আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
90 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম,,
প্রশ্ন : ১ | স্বামী ব্যতীত যদি স্বামীর বাবা-মা অর্থাৎ শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে  স্বামীর স্থায়ী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই সেক্ষেত্রে  আমি কি মুকিম হবো নাকি মুসাফির? সেখানে অবস্থানের   নিয়ত ১৫ দিনের কম।
সফরের দূরত্ব ঢাকা থেকে ফেনী  ।
প্রশ্ন : ২ | আমি যদি আমার নিজ স্থায়ী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই সেক্ষেত্রে কি আমি মুকিম হব নাকি মুসাফির?  সেখানে  অবস্থানের নিয়ত ১৫ দিনের কম,  এবং সফরের দূরত্ব ঢাকা থেকে  চট্টগ্রাম ।
প্রশ্ন :৩।নিজের স্থায়ী বাবার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার পর  সেখান থেকে আমি যদি ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের একটি পথ সফর করি সেক্ষেত্রে  আমি কি মুকিম  হিসেবে সলাত  আদায় করব   নাকি মুসাফির?

1 Answer

0 votes
by (592,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার স্থায়ী বাসা (ওয়াতনে আসলী) কোনটা?

আপনি যদি স্থায়ী ভাবে স্বামীর বাসাতেই স্বামী ও সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত করেন,নিজের বাবার বাসায় সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত না করেন, অর্থাৎ স্থায়ীভাবে স্বামীর বাসাতেই থাকার নিয়ত করেন, সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর স্থায়ী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে সেখানে আপনি একদিন থাকলেও আপনি মুকিম,আপনি সেখানে পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি আপনি স্বামীর বাসাকে স্থায়ী বাসা হিসেবে গণ্য না করেন বরং নিজের বাবার বাসাকেই স্থায়ী বাসা হিসেবে গণ্য করেন,নিজের বাবার বাসাতেই থাকেন আর নিজের বাবার বাসাতেই সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত করেন, সেক্ষেত্রে আপনার স্থায়ী বাসা বাবার বাসা।

স্বামীর বাসা আপনার স্থায়ী বাসা (ওয়াতনে আসলি)

সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর স্থায়ী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে সেখানে আপনি ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত করলে আপনি মুসাফির হিসেবে কসর নামাজ আদায় করবেন।

فى رد المحتار- (الوطن الاصلى يبطل بمثله) ( قوله إذا لم يبق له بالأول أهل ) أي وإن بقي له فيه عقار قال في النهر : ولو نقل أهله ومتاعه وله دور في البلد لا تبقى وطنا له وقيل تبقى كذا في المحيط وغيره (رد المحتار-كتاب الصلاة، باب صلاة المسافر، مطلب في الوطن الأصلي ووطن الإقامة-2/614)
সারমর্মঃ ওয়াতনে আসলিতে যদি স্থায়ী আর না থাকার নিয়ত করে,এবং  পরিবার সামানা যদি সেখানে আর না থাকে,তাহলে সেটা আর ওয়াতনে আসলি থাকবেনা। 
অন্যথায় সেটা ওয়াতনে আসলি হিসেবেই থাকবে।   

আরো জানুনঃ

(০২)
আপনি যদি স্থায়ী ভাবে নিজ গ্রামের বাসাতেই স্বামী ও সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত করেন,নিজের স্বামীর বাসায় সন্তানাদি নিয়ে আজীবন থাকার নিয়ত না করেন, অর্থাৎ স্থায়ীভাবে নিজ গ্রামের বাসাতেই থাকার নিয়ত করেন, সেক্ষেত্রে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে চট্রগামের নিজ গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলে 
সেখানে আপনি একদিন থাকলেও আপনি মুকিম,আপনি সেখানে পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন।

(০৩)
মানুষের স্থায়ী বাসা হয় একটা।
যেখানে সে তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে আজীবনের জন্য থাকার নিয়ত করে।

সুতরাং আপনার স্থায়ী বাসা কোনটা?

আপনার বাবার গ্রামের বাসা আপনারা স্থায়ী বাসা না হয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে সেই গ্রামের বাসায় আপনি কোথা থেকে সফর করে এসেছেন?

কয়দিনের জন্য এসেছেন?

সব কিছু কমেন্ট বক্সে স্পষ্ট করলে জবাব প্রদানে সুবিধা হতো। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
edited
আসসালামু আলাইকুম। আমি ঢাকায় হাসবেন্ডের নিজস্ব ফ্ল্যাট এ থাকি।এটাও উনাদের স্থায়ী।  এবং গ্রামের বাড়িতেও নিজস্ব বাড়ি আছে। সেক্ষেত্রে ঢাকা থেকে আমি যদি হাসবেন্ড এর স্থায়ী গ্রামের বাড়িতে ১৫ দিনের কম সফর করি। সেক্ষেত্রে কি মুকিম হবো নাকি মুসাফির??  (বি:দ্র) ঢাকার বাসাতেই স্থায়ী ভাবে থাকার নিয়ত আছে।  

২. আমার বাবার ঢাকাতে  স্থায়ী নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে এবং এখানে মা- বাবা থাকেন। এবং গ্রামের বাড়িতেও নিজেদের ১ টি বাড়ি আছে। এক্ষেত্রে আমি যদি ঢাকা থেকে বাবার স্থায়ী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই, তখন আমি মুসাফির হব নাকি মুকিম?
by (592,140 points)
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনারা ফেনীতে গ্রামের বাসায় ১৫ দিনের কম এর জন্য বেড়াতে গেলে সেক্ষেত্রে সেখানে আপনারা মুসাফির থাকবেন আপনারা কসরের নামাজ আদায় করবেন।

(০২)
আপনার বাবার সেই গ্রামের বাসায় তো আপনার স্থায়ী ভাবে থাকার নিয়ত নেই।

সুতরাং সেটি আপনাদের ঢাকার বাসা হতে যদি ৭৮+ কিলোমিটার দূরত্বে হয়,সেক্ষেত্রে সেই গ্রামের বাসায় ১৫ দিনের কম এর জন্য বেড়াতে গেলে সেক্ষেত্রে সেখানে আপনি মুসাফির থাকবেন আপনি কসরের নামাজ আদায় করবেন।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...