আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
33 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু

 ওস্তাদ, আমার আম্মু প্রায় 5 বছর ধরে মোটামুটি বেশ ভালো অসুস্থ। দিন যত যায় মনে হয় যেন অসুস্থতা বেড়েই যায় তত। মেজর মেজর সমস্যা দেখা দেয়। 

উস্তাদের ক্লাসে শুনলাম যে, জরায়ুর চিকিৎসাতে হোমিওপ্যাথি বেশ কাজের। এ বিষয়ে আমার জ্ঞান শুণ্যের কোটায়! এ বিষয়ে নলেজ থাকলে বাসায় রাজি করানো যেত চিকিৎসা নেবার জন্য। ওস্তাদ যদি এ বিষয়ে কিছুটা ডিটেইলস জানাতে পারতেন মুনাসিব হয়। কারণ আমার আম্মুকে হোমিওপ্যাথি দেখাতে চাচ্ছিলাম।

আর, আম্মুর অসুস্থতা থেকে পরিত্রাণের জন্য কি কি আমল করা যায় জানাবেন ইন শা আল্লাহ্।

জাযাকাল্লাহু খয়রন।

1 Answer

0 votes
by (63,450 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

 

জবাবঃ-

https://ifatwa.info/45883/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সুস্থতা ও অসুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাতে আনুগত্য ও নাফরমানির কোনো সম্পর্ক নেই। নবী-রাসূলরাও অসুস্থ হয়েছেন। যারা ছিলেন সব মাখলুকের সেরা। রাসুলুল্লাহ (সা.) সব পয়গম্বরের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তিনিও কয়েকবার অসুস্থ হয়েছেন। তাঁকেও অসুস্থতার কষ্ট বরদাশত করতে হয়েছে। এটি আবশ্যক নয় যে অসুস্থতা আল্লাহর শাস্তি ও তাঁর অসন্তুষ্টির দলিল। অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষাস্বরূপ হতে পারে। মুমিনের জন্য তার গুনাহর কাফফারাও হতে পারে।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘সত্যের নিকটবর্তী থাকো এবং সরল-সোজা পথ অবলম্বন করো। মুমিনের যে কষ্টই হোক না কেন, এমনকি তার গায়ে যদি কোনো কাঁটা বিঁধে বা সে কোনো বিপদে পতিত হয়সব কিছুই তার গুনাহর কাফফারা হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩০৩৮)

 অসুস্থতা দ্বারা মুমিন বান্দার স্তর উন্নত হয়। অসুস্থতাকে অশুভ নিদর্শন হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ যার মঙ্গল চান তাকে দুঃখ-কষ্টেফেলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৫)

সুস্থতা আল্লাহর নেয়ামত। আবার অসুস্থতার মাধ্যমে মুমিনদের পাপ মোচন হয়। সুস্থতার জন্য আল্লাহর দরবারে যেমন দোয়া করা উচিৎ তেমনি অসুস্থ হলেও তা থেকে পানাহ পাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করা উচিৎ।

রোগ থেকে দ্রুত আরোগ্য লাভের দোয়া:

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি মুজহিবাল বা’সি, ইশফি আনতাশ-শাফি, লা শাফি ইল্লা আনতা শিফায়ান লা য়ুগাদিরু সুকমা।

অর্থ: হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী; আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দিন যেন কোনো রোগ অবশিষ্ট না থাকে।

হাদিসে এসেছে, আনাস বিন মালিক (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়-ফুঁক করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৭৪২)

তবে ইসলামে আহার্য ও পানীয় বস্তুতে ফুঁ দিতে নিষেধ করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনরাসূলুল্লাহ (সা.) পানপাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে ও তার মধ্যে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৬৮৬)

মধু ও কালোজিরা ইত্যাদি বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তার (মৌমাছির) উদর থেকে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয় (মধু), যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য।’ (সূরা : নাহল, আয়াত : ৬৯) আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘কালোজিরার মধ্যে মৃত্যু ছাড়া অন্য সব রোগের আরোগ্য রয়েছে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫২৮৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত রোগ থেকে মুক্তির জন্য উপরে উল্লেখিত আমলগুলি করলে আল্লাহ তায়ালা আপনার মাকে দ্রুত সুস্থ করবেন বলে আশা রাখি। আমরা দোয়া করছি যে, ইনশাআল্লাহ রব্বুল আলামীন আপনাকে পূর্ণ সুস্থতার নিয়ামত দান করুন। পাশাপাশি জরায়ুর চিকিৎসাতে ভালো যোগ্যতা সম্পূর্ণ দ্বীনদার কোন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষুধ সেবন করতে থাকবেন। আমরা এবিষয়ে অভিজ্ঞ নই। আমাদের চেয়ে চিকিৎসকগণ উত্তম ও রোগীর জন্য উপযোগী পরামর্শ ও চিকিৎসা প্রদাণ করবেন বলে আশা রাখি। তবে আমাদের একজন উস্তায পার্সোনালি (মুফতী মিজানুর রহমান সাহেব) হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। আপনি চাইলে তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...