ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
শরীয়তের বিধান
মতে অযু ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম একটি কারন হলো
রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। (হেদায়া-১/১০)
আব্দুল্লাহ
ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّمَا
الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ
শরীর থেকে
যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী
৫৬৮)
أَنَّ عَبْدَ
اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا رَعَفَ، انْصَرَفَ فَتَوَضَّأَ
আব্দুল্লাহ
বিন উমর রাযি.-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝরতো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অযু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক
১১০)
ثم المراد
بالخروج من السبيلين مجرد الظهور وفي غيرهما عين السيلان ولو بالقوة، لما قالوا: لو
مسح الدم كلما خرج ولو تركه لسال نقض وإلا لا
যার সারমর্ম
হলো কেউ রক্তকে বের হওয়া মাত্রই যখমের মুখ
থেকে মুছে নেয়,যদি উক্ত ছেড়ে দেয়া হত,তবে প্রবাহিত হত,এমন প্রকারের যখমের রক্তের কারণে অজু ভেঙ্গে যাবে।নতুবা অজু ভঙ্গ হবে না। (ফাতাওয়ায়ে শামী ১/১৩৪)
বিস্তারিত
জানুনঃ https://ifatwa.info/6139/
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত আঠালো (পানি) গড়িয়ে পড়ার
আগ পর্যন্ত সেই স্থান নাপাক হবেনা। অযুও ভেঙ্গে যাবেনা।
তবে উক্ত আঠালো পানি শরীরের অন্য কোথায়
লাগলে সেই জায়গা ধৌত করতে হবে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. শরীরের
যে কোন অঙ্গ থেকে চুলকানোর কারণে বা ছাল উঠানোর কারণে বা অন্য কোন কারণে উক্ত স্থান
থেকে নির্গত রস বা পানি যদি তার স্থান ত্যাগ করে এবং এ পরিমাণ নির্গত হয় যে তা ক্ষত
স্থান থেকে গড়িয়ে পড়বে তাহলে তার অজু ভেঙ্গে যাবে। অন্যথায় অজু ভাঙ্গবে না। সুতরাং
সাধারণত এলার্জী বা ঘামাচি চুলকালে যত সামান্য রস বের হয় যা গড়িয়ে পড়ার সমপরিমাণ হয়
না বিধায় তা নাপাক হবে না।
২-৩. উপরে উল্লেখিত বিষয়ে আপনার মধ্যে ওয়াসওয়াসার আলামত
পাওয়া যাচ্ছে। এরকম শয়তানি প্ররোচনা থেকে বাচতে হলে, রাসূলুল্লাহ
সাঃ এর বিধিনিষেধকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করতে হবে। সাথে সাথে ঐ চিন্তা থেকে
নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে।এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া সহ আল্লাহর যিকিরে
নিজেকে ব্যস্ত করে রাখতে পারলেই তবে এরকম শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেবে বাঁচিয়ে
রাখা সম্ভব।(আল-মিনহাজ-২/১৫৫-১৫৬)
ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার আমলঃ
ইবনে
হাজার আল-হাইছামি তাঁর ‘আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা’ গ্রন্থে (১/১৪৯) এসেছে, তাঁকে
এর প্রতিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ،
وإن كان في النفس من التردد ما كان – فإنه متى لم يلتفت لذلك لم يثبت بل يذهب بعد
زمن قليل كما جرب ذلك الموفقون , وأما من أصغى إليها وعمل بقضيتها فإنها لا تزال
تزداد به حتى تُخرجه إلى حيز المجانين بل وأقبح منهم
অর্থাৎ, এর ঔষধ একটাই সেটা হচ্ছে– ওয়াসওয়াসাকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি
মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও। কেননা কেউ যদি সেটাকে ভ্রুক্ষেপ না
করে তাহলে সেটা স্থির হবে না। কিছু সময় পর চলে যাবে; যেমনটি
তাওফিকপ্রাপ্ত লোকেরা যাচাই করে পেয়েছেন। আর যে ব্যক্তি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবে
এবং সে অনুযায়ী কাজ করবে সে ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা বাড়তেই থাকবে; এক
পর্যায়ে তাকে পাগলের কাতারে নিয়ে পৌঁছাবে কিংবা পাগলের চেয়েও নিকৃষ্ট পর্যায়ে
পৌঁছাবে।
এর
সর্বোত্তম প্রতিকার হচ্ছে– বেশি
বেশি আল্লাহর যিকির করা, لَا حَوْلَ وَلَا
قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ পড়া, আউযুবিল্লাহ্
পড়া তথা বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
اَلْحَمْدُ لِلهِ الَّذِىْ رَدَّ اَمْرَهُ
عَلَى الْوَسْوَسَة
‘সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি
শয়তানের বিষয়টি কুমন্ত্রণা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রেখেছেন।’ (নাসাঈ)
ইবনে
হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ،
وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে
সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি
মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা
১/১৪৯)