আসসালামু আলাইকুম,
আমাদের বিবাহ হয় ১ বছর। আমার স্ত্রীর বোর্ড পরীক্ষা চলাকালীন বাসায় নাস্তা বানানোর আয়োজন হয়। আমার মা ডাকে তাকে সে পরীক্ষার কারণে যায় নি। এতে তিনি আমার কাছে বিচার দেন এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আমিও বেশ রেগে চাই, তাকে হালকা বকা দেই।
উল্লেখ্য,, পুরা পরীক্ষা চলাকালীন তার উপর অনেক মানসিক জুলুম হয়। কয়েকদিন অাগেও তার মাকে ডেকেও অপমান করা হয় বিগত ১ বছরের নানা ভুল নিয়ে। পরে, সে সবার কাছে মাফ চায়। আমার বাবা বলে,, সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়ায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। সে তা-ই করে, পরীক্ষা দিয়ে এসে অনেক আয়োজন করে আমার বোনসহ তার ফ্যামিলিকে খাওয়ায়। যেন আমরা শান্ত হই, সে বাকিদিনগুলো ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারে।
এই ঘটনা ঘটে শেষ পরীক্ষার আগের দিন। সে এটা নিতে পারে না ও ফোন করে তার মার কাছে বলে। উনি আবার আমাকে কল দেন ও বলেন -- ওর এক্সামটা ঠিকমতো দিতে দাও,ও পরীক্ষা শেষে সবাইকে রান্না করে খাওয়াবে। আমি আরও রেগে যাই ও বলি-- " এরকম বেয়াদব মেয়ে আমার দরকার নেই, নিয়ে যান ওকে।"
এখানে নিয়ে যান বলার উদ্দেশ্য ছিলো কয়েকদিন বাসায় থেকে আসুক। আমার অনুপস্থিতিতে সে আমার মূল্য বুঝুক। এছাড়াও বিগত কয়েকদিনের ঝগড়ায় আমি তাকে ভয় দেখাতাম তালাক দিবো,ছেড়ে দিবো এই বলে।
পরে তার মা বাসায় আসে, আমার ফ্যামিলি সহ আলোচনায়৷ বসে। আমার শাশুড়ির সাথে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। তখন তিনি বলেন -"তোমার যখন এতই তালাক দেয়ার ইচ্ছা, তাহলে দিয়ে দাও, নিয়ে যাই আমাদের মেয়েকে....
আমি তর্কাতর্কির এই পর্যায়ে রাগের মাথায় আমিও বলে ফেলি নিয়ে যান,আমি জানতামই না এই কথার দ্বারা তালাক পতিত হতে পারে। সে মুহূর্তে আমার বাবা আমাকে ধমক দিয়ে থামান। বিষয়টি পরে আমার খেয়াল থাকে না।
আমার স্ত্রী এটা নোটিশ করে ও সেই রাতেই বলে এই কথা বলার সময় তোমার নিয়ত কি ছিলো,কিন্তু আমি তা মনে করতে পারি না।
পরদিন ফজরের পর যা মনে পড়ে তা হলো--
রাগের মাথায় তখন আগপিছ বিবেচনা না করে বলেছি। এর ফলাফল / নিয়তেের দিকে খেয়াল ছিল না বা ভুলে গিয়েছি । খুব সম্ভবত ( সবচেয়ে বেশি যা ধারণা হয়) উদ্দেশ্য ছিলো আমার শাশুড়ীর কথার তাৎক্ষণিক জবাব দিয়ে তাকে থামানো, তার অহংকার কমানো, তার কাছে নত না হওয়া।
"নিয়ে যান "
অর্থ- সে এখান থেকে গেলে/ আমার কাছ থেকে
কিছুদিন দূরে থাকলে নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে আসবে। আমরা যেমন ঝগড়া হলে বলে রাগের মাথায় বলি যাও চলে যাও,, কিন্তু আসল উদ্দেশ্য এটা থাকে না তেমন।
তখন ঝগড়া হলে ভীতি প্রদর্শনের জন্য, স্ত্রীকে থামানোর জন্য" তালাক দিয়ে দিবো " এই কথাটা প্রায়ই বলতাম।
আমি জানতাম না যে শাশুড়ির এই কথার জবাব দ্বারা তালাক পতিত হতে পারে। জানলে এই কথা কখনো বলতাম না।
ঐ মূহুর্তের সবচেয়ে বেশি ধারণা হয় যে শাশুড়ীর কথার জবাব দেয়া,, আর বুঝানো তার মেয়েকে ছাড়া থাকতে আমি পারবো, সাথে করে নিয়ে যাক। তাকে ছাড়া থাকতে পারবো -- এটা মনোঃকষ্টে অন্তরে এসেছিলো,, কিন্তু তাকে তালাক দিবো,সে ১/২ তালাক প্রাপ্ত হবে, এটার নিয়ত আমার অন্তরে ছিল না।
তাকে তালাাক দিয়ে আলাদা করার ইচ্ছা থাকলে আমি সরাসরিই দিতে পারতাম যেহেতু তখন পরিবেশ উত্তপ্ত ছিলো, পারিবারিক অালোচনা চলছিলো ; শাশুড়ির সাথে বাহাস করার দরকার হতো না।
নিয়তের বিষয় এ এটাই মনে হয় আমার।
এখন কি আমাদের উপর তালাক পতিত হয়েছে?
( আমার স্ত্রী তার ভাষ্যমতে এই পোস্ট করে। কিন্তু সেখানে আমার নিয়তের কথা উল্লেখ ছিল না , আমি আমার কথা বিস্তারিত লিখেছি)