আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
21 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। আমার স্বামী সরকারি চাকরি করেন। তার বেতনের পাশাপাশি কিছু হারাম উপার্জন ও রয়েছে। অটোমেটিক তার ফান্ডে টাকা জমা হয়। চাকরির শুরুতে ওইসব টাকা ব্যবহার না করলেও এখন তিনি নিয়মিত পরিবারের খরচের জন্য ঐ টাকা ব্যবহার করেন। এমন না যে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। তিনি চেষ্টা করলেই এগুলো এড়াতে পারেন কিন্তু করেন না।তাছাড়া তার মা বাবা সবসময় বলতে থাকেন তিন বছর ধরে চাকরি করে বাড়ি গাড়ি কিছু করতে পারলি না এখনো, ঐ টাকা নিলে কিছু হবে না,সবাই তো নেয়,এইটা তোর প্রাপ্য। এইসব কথা শুনলে আমার খুব রাগ হয়। আমি স্বামীকে অনেক বুঝায় এগুলো নিওনা, বেতন দিয়ে যেভাবে চলে ওইভাবে চালাও। সে আগে মানত যে এগুলা গুনাহ হচ্ছে। কিন্তু আশেপাশের মানুষ যখন সবসময় এই ব্যাপারটা জায়েজ বলতেই থাকে, কতক্ষন মানুষ ঈমান ধরে রাখতে পারে?? এইসব বিষয় নিয়ে বর্তমানে আমার স্বামীর সাথে অনেক ঝামেলা হচ্ছে। আমি অনেকবার তাকে বলেছি, হারাম টাকায় আমাকে খাওয়া পরা দিবেনা। কিন্তু সবকিছু সে এতটাই মিক্সড করে ফেলছে যে কখন হারাম টাকা ব্যবহার করছে,কখন হালাল টাকা করছে আমি জানতে পারিনা। এমতাবস্থায় আমার করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (63,450 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

জবাব,

https://ifatwa.info/62544/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি স্বামী প্রয়োজনীয় ভরণ পোষণ আদায় না করে, তাহলে স্বামীকে না জানিয়ে তার কাছে থেকে প্রয়োজনীয় খরচ নেয়া জায়েজ আছে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: دَخَلَتْ هِنْدٌ بِنْتُ عُتْبَةَ امْرَأَةُ أَبِي سُفْيَانَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللهِ، إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيحٌ، لَا يُعْطِينِي مِنَ النَّفَقَةِ مَا يَكْفِينِي وَيَكْفِي بَنِيَّ إِلَّا مَا أَخَذْتُ مِنْ مَالِهِ بِغَيْرِ عِلْمِهِ، فَهَلْ عَلَيَّ فِي ذَلِكَ مِنْ جُنَاحٍ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «خُذِي مِنْ مَالِهِ بِالْمَعْرُوفِ مَا يَكْفِيكِ وَيَكْفِي بَنِيكِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিন্দা বিনত উতবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। তিনি আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচাদি প্রদান করেন না। তবে আমি তার অজ্ঞাতেই তার সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় খরচাদি গ্রহণ করে থাকি। এতে কি আমার কোন দোষ (পাপ) হবে? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার সম্পদ থেকে তোমার ও তোমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হয় এমন সঙ্গত পরিমাণ নিতে পার। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৭১৪, ইফাবা-৪৩২৮]

عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا: قَالَتْ هِنْدٌ أُمُّ مُعَاوِيَةَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ شَحِيحٌ، فَهَلْ عَلَيَّ جُنَاحٌ أَنْ آخُذَ مِنْ مَالِهِ سِرًّا؟ قَالَ: «خُذِي أَنْتِ وَبَنُوكِ مَا يَكْفِيكِ بِالْمَعْرُوفِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুআবিয়া (রাঃ) এর মা হিন্দ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) একজন কৃপন ব্যাক্তি। এমতাবস্থায় আমি যদি তার মাল থেকে গোপনে কিছু গ্রহন করি, তাতে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেন, তুমি তোমার ও সন্তানদের প্রয়োজনানুসারে যথাযথভাবে গ্রহন করতে পার। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২২১১,ইফাবা-২০৬৯]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত পরিবারের নাবালেগ ছেলে সন্তান ও অবিবাহিতা মেয়ে সন্তানদের সমস্যা নেই। তারা প্রয়োজন মাফিক সেই টাকা খরচ করতে পারবে। তবে প্রয়োজন অতিরিক্ত খরচ করবেনা। তাদের উপর কোনো কাফফারাও নেই।

এক্ষেত্রে স্ত্রীর জন্য মাসয়ালাঃ

স্বামীর উপার্জন ছাড়া নিজস্ব হালাল সম্পদ দিয়ে চলা যদি স্ত্রীর পক্ষে সম্ভব হয়, তাহলে স্বামীর হারাম টাকা নেয়া বৈধ হবে না।

আর যদি স্ত্রীর আলাদা কোন উপার্জন না থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় অর্থ নেয়া জায়েজ হবে। সেই সাথে স্বামীকে সর্বদা হারাম ছেড়ে দিয়ে হালাল উপার্জন করতে তাকিদ দিতে থাকবে ও হেকমতের সাথে বুঝাতে হবে। জেনে রাখা উচিত যে, আপনি স্বামী উক্ত হারাম টাকা ব্যবহারের কারণে গুনাহগার হচ্ছে, সেই সাথে যারা তাকে হারামে লিপ্ত হতে উদ্বুদ্ধ করছে তারাও গুনাহগার হবে। 

বিস্তারিত জানুনঃ- https://ifatwa.info/52024/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...