আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
212 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ মুহতারাম উস্তায।আল্লাহ তা'য়ালার গুনবাচক বিভিন্ন নামের কথা আমরা জানি।পাশাপাশি ৯৯ টি নাম প্রসিদ্ধ রয়েছে।আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই নামগুলোর বাইরেও কি আল্লাহ তা'য়ালার নান রয়েছে?যেমন হাদিসের একটা দোয়ায় রয়েছে 'হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী!'।এখন আমরা কি আল্লাহকে 'ইয়া মুকাল্লিবাল ক্বলব' বলে ডাকতে পারবো?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


মহান আল্লাহ সুবহানাহূ ওয়া তা‘আলার অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,
وَلِلهِ الْأَسْمَآءُ الْحُسْنٰى فَادْعُوْهُ بِهَا وَذَرُوا الَّذِيْنَ يُلْحِدُوْنَ فِى اسْمَائِه

অর্থাৎ- ‘‘মহান আল্লাহ সুব্হানাহূ ওয়াতা‘আলার অনেক সুন্দর সুন্দর নাম রয়েছে। সুতরাং তোমরা সেগুলোর মাধ্যমে আল্লাহকে ডাকো আর যারা আল্লাহর নামের বিকৃতি ঘটায় তাদেরকে বর্জন করো।’’ (সূরা আল আ‘রাফ ৭ : ১৮০)

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ: إِنَّ لِلّٰهِ تَعَالٰى تِسْعَةً وَتِسْعِينَ اسْمًا مِائَةً إِلَّا وَاحِدًا مَنْ أَحْصَاهَا دَخَلَ الْجَنَّةَ. وَفِىْ رِوَايَةٍ: وَهُوَ وِتْرٌ يُحِبُّ الْوِتْرَ. (مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ)

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলার নিরানব্বই-এক কম একশ’টি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামগুলো মুখস্থ করবে সে জান্নাতে যাবে। অপর বর্ণনায় আছে, তিনি বিজোড়, (তাই) বিজোড়কে ভালবাসেন। 
( সহীহ : বুখারী ২৭৩৬, ৭৩৯২, মুসলিম ২৬৭৭, তিরমিযী ৩৫০৬, ইবনু মাজাহ ৩৮৬০, আহমাদ ৭৬২৩, আদ্ দা‘ওয়াতুল কাবীর ২৯২, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ১৯৮১৬, ইবনু হিব্বান ৮১৭, সহীহ আল জামি‘ ২১৬৬।)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
আল্লাহ তায়ালার প্রসিদ্ধ নাম ৯৯ টি।
ইহা ছাড়াও আল্লাহ তায়ালার অনেক নাম রয়েছে।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত শব্দে দোয়া করা হাদীস থেকেই প্রমানীত, সুতরাং এই শব্দে দোয়া করতে কোনো সমস্যা নেই।         

তিরমিজি শরীফের ২১৪০ নং হাদীসে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ أَنْ يَقُولَ " يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ " . فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ آمَنَّا بِكَ وَبِمَا جِئْتَ بِهِ فَهَلْ تَخَافُ عَلَيْنَا قَالَ " نَعَمْ إِنَّ الْقُلُوبَ بَيْنَ أَصْبُعَيْنِ مِنْ أَصَابِعِ اللَّهِ يُقَلِّبُهَا كَيْفَ يَشَاءُ " .

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দু’আ অধিক পাঠ করতেনঃ  হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত (দৃঢ়) রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। আমরা ঈমান এনেছি আপনার উপর এবং আপনি যা নিয়ে এসেছেন তার উপর। আপনি আমাদের ব্যাপারে কি কোনরকম আশংকা করেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, কেননা, আল্লাহ তা'আলার আঙ্গুলসমূহের মধ্যকার দুটি আঙ্গুলের মাঝে সমস্ত অন্তরই অবস্থিত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা তা পরিবর্তন করেন।

সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৮৩৪)।
,
তিরমিজি শরীফের ৩৫২২ নং হাদীসে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَبُو مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ مُعَاذٍ، عَنْ أَبِي كَعْبٍ، صَاحِبِ الْحَرِيرِ حَدَّثَنِي شَهْرُ بْنُ حَوْشَبٍ، قَالَ قُلْتُ لأُمِّ سَلَمَةَ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ مَا كَانَ أَكْثَرُ دُعَاءِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ عِنْدَكِ قَالَتْ كَانَ أَكْثَرُ دُعَائِهِ " يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ " . قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا لأَكْثَرِ دُعَائِكَ يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ قَالَ " يَا أُمَّ سَلَمَةَ إِنَّهُ لَيْسَ آدَمِيٌّ إِلاَّ وَقَلْبُهُ بَيْنَ أُصْبُعَيْنِ مِنْ أَصَابِعِ اللَّهِ فَمَنْ شَاءَ أَقَامَ وَمَنْ شَاءَ أَزَاغَ " . فَتَلاَ مُعَاذٌ : ( ربَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا )

আবূ মূসা আনসারী (রহঃ) ...... শাহর ইবন হাওশাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমি উম্মু সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা কে বললামঃ হে উম্মুল মুমিনীন! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আপনার কাছে অবস্থান করতেন তখন অধিকাংশ সময় তিনি কি দুয়া করতেন? তিনি বললেনঃ তাঁর অধিকাংশ দু’আ ছিলঃ

يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ

(উচ্চারণঃ ইয়া মুকাল্লিবাল কুলূব ছাব্বিত কালবী আলা দীনিকা)

অর্থঃ হে অন্তর পরিবর্তনকারি! আমার অন্তর তুমি তোমার দীনে সুদৃঢ় রাখ।

তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি অধিকাংশ সময় এই দু’আ কেন করেন যে, ইয়া মুকাল্লিবাল কুলূব ছাব্বিত কালবী আলা দীনিকা? তিনি বললেনঃ হে উম্মু সালামা! এমন কোন মানুষ নেই যার অন্তর আল্লহ ত’আলার অঙ্গুলীসমূহের দুই অঙ্গুলের মাঝে নেই। যাকে তিনি ইচ্ছা তাকে তিনি দিনের উপর কায়েম রাখেন, যাকে ইচ্ছা তিনি সরিয়ে দেন।

রাবি মুআয (রহঃ) এই আয়াতটি তিলাওয়াত করলেনঃ

ربَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا

হে আমাদের রব্ব! হেদায়তের পর তুমি আমাদের অন্তর বক্র করে দিও না। (আল-ইমরান ৩ঃ 8)। 

সহীহ, যিলালুল জান্নাহ ২২৩, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ৩৫২২ [আল মাদানী প্রকাশনী]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...