ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
জবাব,
https://ifatwa.info/8206/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
শরীয়তের বিধান হলো মহানবী (সা.)-এর নাম বললে ও শুনলে তাঁর প্রতি দরুদ পড়া ওয়াজিব। তবে বারবার তাঁর নাম বললে ও শুনলে প্রথমবার দরুদ পড়া ওয়াজিব, অন্যান্য বার মুস্তাহাব। মুখে উচ্চারণ করলে যেমন দরুদ ও সালাম ওয়াজিব, তেমনি কলমে লিখলেও ওয়াজিব। জীবনে একবার দরুদ পড়া ফরজ।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা! তোমরাও তাঁর প্রতি যথাযথ সালাত ও সালাম পেশ করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৬)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا رِبْعِيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " رَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ دَخَلَ عَلَيْهِ رَمَضَانُ ثُمَّ انْسَلَخَ قَبْلَ أَنْ يُغْفَرَ لَهُ وَرَغِمَ أَنْفُ رَجُلٍ أَدْرَكَ عِنْدَهُ أَبَوَاهُ الْكِبَرَ فَلَمْ يُدْخِلاَهُ الْجَنَّةَ " . قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ وَأَظُنُّهُ قَالَ أَوْ أَحَدُهُمَا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ جَابِرٍ وَأَنَسٍ وَهَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ . وَرِبْعِيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ هُوَ أَخُو إِسْمَاعِيلَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ وَهُوَ ثِقَةٌ وَهُوَ ابْنُ عُلَيَّةَ . وَيُرْوَى عَنْ بَعْضِ أَهْلِ الْعِلْمِ قَالَ إِذَا صَلَّى الرَّجُلُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَرَّةً فِي الْمَجْلِسِ أَجْزَأَ عَنْهُ مَا كَانَ فِي ذَلِكَ الْمَجْلِسِ .
আহামাদ ইবন ইবরাহীম দাওরাকী (রহঃ) ...... আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার কাছে আমার উল্লেখ করা হল অথচ আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যার জীবনে রমযান মাস এল কিন্তু তাকে ক্ষমাপ্রাপ্ত না করেই তা অতিবাহিত হয়ে গেল। ওই ব্যক্তির নাক ধূলিমলিন হোক, যে তার পিতামাতাকে (বা তাদের একজনকে) বৃদ্ধাবস্থায় পেল কিন্তু তাদের খেদমত করার মাধ্যমে সে জান্নাতী হতে পারলনা। আবদুর রহমান বলেনঃ আমি মনে করি তিনি বলেছেন তাদের (পিতামাতার) একজনকে পেল।
এই বিষয়ে জাবির ও আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। হাদীসটি হাসান এই সূত্রে গারীব। রিবই ইবন ইবরাহীম (রহঃ) ইসমাইল ইবন ইবরাহীম ইবন উলাইয়্যা-এর ভাই। ইনি নির্ভরযোগ্য। কোন কোন আলিম থেকে বর্ণিত আছে যে, কোন ব্যক্তি যদি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর মজলিসে একবার দ্রুদ পাঠ করে, তবে ঐ বৈঠকের জন্য তা-ই যথেষ্ট। (তিরমিজি ৩৫৪৫,মিশকাত ৯২৭, তা'লীকুর রাগীব ২/২৮৩)
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، وَزِيَادُ بْنُ أَيُّوبَ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ غَزِيَّةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ حُسَيْنِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " الْبَخِيلُ الَّذِي مَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَىَّ "
ইয়াহইয়া ইবন মূসা ও যিয়াদ ইবন আয়্যূব (রহঃ) ..... আলী ইবন আবূ তালিব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন সেই ব্যক্তি, যার নিকট আমার উল্লেখ করা হল কিন্তু সে আমার উপর দরুদ পাঠ করল না। (মিশকাত ৯৩৩, সালাতের ফাযিলাত ১৪/৩১-৩৯, তা'লীকুর রাগীব ২/২৪৮, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫৪৬ [আল মাদানী প্রকাশনী]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
একই মজলিসে একাধিকবার রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নাম বলা হলে ১ম বার দরুদ শরীফ পাঠ ওয়াজিব। ১ম বার তৎক্ষনাৎ দরূদ না পড়লে গুনাহ হবে। এর পরবর্তীতে তৎক্ষনাৎ দুরূদ না পড়লে গুনাহ হবেনা। যদি দরুদ নাও পড়ে,তাহলেও গুনাহ হবেনা। কারন এক্ষেত্রে দরুদ শরীফ পাঠ মুস্তাহাব।
আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর নাম যখন বলা হয়ে থাকে, তখনই মূলত দরুদ পড়ার কথাটি এসেছে, যেমন—মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। কিন্তু সালফেস সালেহিনের আমল দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে, যখন তাঁরা নবী (সা.) বলতেন, তখনো সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন, যেমন—নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
কারণ, এই দরুদ পড়লেই তো আমার সওয়াব এবং কোনো ক্ষতি নেই। সুতরাং কেন আমি দরুদ পড়তে কার্পণ্য করব বা দূরে থাকব! এ জন্যই সালফেস সালেহিন মূলত রাসূল (সা.)-এর লকব বা অন্য নামগুলো এলেও, অর্থাৎ মুহাম্মদ (সা.) ছাড়া অন্য নামগুলো এলেও তাঁর নামের ওপর সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম—এই দরুদ পড়তেন। সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে নবী সা. এর উক্ত উপনামগুলো উচ্চারণ করলেও দরুদ পাঠ করা উচিত এবং এটিই অধিকতর শ্রেয়।