আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
548 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
(১)
স্বামী স্ত্রী পরস্পর পরস্পরের সম্পদ বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা কি জায়েয হবে?

(২)
স্বামীর অনুমতি ব্যতীত স্বামীর সম্পদ থেকে নিজ পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের স্ত্রী কি কিছু করতে পারবে?
..................................................................................................................................................................

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর অনুমতি ব্যতীত একে অন্যর সম্পত্তি থেকে কোনো প্রকার খরচ করতে পারবে না।নিজ পিতা-মাতা বা আত্মীয়-স্বজনদেরকে সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবেন না।এমনকি আল্লাহর রাহে দান-খায়রাত পর্যন্ত ও করতে পারবেন না।

যেমন হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে, হযরত আবু উমামা বাহেলী রাঃ থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي أُمَامَةَ البَاهِلِيِّ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي خُطْبَتِهِ عَامَ حَجَّةِ الوَدَاعِ يَقُولُ: «لَا تُنْفِقُ امْرَأَةٌ شَيْئًامِنْ بَيْتِ زَوْجِهَا إِلَّا بِإِذْنِ زَوْجِهَا»، قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَلَا الطَّعَامُ، قَالَ: «ذَاكَ أَفْضَلُ أَمْوَالِنَا
তরজমাঃ- আমি বিদায় হজ্বের ভাষণে আল্লাহর রাসুল সাঃ কে বলতে শনেছি তিনি বলেনঃ-কোনো মহিলা তার স্বামীর অনুমিত ব্যতীত স্বামীর মাল থেকে খরছ করতে পারবে না।নবী কারীম সাঃ কে জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল সাঃ খাদ্যও কি(কাউকে দিতে) পারবে না? তদুত্তরে নবী কারীম সাঃ বললেনঃ এটাতো আমাদের উত্তম মাল( অর্থাৎঅনুত্তম মাল না পারলে উত্তম মাল কিভাবে খরচ করতে পারবে?)(তিরমিযি শরীফ-৬৮)
উক্ত হাদীস থেকে বুঝা যায় স্বামীর অনুমিত ব্যতীত কোনোপ্রকার লেনদেন বৈধ হবে না।

তবে স্ত্রী তার স্বামীর মাল থেকে ওয়াজিব হক্ব পরিমাণ সম্পদ গ্রহণ করতে পারবে।অর্থাৎ স্বামীর উপর স্ত্রীর খোরাকি এবং নিজ সন্তানাদির খোরাকি পরিমাণ শরীয়ত কর্তৃক যা ওয়াজিব ছিলো, সেটাকে স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে।

 ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ : ﺃﻥ ﻫﻨﺪ ﺑﻨﺖ ﻋﺘﺒﺔ ﻗﺎﻟﺖ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﻥ ﺃﺑﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﺭﺟﻞ ﺷﺤﻴﺢ ﻭﻟﻴﺲ ﻳﻌﻄﻴﻨﻲ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻨﻲ ﻭﻭﻟﺪﻱ ﺇﻻ ﻣﺎ ﺃﺧﺬﺕ ﻣﻨﻪ ﻭﻫﻮ ﻻ ﻳﻌﻠﻢ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺧﺬﻱ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻚ ﻭﻭﻟﺪﻙ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ .
"হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,হিনদ বিনতে উতবা রাঃ নবী কারীম সাঃ এর কাছে (নিজ স্বামীর অভিযোগ নিয়ে এসে) বললেনঃহে রাসুলুল্লাহ সাঃ আবু সুফিয়ান একজন কৃপন মানুষ, সে আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভরণ-পোষণ দেয় না,যদ্দরুন তার অজান্তে তার মাল থেকে আমি খরছ করে ফেলি, (এ বিষয়ে শরীয়তের দিকনির্দেশনা আমাদেরকে বলুন)রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেনঃ ন্যায়সঙ্গত ভাবে তোমার ও তোমার সন্তানদের যা প্রয়োজন তা (তার অজান্তে)নিয়ে নিতে পারো(এতে কোনো অসুবিধা হবে না)।" (সহীহ বুখারীঃ৫৩৬৪)আরও বর্ণিত আছে৫৭৮৬ নং হাদীসে। 

স্বামীর উপর স্ত্রী ও নাবালিগ সন্তানদের ভরণ-পোষণ ওয়াজিব,এই ওয়াজিব হক্ব আদায় না করা দরুণ রাসুলুল্লাহ সাঃ স্বামীর অজান্তে স্বামীর মাল থেকে স্ত্রীকে উসূলের অনুমতি দিয়েছেন।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর মৌখিক সম্মতি বা মৌন সম্মতি ব্যতীত একে অন্যর সম্পত্তিতে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।


(২)
স্বামীর অনুমতি ব্যতীত স্বামীর সম্পদ থেকে নিজ পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য আপনি কোনো প্রকার সাহায্য-সহযোগীতা করতে পারবেন না।

পিতা-মাতাকে লালন-পালনের দায়িত্ব কার?
এ সম্পর্কে "আল ফেকহু আলা মাযাহিবির আরবা'আ(৪/৫১৫)" কিতাবে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ঠেকতে হানাফির সিদ্বান্ত তুলে ধরা হয়েছে............
ﻓﺈﺫا ﻛﺎﻥ ﻷﺏ اﺑﻦ ﻭﺑﻨﺖ ﻣﻮﺳﺮﻳﻦ ﻗﺴﻤﺖ ﻧﻔﻘﺘﻪ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﺑﺎﻟﺴﻮﻳﺔ، ﻋﻠﻰ اﻟﻤﻌﺘﻤﺪ، ﻭﻛﺬا ﺇﺫا ﻛﺎﻥ ﻟﻪ اﺑﻨﺎﻥ ﻓﺈﻧﻬﺎ ﺗﻘﺴﻢ ﺑﺎﻟﺴﻮﻳﺔ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ، ﻭﻟﻮ ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺪﻫﻤﺎ ﺃﻛﺜﺮ ﻏﻨﻰ ﻣﻦ اﻵﺧﺮ، ﻧﻌﻢ ﺇﺫا ﻛﺎﻥ اﻟﺘﻔﺎﻭﺕ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ ﻛﺜﻴﺮاً ﻓﺈﻧﻪ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﺨﺺ اﻟﻐﻨﻲ ﺑﻘﺴﻂ ﺃﻭﻓﺮ ﻣﻦ اﻹﻧﻔﺎﻕ ﻋﻠﻰ ﻭاﻟﺪﻩ
যদি ছেলে-মেয়ে দু-জনই ধনী থাকেন তাহলে নির্ভর্যোগ্য মতানুসারে উভয়ের উপর পিতা-মাতাকে সমানভাবে লালন-পালন করা ওয়াজিব।ঠিক তেমনিভাবে দুইজন ছেলে হলে পিতা-মাতাকে সমানভাবে লালন-পালন করা তাদের উপর ওয়াজিব।কিন্তু যদি একজনের তুলনায় অন্যজন উল্লেখযোগ্য পরিমান বেশী সম্পদের অধিকারী থাকেন, তখন উচিৎ ধনীজন  উনার সম্পদ পরিমান পিতা-মাতাকে দেখভালের দায়িত্ব নিজ কাধে বহন করবেন।এটা উনার দায়িত্ব অযথা অন্যর কাধে বুঝা চাপিয়ে দিবেন না। যথাসাধ্য সেবা এবং আর্থিক সহায়তা সব এক্ষেত্রে সমান।অর্থাৎ ছেলে-মেয়ে উভয়ের উপর সমানভাবে ওয়াজিব।তবে যেহেতু মেয়ে স্বামীর অধীন হিসেবে স্বামীর সাথেই বসবাস করবে, ঘটনাক্রমে স্বামীর বাড়ী পিতার বাড়ী থেকে অনেক দূরেও হতে পারে, অন্যদিকে ছেলে কারো অধীন নয় এজন্য সেবাপ্রদান ছেলের কাধেই বেশী বর্তাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...