আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
edited by
অনুগ্রহ করে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিবেন। এবং যেগুলো বিস্তারিত উত্তর সেগুলো বিস্তারিত দিবেন মিন ফাদ্বলিক।

আমার হাজবেন্ড এর ভালোবাসা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহর পক্ষ থেকে সেইটি একটি নিয়ামত, যা অস্বীকার করলে না শুকরিয়া করা হবে। এবিষয়ে বিস্তারিত বলার জরুরত নেই, যা বুঝেছি ওনার হৃদয়ে আমার জায়গার দিক থেকে তিনি অনেস্ট। আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট।

গত দেড়মাস আগে তিনি আমাকে জানান মাসনা করবেন যেকোনো সময়। প্রথমে নারীসুলভ দিক থেকে বুঝাই। আমি চাইনি তিনি এখনই মাসনা করুন। কেননা তিনি আমাকে বলেছেন তার জন্য আমিই যথেষ্ট। প্রায় ১৫দিন ধরে তিনি বিভিন্ন ওয়াজ নসীহত ইত্যাদি দিতেন দেখে বুঝলাম ওনাকে মাসনা করানো উচিত। আমি পরিচিত দুজনের কাছে প্রস্তাবও রাখি। কিন্তু তার আগেই তিনি গোপনে বিয়ে করে নিয়েছেন। এবং জানিয়েছেন বিয়ের দুই সপ্তাহ পর। উল্লেখ্য, বিয়ের নিয়ত হিসেবে বলেছেন অসহায় নারীর সাহায্য করা, এতদিন বলতেন অধিক সন্তানের জন্য করবেন। নিজের জরুরতের জন্য বিয়ে করেননি।

প্রথম প্রশ্ন রিলেটেড কিছু কথা:
আমার বিয়ে হয়েছে গত ২৪ সাল শুরুর দিকে। তিনি মাসনা করেছেন ২৪ সালের শেষে। আমার বিয়ের নয়মাসও হয়নি তখন মাসনা করেছেন। এবং আমার কোনো বাচ্চাকাচ্চাও নেই। তিনি জবে থাকেন।

এই দশমাসে আমি সর্বোচ্চ তিনমাস ওনার সাথে একটানা থেকেছি। বাকী সময়ের চারমাস বাবার বাসায়, তিনি মাসে ৪/৫দিন আসতেন। এবং বাকী সময়গুলো ভাড়া বাসায় থাকতাম। সেখানেও তিনি ৪/৫ দিন করে থেকে যেতেন। আমার জন্য একা থাকা বিভিন্ন কারণে মুনাসিব হচ্ছিল না। তাই ওনাকে নিয়ে যেতে বলি, কিন্তু সঙ্গত কারণে সম্ভব হচ্ছিল না।

ওনার পূর্ব বিবাহ সূত্রে একাধিক সন্তান রয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। আমি অবিবাহিতা ছিলাম, তুলনামূলকভাবে আমার বয়স কম।

বিয়ের এক সপ্তাহ পর তিনি জানান ভবিষ্যতে বহুবিবাহ করবেন এবং আমি যেন পজিটিভ থাকি। আমি বলি আপনি এখনই করেন না, আমাকে কিছু সময় দিন।

বিয়ের পর থেকে তিনি অনেক অসুস্থ ছিলেন। ওনার সাথে ওনার বাবা মা সন্তান কেউ ছিলো না। গলা দিয়ে রক্ত পর্যন্ত ঝরতো। বিয়ের পর থেকেই সবকিছু একা হাতে সামলাই এবং আমি ওনাকে এক গ্লাস পানি পর্যন্ত নিজে নিয়ে খেতে দিইনি।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য, তিনি আমার প্রতি যত্নশীল একজন পুরুষ। আমি কখনও অস্বীকার করতে পারবো না। ওনার স্বল্প আয়ের মধ্যে থেকেও তিনি আমার সর্বোচ্চ পরিমাণে হক্ব আদায় করেছেন। আমার স্বাস্থ্যসহ আরও অনেক বিষয়েও তিনি যত্নশীল।

মাসনার কথা চলাকালীন তিনি আমাকে কিছুটা ইঙ্গিত দিয়ে বুঝতে চান আমি পজিটিভ কিনা। আমার পক্ষে নয়মাসের সংসারে সতীন নিয়ে থাকা কষ্টকর ছিলো। এবং আমি নিজেই এখনও আমার হাজবেন্ডের সাথে থাকতে পারি না। সেই দৃষ্টি থেকে আমার খারাপ লাগাটা প্রচন্ড ছিলো।

আমি ওনার দুঃসময়ে ওনার সঙ্গ দিয়েছি, ইহসান করেছি। তিনিও অস্বীকার করেন না। ওয়াল্লহি, ওনার পাশে একজন মানুষও ছিলো না। আমি ওনার সংসার দেখাশোনা, বাচ্চা হারানোর শোকে মানসিক সাপোর্ট, খিদমত সব করেছি নিরলস। আমাদের অসম বিয়ে দেখে আমাকে টানা কয়েকমাস ধরে অপবাদ দিয়ে গেছে। অনলাইন, অফলাইন সব জায়গায় কথা শুনেছি আমি। আমি তখনও সবর করেছি আল্লাহর জন্য।

প্রশ্ন হচ্ছে, আমার নিয়ত তো আল্লাহর সন্তুষ্টি। তবে এতকিছু সওয়া আর আমি নিজেই তারসাথে থাকতে না পারা, তারসাথে আরকিছু সময় ভালোভাবে কাটাতে চাওয়ার জের ধরে তার থেকে এখনই মাসনা না করার আকাঙ্খা কি আমার পক্ষ থেকে অন্যায় চাওয়া ছিলো? আমি কি শরীয়তবিরোধী কিছু চেয়েছিলাম? উনি নিজেই জানিয়েছেন ওনার প্রয়োজনে বিয়ে করবেন না, দ্বীনের জন্য করবেন। ওনার প্রয়োজনে করলে আমি ওনাকে না করতাম না, কষ্ট পেতাম না, আর এই বিষয়ে এখানে লিখতামও না। যেহেতু দ্বীনের জন্য করতে চান শুধু, তাহলে ওনার থেকে কিছু সময় চাওয়া আমার জন্য অন্যায় ছিলো? আমার নিজেরই বাচ্চা নেই, এবং আমি তার থেকে দূরে থাকি। আমার মানসিক সুস্থতার আশা করা কি শরীয়ত বিরোধী ছিলো?

[মাসনার কথা চলাকালীনও বেশকয়েকবার বলেছে আমি তার জন্য যথেষ্ট, আমি ওনার আয়েশা। তিনি আমাকে নিয়ে তার কথাগুলো অকপটে জানাতেন। কিন্তু দ্বীনের জন্য বিয়ে করবেন। আর আমার সুক্ষ্ম অবজার্ভ অনুযায়ী দুজনের একজনও অসুখী ছিলাম না]

দ্বিতীয় প্রশ্ন রিলেটেড কিছু কথা:

এতদিন তিনি বলতেন আমার মাসনার পাত্রী তুমি খুঁজে দিবে। কিন্তু সে নিজে নিজেই বিয়ে করে নিয়েছে। অথচ আমার সাথে কথা বলে আগাতে পারতেন। আমার অনেক বোনদের সাথে পরিচয়, তাদের সাথে যোগাযোগ করতাম। বা ওনার চুজ করা পাত্রীর সাথে যোগাযোগ করাতেন! এইযে আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করলেন তিনি এটা কি আমাকে অসম্মানিত করা নয়? আমি জানি এগুলো তাকদীর। কিন্তু জুলুমও তো তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত।

বলতেন তোমাকে না জানিয়ে বিয়ে করবো না, চিন্তা কইরো না। কিন্তু তিনি এতটায় গোপন করেছে যে বুঝতেও পারিনি। তিনি আশঙ্কা করেছিলেন আমি কিছু করে বসতে পারি, তাই বলেননি।
কিন্তু ওনার বিয়েতে আমাকে ইনভলভ করলে আমি কষ্ট পেতাম ঠিকই, কিন্তু এতটা কষ্ট একদমই হতো না।

তিনি বলতেন বিয়ে করবেন একাধিক বাচ্চার নিয়তে। তিনি যখন বলেছেন ওনার মাসনা ওনার থেকেও সিনিয়র, ডিভোর্সি, অসুস্থ, তখন আমি নরম হয়ে যাই অনেক, মায়া হয়। কিন্তু যখন শুনেছি ওনার মাসনার একটা ফেলোপাইন টিউব নেই, তখন প্রশ্ন জেগেছে ওনার নিয়ত নিয়ে। বাচ্চার জন্য মাসনা লাগবে এই কথাটির বিপরীত কাজ দেখে আমি কষ্ট পাই। একাধিক স্ত্রী থাকবে, প্রশান্তি পাবে এই নিয়তেও বিয়ে জায়েজ। কিন্তু সেইটাকে দ্বীনের বলে দাবী করা পছন্দ করবো না।
আমি খুবই নরম মনের মানুষ। তিনি একটা ধমক দিলেও জ্বর এসে যায় আমার। ওনার সাথে তর্ক বিতর্ক পর্যন্ত করি না। আমার সংসার শুরুর আগেই ভাগ চলে আসলো আর আমি খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এটা তিনি স্বাভাবিক বলে ধরেছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে, আমি চেয়েছিলাম উনি এখনই বিয়ে না করুক। ওনাকে বলেছিলাম আপনি ধমক দিলেও তো জ্বর এসে যায়। বিয়ে করলে স্বাভাবিক থাকতে পারবো না। আমার প্রতি ইহসান করুন, তিনি করেননি। গত একমাস ধরে একটানা অসুস্থ আমি, সহজে সুস্থ হচ্ছি না।

ওনাকে আমি আগের মতো স্বাধীনভাবে ফোনে পাচ্ছি না। আগের মতো কোয়ালিটি টাইম কাটাতে পারছি না। এগুলোও আমাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছে। আমি ভেবেছিলাম তিনি এখনই করবেন না। আর আমিও তারসাথে স্পেস নিয়ে সংসার কাটাতে পারবো। কিন্তু বিয়ের নয়মাস পরই আমার উপর বেশকিছু সীমাবদ্ধতা চলে এসেছে অটোমেটিক, এমন দাম্পত্য জীবন আমার উপর কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি ওনার সাথে কথা বলার স্পেস পাচ্ছি না পর্যাপ্ত। আমার দীর্ঘ অসুস্থতার সময় ওনাকে অনলাইনেও পাই না পর্যাপ্ত, কারণ ওনাকে দুজনকে সময় দিতে হচ্ছে, পাশাপাশি অফিসের কাজও করতে হচ্ছে। আমার বিয়ের পর থেকেই ওনার সাথে কথা না বলে থাকতে পারতাম না। খুব খারাপ লাগতো, এখন সেই খারাপ লাগা কয়েকগুণ বেড়েছে।

এইযে তিনি জেনে-বুঝে আমাকে সময় দেওয়ার পরিবেশ রাখলেন না, এটা কি আমার প্রতি জুলুম সাব্যস্ত হবে? এটা কি বেইনসাফি হয়েছে ওনার পক্ষ থেকে? ওস্তাদ, আপনি এবিষয়ে নিরপেক্ষভাবে ফতোয়া দিন। আমি অশান্তির উদ্দেশ্যে এই প্রশ্নটি করছি না। যদি জুলুম হয়েও থাকে, আমি ক্ষমা করে দিবো।

তিনি কম সময় দিতে পারছেন, কিন্তু আগের মতোই ব্যবহার করছেন। তিনি আমার থেকে আগের মতো আমার হাসিমাখা চেহারা দেখতে চাচ্ছেন। হাসিমুখে কথাবার্তা চাচ্ছেন, আগের মতো স্বাভাবিক জীবন কাটাতে বলছেন। কিন্তু আমার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাভাবিক হওয়া। আমার মূল সমস্যায় হচ্ছে, আমি পাচ্ছি না ওনাকে।

তিনি আমাকে বলেন জমিনের বুকে আমি ওনার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা, আমি ওনার আয়েশা, আমার জায়গায় কেউ যেতে পারবে না বিভিন্ন কথা। কিন্তু কিছু সময়ের জন্য স্বাভাবিক হলেও পরে গিয়ে হুট করে মনে পরছে, "তিনি আমার প্রতি ইহসান করেননি কেন। যদি দ্বীনের জন্য, অধিক সন্তানের জন্যই বিয়ে হবে তবে লুকিয়ে করলেন কেন, এত দ্রুত করলেন কেন। যদি প্রশান্তির নিয়তে করেন তবে এতদিন কেন বলতেন শুধুই অধিক সন্তানের জন্য করবেন, ইত্যাদি।"

আমি কিভাবে অন্তর থেকে একেবারে স্বাভাবিক হবো? আমি আমার স্বামীর সাথে ভালোভাবে থাকতে চাচ্ছি। কিন্তু যুক্তিসঙ্গত প্রশ্নগুলো আমাকে স্বস্তি দিচ্ছে না। আমাকে নাসীহাহ করুন। আমি সবর করতে চাচ্ছি, কিন্তু বারবার অভিযোগ, খারাপ লাগা ইত্যাদি আমাকে কষ্টে ফেলেছে। কিভাবে এগুলো কাটিয়ে উঠবো একটু জানান ইনশাআল্লাহ। আমি আবার আগের মতো হতে চাচ্ছি যখন কষ্ট পেলেও কোনো প্রতিবাদ না করে চুপচাপ থাকতাম।

আমার এলোমেলো প্রশ্নগুলো আবার করি:
১. যেহেতু নিজের প্রশান্তির জন্য বিয়ে করবেন না, সেহেতু ওনার থেকে সময় চাওয়া আমার পক্ষ থেকে অন্যায় দাবী ছিলো কিনা?

২. আমার সংসারে ওনার সাথে একত্রে থাকতে পারি না, আমারী বাচ্চা নেই, আমার বেশিদিন বিয়ে হয়নি। কিন্তু এরমধ্যে স্বামীর ভাগ চলে আসা আর আমার অসুস্থ হয়ে যাওয়া, ওনাকে সারাদিনে খুব কম পাওয়া এগুলো বেইনসাফি কিনা? আমার প্রতি জুলুম হয়েছে কিনা? (নিরপেক্ষ উত্তর আশা করছি। জুলুম হলেও ওনার সাথে ভালোভাবে থাকবো, না হলেও)

৩. যেহেতু দ্বীনের নিয়তে, সেহেতু এখনই বিয়েটা করা সঠিক সিদ্ধান্ত নাকি হঠকারী সিদ্ধান্ত? আমি ওনার জন্য যথেষ্ট ছিলাম। আমাকে কিছু সময় দেওয়া উচিত ছিল কিনা?

৪. আমি কিভাবে স্বাভাবিক হবো? কিভাবে তাকওয়াবান নারীদের মতো স্বামীর প্রতি সন্তুষ্টচিত্তে আনুগত্যের সাথে জীবন কাটাবো? নাসীহাহ দিন, আমার ইসলাহ জরুরী।
৫. আমি যদি এবিষয়ে কষ্ট পেলেও সবর করি, আমি যদি আমার স্বামীর সর্বচ্চ হক্ব আদায় করি এবং ওনাকে সন্তুষ্ট রাখি; পাশাপাশি তাকওয়ার দিক থেকে আমার বাকী সতীনদের থেকে এগিয়ে থাকি ইনশাআল্লাহ তবে কি জান্নাতে আমার স্বামীর কাছে আমার মর্যাদাও এগিয়ে থাকবে বাকীদের থেকে? নাকি জান্নাতেও সবার সমান মর্যাদা?

আমি ওনার কাছে বিশেষ হতে চাই দুনিয়া ও আখিরাতে, আল্লাহ তৌফিক দিন। যদি কর্ম অনুযায়ীই ফল পাই সবাই, তবে তো কর্মে এগিয়ে থাকলে জান্নাতেও ওনার নিকট বেশি মর্যাদাবান হবো। হুরেদের উপর যেমন দুনিয়ার স্ত্রী প্রাধান্য পায়, তেমন করে কি দুনিয়ার অধিক তাকওয়াবান স্ত্রী বাকী স্ত্রীর উপর প্রাধান্য পেতে পারে? এমন কিছু হতে পারে কিনা? যদি হয় তবে আমি আগের চেয়ে বেশি স্পৃহা পাবো স্বামীর সাথে ভালোভাবে থাকতে, আল্লাহর থেকে প্রতিদানের আশায়। এটা জানা জরুরী।

1 Answer

0 votes
by (579,240 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

https://www.ifatwa.info/6683 নং ফাতওয়ায় বর্ণিত রয়েছে ,
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع 
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
 আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক। 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

একাধিক স্ত্রীর মাঝে দুই বিষয়ে সমতা রক্ষা করা অতীব প্রয়োজন। স্ত্রীদের সঙ্গে রাতযাপন ও ভরণ-পোষণ। 

এ দুই অধিকার সব স্ত্রীর ক্ষেত্রে সমানভাবে স্বামীকে পালন করে যেতে হবে। কোন স্ত্রী সুন্দর বা অসুন্দর, আর কোনটি কুমারী বা বিধবা তা পার্থক্য করা যাবে না। 

কিন্তু কোনো স্ত্রীর প্রতি মনের ভালোবাসা বেশি হওয়া, আবার অন্য স্ত্রীর প্রতি কম হওয়া তা সমতার অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, এটি মনের বিষয়, আর মনের ওপর কারও কোনো অধিকার নেই। একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে শুধু রাতযাপন ও খরচাপাতি এ দুই বিষয়ে সমতা ধর্তব্য। এটাই হলো একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সমতা রক্ষার ইসলামি শরিয়তের বিধান। 

হাদিসে আছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) স্ত্রীদের মধ্যে পালাবণ্টন করতেন এবং ন্যায়বিচার করতেন। আর বলতেন, হে আল্লাহ! আমি আমার শক্তি-সামর্থ্যানুযায়ী পালাবণ্টন করলাম। সুতরাং যাতে শুধু তোমার ক্ষমতা রয়েছে, তাতে আমার শক্তি নেই। কাজেই তাতে তুমি আমাকে ভর্ৎসনা করো না। (তিরমিজি : ১১৭০, আবু দাউদ : ২১৩৬)।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
কোনো ব্যাক্তির যদি একাধিক বিবাহ বাস্তবেই খুবই প্রয়োজন হয়, বর্তমান স্ত্রী দ্বারা যদি তার শারিরীক চাহিদা ও অন্যান্য আবশ্যকীয় হক আদায় না হয়,আর সেই একাধিক স্ত্রীর চাহিদা পূরন করতেও সক্ষম হয়,তাদের ভরনপোষণ এর ব্যপারেও পূর্ণ সক্ষম হয়,আর একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে শরীয়তের শর্তাবলী পূর্ণ ভাবে মানার উপরেও সক্ষম হয়,তার জন্য একাধিক বিবাহের ক্ষেত্রে ইসলাম অনুৎসাহিত নয়।

বরং ইসলাম এক্ষেত্রে তাকে একাধিক বিবাহে উৎসাহ প্রদান করে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন,
(০১)
আপনার পক্ষ থেকে এটা অন্যায় দাবী ছিলোনা।

(০২)
পূর্বে তিনি তো মাসের মাত্র ৪/৫ দিন আপনার সাথে থাকতেন,বাকি সময় আপনার একাই থাকতে হতো,আর এখন সেই ৪/৫ দিনের মধ্যে ভাগ করে আপনার কাছে থাকবে,সুতরাং আপনি অসন্তুষ্টিতে এটিই আপনার প্রতি জুলুমের অন্তর্ভুক্ত। 

আপনি জুলুমের শিকার,এটি বলা যায়।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে সার্বিক দিক বিবেচনা করে এক্ষেত্রে এই মুহূর্তে এটি তার জন্য হঠকারী সিদ্ধান্ত বলেই মনে হচ্ছে।

(০৪)
পরামর্শ, 
আপনি স্বাভাবিক হয়ে যান,এটাকেই রিয়েলেটি মনে করুন। 
মনে করুন যে আপনার পূর্ব হতেই সতিন ছিলো। 

এখন আপনি নিজ জায়গা হতে মেনে নেয়ার চেষ্টা করুন,বিকল্প কোনো কিছু না ভাবাই ভালো হবে।

তিনি আপনার কাছে আসলে আপনি তার হক আদায়ের চেষ্টা করুন,তাকে আগের মতোই মুহাব্বত করার চেষ্টা করুন,তিনি যেনো আপনাকে এভাবে ইগনোর করে না চলে,ফোন দিলে যেনো কথাবার্তা বলে,প্রত্যহ যেনো আপনার খবরাখবর নেয়,এই বিষয় গুলির প্রতি জোড় তাগিদ দিন।

পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দোয়া চালিয়ে যানে,ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা আপনার সহায় হবেন।

(০৫)
এক্ষেত্রে আপনার পাশাপাশি আপনার স্বামীও যদি জান্নাতে যেতে পারে,সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে আপনার স্বামীর কাছে আপনার মর্যাদা বাকীদের থেকে এগিয়ে থাকবে,ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...