীত একাকিনী সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! অমুক অমুক যুদ্ধে আমার নাম লেখানো হয়েছে। আর আমার স্ত্রী একাকিনী হজের উদ্দেশে বের হয়েছে। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যাও তুমি তোমার স্ত্রীর সাথে হজ্জ/হজ করো।

সহীহ : বুখারী ৩০০৬, মুসলিম ১৩৪১, আহমাদ ১৯৩৪, সহীহ ইবনু খুযায়মাহ্ ২৫২৯, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১০১৩৪, সহীহ ইবনু হিব্বান ৩৭৫৭।

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ الثَّقَفِيُّ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ مُسْلِمَةٍ تُسَافِرُ مَسِيرَةَ لَيْلَةٍ، إِلَّا وَمَعَهَا رَجُلٌ ذُو حُرْمَةٍ مِنْهَا

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিম নারীর জন্য সাথে মাহরাম (যার সাথে বিবাহ হারাম এমন আত্মীয়) ছাড়া এক রাতের রাস্তা সফর করা বৈধ নয়।
(আবু দাউদ ১৭২৩)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য মাহরাম ছাড়া উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করা জায়েজ আছে।

তবে রাস্তা নিরাপদ হতে হবে,দিনের বেলা সফর হতে হবে।

(০২)
ফিতনার আশংকা না থাকলে প্রয়োজনে এটির অনুমতি রয়েছে। তবে শর্ত হলো সিএনজির পর্দা লাগানো যাবেনা,ফিতনার আশংকা থাকা যাবেনা।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে রাস্তা যদি নিরাপদ হয়, এবং উক্ত ড্রাইভার এর সাথে এভাবে একাকী যাওয়াতে যদি বিন্দুমাত্র ফিতনার কোন আশঙ্কা না থাকে, সেক্ষেত্রে আপনি বাসা থেকে এভাবে যাতায়াত করতে পারবেন।

তবে কোনভাবেই সন্ধ্যায় যাতায়াত করবেন না এবং এবং এমন ভোরেও যাতায়াত করবেন না, যখন রাস্তায় মানুষ থাকে না।

যদি ফিতনার আশঙ্কা থাকে অথবা বেশি ভোরে যাতায়াত করতে হয় বা সন্ধ্যায় যাতায়াত ফিরতে হয়, এমত অবস্থায় মহিলা হোস্টেলে থাকা নিরাপদ হলে আপনি মহিলা হোস্টেলেই থাকবেন, এটিই এক্ষেত্রে অধিক নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...