আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
25 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (8 points)
সম্মানিত উলামায়ে কেরামের খেদমতে বিনীত নিবেদন,

আমরা জানি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে দুরুদ পড়া সুন্নত ও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল।

আমার জানার বিষয় হলো, নবীজির বিভিন্ন উপাধি বা সম্মানসূচক শব্দ যেমন রাসূলুল্লাহ, হাবীবুল্লাহ, নবীজী, আল্লাহর রাসূল, বিশ্বনবী ইত্যাদি উচ্চারণ করলে বা শুনলেও কি আমাদের জন্য দুরুদ শরীফ পড়া আবশ্যক হয়ে যায়?

আপনাদের মূল্যবান দিকনির্দেশনা পেলে কৃতজ্ঞ থাকব।আ

ল্লাহ আপনাদের জ্ঞান ও কর্মে বরকত দান করুন।
আমিন।

1 Answer

0 votes
ago by (63,900 points)
edited ago by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/8206/   নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

শরীয়তের বিধান হলো মহানবী (সা.)-এর নাম বললে ও শুনলে তাঁর প্রতি দরুদ পড়া ওয়াজিব। তবে বারবার তাঁর নাম বললে ও শুনলে প্রথমবার দরুদ পড়া ওয়াজিবঅন্যান্য বার মুস্তাহাব। মুখে উচ্চারণ করলে যেমন দরুদ ও সালাম ওয়াজিবতেমনি কলমে লিখলেও ওয়াজিব। জীবনে একবার দরুদ পড়া ফরজ।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ সালাত ও সালাম পেশ করো।’ (সুরা : আহজাবআয়াত : ৫৬)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا رِبْعِيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكِبَرَ فَلَمْ يُدْخِلاَهُ الْجَنَّةَ " . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَأَظُنُّهُ قَالَ أَوْ أَحَدُهُمَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَنَسٍ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَرِبْعِيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ هُوَ أَخُو إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ وَهُوَ ثِقَةٌ وَهُوَ ابْنُ عُلَيَّةَ . وَيُرْوَى عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالَ إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَرَّةً فِي الْمَجْلِسِ أَجْزَأَ عَنْهُ مَا كَانَ فِي ذَلِكَ الْمَجْلِسِ .

আহামাদ ইবন ইবরাহীম দাওরাকী (রহঃ) ...... আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোকযার কাছে আমার উল্লেখ করা হল অথচ আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোকযার জীবনে রমযান মাস এল কিন্তু তাকে ক্ষমাপ্রাপ্ত না করেই তা অতিবাহিত হয়ে গেল। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোকযে তার পিতামাতাকে (বা তাদের একজনকে) বৃদ্ধাবস্থায় পেল কিন্তু তাদের খেদমত করার মাধ্যমে সে জান্নাতী হতে পারলনা। আবদুর রহমান বলেনঃ আমি মনে করি তিনি বলেছেন তাদের (পিতামাতার) একজনকে পেল।

এই বিষয়ে জাবির ও আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাদীসটি হাসান এই সূত্রে গারীব। রিবই ইবন ইবরাহীম (রহঃ) ইসমাইল ইবন ইবরাহীম ইবন উলাইয়্যা-এর ভাই। ইনি নির্ভরযোগ্য। কোন কোন আলিম থেকে বর্ণিত আছে যেকোন ব্যক্তি যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর মজলিসে একবার দ্রুদ পাঠ করেতবে ঐ বৈঠকের জন্য তা-ই যথেষ্ট। (তিরমিজি ৩৫৪৫,মিশকাত ৯২৭তা'লীকুর রাগীব ২/২৮৩)

حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَزِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْبَخِيلُ الَّذِي مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ "

ইয়াহইয়া ইবন মূসা ও যিয়াদ ইবন আয়্যূব (রহঃ) ..... আলী ইবন আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন সেই ব্যক্তিযার নিকট আমার উল্লেখ করা হল কিন্তু সে আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। (মিশকাত ৯৩৩সালাতের ফাযিলাত ১৪/৩১-৩৯তা'লীকুর রাগীব ২/২৪৮তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৪৬ [আল মাদানী প্রকাশনী]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

একই মজলিসে একাধিকবার রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নাম বলা হলে ১ম বার দরুদ শরীফ পাঠ ওয়াজিব। ১ম বার তৎক্ষনাৎ দরূদ না পড়লে গুনাহ হবে। এর পরবর্তীতে  তৎক্ষনাৎ দুরূদ না পড়লে গুনাহ  হবেনা। যদি দরুদ নাও পড়ে,তাহলেও গুনাহ হবেনা। কারন এক্ষেত্রে দরুদ শরীফ পাঠ মুস্তাহাব। 

আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর নাম যখন বলা হয়ে থাকেতখনই মূলত দরুদ পড়ার কথাটি এসেছেযেমনমুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কিন্তু সালফেস সালেহিনের আমল দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছেযখন তাঁরা নবী (সা.) বলতেনতখনো সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেনযেমননবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

কারণএই দরুদ পড়লেই তো আমার সওয়াব এবং কোনো ক্ষতি নেই। সুতরাং কেন আমি দরুদ পড়তে কার্পণ্য করব বা দূরে থাকব! এ জন্যই সালফেস সালেহিন মূলত রাসূল (সা.)-এর লকব বা অন্য নামগুলো এলেওঅর্থাৎ মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া অন্য নামগুলো এলেও তাঁর নামের ওপর সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামএই দরুদ পড়তেন। সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে নবী সা. এর উক্ত উপনামগুলো উচ্চারণ করলেও দরুদ পাঠ করা উচিত এবং এটিই অধিকতর শ্রেয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...