আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
73 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমাদের বিবাহ হয় ১ বছর। আমার স্ত্রীর বোর্ড পরীক্ষা চলাকালীন বাসায় নাস্তা বানানোর আয়োজন হয়। আমার মা ডাকে তাকে সে পরীক্ষার কারণে যায় নি। এতে তিনি আমার কাছে বিচার দেন এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
আমিও বেশ রেগে চাই, তাকে হালকা বকা দেই।
উল্লেখ্য,, পুরা পরীক্ষা চলাকালীন তার উপর অনেক মানসিক জুলুম হয়। কয়েকদিন অাগেও তার মাকে ডেকেও অপমান করা হয় বিগত ১ বছরের নানা ভুল নিয়ে। পরে, সে সবার কাছে মাফ চায়। আমার বাবা বলে,, সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়ায়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। সে তা-ই করে, পরীক্ষা দিয়ে এসে অনেক আয়োজন করে আমার বোনসহ তার ফ্যামিলিকে খাওয়ায়। যেন আমরা শান্ত হই, সে বাকিদিনগুলো ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারে।
এই  ঘটনা ঘটে শেষ পরীক্ষার আগের দিন। সে এটা নিতে পারে না ও ফোন করে তার মার কাছে বলে। উনি আবার আমাকে কল দেন ও বলেন -- ওর এক্সামটা ঠিকমতো দিতে দাও,ও পরীক্ষা শেষে সবাইকে রান্না করে খাওয়াবে।  আমি আরও রেগে যাই ও বলি-- " এরকম বেয়াদব মেয়ে আমার দরকার নেই, নিয়ে যান ওকে।"

এখানে নিয়ে যান বলার উদ্দেশ্য ছিলো কয়েকদিন বাসায় থেকে আসুক। আমার অনুপস্থিতিতে সে আমার মূল্য বুঝুক। এছাড়াও বিগত কয়েকদিনের ঝগড়ায় আমি তাকে ভয় দেখাতাম তালাক দিবো,ছেড়ে দিবো এই বলে।
পরে তার মা বাসায় আসে, আমার ফ্যামিলি সহ আলোচনায়৷ বসে। আমার শাশুড়ির সাথে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। তখন তিনি বলেন -"তোমার যখন এতই তালাক দেয়ার ইচ্ছা, তাহলে দিয়ে দাও, নিয়ে যাই আমাদের মেয়েকে.... আমি তর্কাতর্কির এই পর্যায়ে  রাগের মাথায় আমিও বলে ফেলি নিয়ে যান,আমি জানতামই না এই কথার দ্বারা তালাক পতিত হতে পারে। সে মুহূর্তে আমার বাবা আমাকে ধমক দিয়ে থামান। বিষয়টি পরে আমার খেয়াল থাকে না।
আমার স্ত্রী এটা নোটিশ করে ও সেই রাতেই বলে এই কথা বলার সময় তোমার নিয়ত কি ছিলো,কিন্তু আমি তা মনে করতে পারি না। পরদিন ফজরের পর যা মনে পড়ে তা হলো--
রাগের মাথায় তখন আগপিছ বিবেচনা না করে বলেছি। এর ফলাফল / নিয়তেের দিকে খেয়াল ছিল না বা ভুলে গিয়েছি । খুব সম্ভবত ( সবচেয়ে বেশি যা ধারণা হয়)  উদ্দেশ্য ছিলো আমার শাশুড়ীর  কথার তাৎক্ষণিক জবাব দিয়ে তাকে থামানো, তার অহংকার কমানো, তার কাছে নত না হওয়া।

"নিয়ে যান "

অর্থ- সে  এখান থেকে গেলে/ আমার কাছ থেকে কিছুদিন দূরে থাকলে নিজের ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে আসবে। এখন কি আমাদের  উপর তালাক পতিত হয়েছে?
উস্তায, মেহেরবানী করে জানাবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (606,750 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের আবােদন/ আলোচনার প্রেক্ষাপট 
 وفي حالة مذاكرة الطلاق يقع الطلاق في سائر الأقسام قضاء إلا فيما يصلح جوابا وردا فإنه لا يجعل طلاقا كذا في الكافي 
মুযাকারায়ে তালাকের মুহূর্তে সকল প্রকার কেনায়া তালাকের শব্দ দ্বারা (কাযা'আন) তালাক পতিত হবে,(তবে দিয়ানাতান তালাক হবে না)। হ্যা, যেই সব শব্দ দ্বারা তালাকের আবেদনকে গ্রহণ এবং প্রত্যাহার উভয়টাই বুঝাবে,সেই সব শব্দ দ্বারা তালাক পতিত হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

প্রশ্ন জাগে,মুযাকারায়ে তালাক কাকে বলে?
এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,
"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".
( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)
মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক বা মুযাকারায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1049


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
"আমার শাশুড়ির সাথে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। তখন তিনি বলেন -"তোমার যখন এতই তালাক দেয়ার ইচ্ছা, তাহলে দিয়ে দাও, নিয়ে যাই আমাদের মেয়েকে.... আমি তর্কাতর্কির এই পর্যায়ে  রাগের মাথায় আমিও বলে ফেলি নিয়ে যান,আমি জানতামই না এই কথার দ্বারা তালাক পতিত হতে পারে।"

যদি আপনার তালাকের নিয়ত না থাকে, তাহলে দিয়ানাতান তথা আল্লাহর নিটক তালাক হবে না। কেননা মুযাকারায়ে তালাকের মুহূর্তেও তালাকের নিয়ত ব্যতিত দিয়ানাতান তালাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উস্তায, 
" তখন ঝগড়া হলে ভীতি  প্রদর্শনের জন্য, স্ত্রীকে থামানোর জন্য" তালাক দিয়ে দিবো " এই কথাটা  প্রায়ই বলতাম।
অামি জানতাম না যে শাশুড়ির এই কথার জবাব  দ্বারা তালাক পতিত হতে পারে। জানলে  এই কথা কখনো বলতাম না। 
ঐ মূহুর্তের সবচেয়ে বেশি ধারণা হয় যে শাশুড়ীর কথার জবাব দেয়া,, আর বুঝানো তার মেয়েকে ছাড়া থাকতে আমি পারবো, সাথে করে নিয়ে যাক। তাকে ছাড়া থাকতে পারবো -- এটা মনোঃকষ্টে অন্তরে এসেছিলো,, কিন্তু তাকে তালাক দিবো,সে ১/২ তালাক প্রাপ্ত হবে,  এটার নিয়ত আমার অন্তরে ছিল না। 
তাকে তালাাক দিয়ে আলাদা করার ইচ্ছা থাকলে আমি সরাসরিই দিতে পারতাম যেহেতু তখন পরিবেশ উত্তপ্ত ছিলো, পারিবারিক অালোচনা চলছিলো ;  শাশুড়ির সাথে বাহাস করার দরকার হতো না। 
নিয়তের বিষয়ে আমার কথা এটাই। 
by
reshown
@#৳১(#(#//@()@;"[)@)@

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...