মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
قُلۡ لَّاۤ اَجِدُ فِیۡ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیَّ مُحَرَّمًا عَلٰی طَاعِمٍ یَّطۡعَمُہٗۤ اِلَّاۤ اَنۡ یَّکُوۡنَ مَیۡتَۃً اَوۡ دَمًا مَّسۡفُوۡحًا اَوۡ لَحۡمَ خِنۡزِیۡرٍ فَاِنَّہٗ رِجۡسٌ اَوۡ فِسۡقًا اُہِلَّ لِغَیۡرِ اللّٰہِ بِہٖ ۚ فَمَنِ اضۡطُرَّ غَیۡرَ بَاغٍ وَّ لَا عَادٍ فَاِنَّ رَبَّکَ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ ﴿۱۴۵﴾
বলুন, আমার প্রতি যে ওহী হয়েছে তাতে, লোকে যা খায় তার মধ্যে আমি কিছুই হারাম পাই না, মৃত, বহমান রক্ত ও শুকরের মাংস ছাড়া।কেননা এগুলো অবশ্যই অপবিত্র অথবা যা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য উৎসর্গের কারণে। তবে যে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে নিরুপায় হয়ে তা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে, তবে নিশ্চয় আপনার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(সুরা আনআম ১৪৫)
অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
فَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا وَاشْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ إِن كُنتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُونَ
অতএব, আল্লাহ তোমাদেরকে যেসব হালাল ও পবিত্র বস্তু দিয়েছেন, তা তোমরা আহার কর এবং আল্লাহর অনুগ্রহের জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর যদি তোমরা তাঁরই এবাদতকারী হয়ে থাক। (সূরা নাহল, আয়াত ১১৪)
তিনি অন্যত্রে বলেন-
وَكُلُوا مِمَّا رَزَقَكُمُ اللَّهُ حَلَالًا طَيِّبًا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي أَنتُم بِهِ مُؤْمِنُونَ
আল্লাহ তা’য়ালা যেসব বস্তু তোমাদেরকে দিয়েছেন, তন্মধ্য থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু খাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাসী। (সূরা মায়েদা, আয়াত ৮৮)
মুসলমান মালিকাধীন হোটেলের গোশত ভক্ষণ করা যাবে।কেননা মুসলমান যবেহের সময় বিসমিল্লাহ্ বলবে,এটাই স্বাভাবিক। এবং এমন ধারণা পোষণ করাই সকলের উচিৎ।
তাছাড়া মুসলমান যদি যবেহের সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে বিসমিল্লাহকে ভূলেও যায়,তদুপরি মুসলমানের অন্তরে আল্লাহর নাম থাকার দরুণ ঐ যবেহকৃত জন্তুকে ভক্ষণ করা জায়েয রয়েছে।
হাদিস শরিফে এসেছে, আয়েশা রাযি. বলেন, একদল লোক নবী রাসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেসা করল, ‘এক নও মুসলিম সম্প্রদায় আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না যে, তার জবেহকালে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়েছে কি না।’ তিনি বললেন, ﺳَﻤُّﻮﺍ ﻋَﻠَﻴﻪِ ﺃَﻧﺘُﻢ ﻭَﻛُﻠُﻮﻩُ ‘তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে তা ভক্ষণ কর।’ (বুখারি ২০৫৭, ৫৫০৭ )
উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় হাফেজ ইবন হাজার আসকালানী রহ. বলেন,
ﻭﻳﺴﺘﻔﺎﺩ ﻣﻨﻪ ﺃﻥ ﻛﻞ ﻣﺎ ﻳﻮﺟﺪ ﻓﻲ ﺃﺳﻮﺍﻕ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ ﻣﺤﻤﻮﻝ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺼﺤﺔ ، ﻭﻛﺬﺍ ﻣﺎ ﺫﺑﺤﻪ ﺃﻋﺮﺍﺏ ﺍﻟﻤﺴﻠﻤﻴﻦ … ﻷﻥ ﺍﻟﻤﺴﻠﻢ ﻻ ﻳﻈﻦ ﺑﻪ ﻓﻲ ﻛﻞ ﺷﻲﺀ ﺇﻻ ﺍﻟﺨﻴﺮ ، ﺣﺘﻰ ﻳﺘﺒﻴﻦ ﺧﻼﻑ ﺫﻟﻚ
‘এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, মুসলমানদের বাজারে যে গোশত পাওয়া যায় তা হালাল হিসেবে গণ্য হবে। কেননা, মুসলমানের সব বিষয়ে ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো ধারণা রাখতে হয় যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিপরীত স্পষ্ট প্রমাণ না পাওয়া যায়।’
(ফাতহুল বারী ৯/৭৮৬)
সুতরাং মুসলিম দেশের হোটেল-রেস্তোরাঁ গুলোতে গোশত খাওয়া জায়েয রয়েছে।এক্ষেত্রে সন্দেহ প্রবণতা পরিহার করা উচিত।মুসলমানকে এবং মুসলিম সমাজের মানুষকে বিশ্বাস করাই স্বাভাবিকতা। অবশ্য কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই এসব থেকে দূরে থাকতে হবে।
অন্যদিকে অমুসলিম রেস্তোরাঁ থেকে গোস্ত ভক্ষণ করতে হলে মালিককে জিজ্ঞাসা করতে হবে।সে যদি বলে ইসলামি ত্বরিকায় হালালভাবে যবেহ করা হয় নাই,তাহলে এমতাবস্থায় উক্ত গোশতকে ভক্ষণ করা যাবে না। কিন্তু যদি সে বলে যে এটাকে হালাল ত্বরিকায় যবেহ করা হয়েছে,তাহলে এমতাবস্থায় করণীয় কি?
সে সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে
যদি কোনো মুশরিক দাবী করে যে তার কাছে হালাল যবেহ করা গোস্ত রয়েছে। তাহলে সেটা খাওয়া জায়েয রয়েছে।(কিতাবুল ফাতাওয়া ৪/১৯৯)আরো বর্ণিত রয়েছে,(আবকে মাসাঈল-৭/২৯২জা'মেউল ফাতাওয়া-৩/১৩৭) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/686প্রশ্নে উল্লেখিত খাবার যেহেতু আমাদের দেশের খাবার,আর আমাদের দেশ যেহেতু মুসলিম অধ্যুষিত দেশ,সুতরাং সেই খাবার শুকরের চর্বি দিয়ে তৈরী করা সম্পর্কে দলিলের ভিত্তিতে নিশ্চিত ভাবে না জানলে সেই খাবার খাওয়া হারাম হবেনা,নাপাকও হবেনা।