আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
34 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম।আমি পর্দার সহিত নন মাহরাম মেইনটেইন করে মেডিকেলে পড়তে চাই সম্মান ও জ্ঞান অর্জনের জন্য(সেবার ইচ্ছে থাকলেও তা সম্ভব হবেনা)।আমার হবু স্বামী আমাকে চেম্বার করতে দিবে না(আমি তাকে ছাড়া অন্য কাওকে বিবাহও করতে রাজিনা) এক্ষেত্রে মানুষের সেবা করতে পারছি না একারণে শুধু জ্ঞান অর্জন করতে কি মেডিকেলে পড়াটা আমার অনুচিত হবে ?আমার খালি মনে হচ্ছে আমার জায়গায় অন্য কেও থাকলে সেবা দিতে পারতো আবার পরক্ষণেই বুক ফেটে কান্না আসছে কেননা আমি মেডিকেল কলেজে পড়তে চাই ইন্টারে যখন বায়োলোজি পড়তে যেয়ে দেখতাম আল্লাহ কত সুন্দর করে আমাদের বানিয়েছেন কত নিঁখুত করে শরীরের সব কাজ হয় সুবহানাল্লহ তখন থেকেই আমার মানুষ এর চিকিৎসা সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জনের অনেক ইচ্ছা।আমি চেয়েছি চেম্বার করবো পর্দার সাথে কিন্তু যাকে বিয়ে করবো ইনশাআল্লাহ সে আমার এমবিবিএস পড়া পর্যন্ত রাজি আছে এর পরে চেম্বার করায় ইন্টার্ন করায় কোনোভাবেই রাজিনা কেননা ইন্টার্নে রাত্রে হাসপাতালে থাকতে হয়।এখন এক্ষেত্রে আমি শুধু এমবিবিএস পর্যন্ত পড়তে পারবো কোনো চেম্বার করে পারবো না আর না পারলে কারও সেবাও করতে পারবো না এক্ষেত্রে কি আমাকে আল্লাহ তায়ালা মেডিকেলে চান্স পেতে সহায়তা করবেন না?আমার অনেক ইচ্ছা এইসব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করার।আমার মনের আশা কি পূরণ হবে না চেম্বার করতে না পারার কারণে?আমার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ এই বিষয় নিয়ে একদিকে মেডিকেলে পড়ার প্রবল ইচ্ছা যা ছাড়তে চাইনা ছাড়ার কথা ভাবলে বুক ফেটে কান্না আসে,অন্যদিকে যাকে বিয়ে করবো ইনশাল্লাহ সে শুধু পড়া পর্যন্ত রাজি চেম্বার করতে দিবে না।আমি কি করতে পারি এমরাবস্থায়।আমার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর করবেন প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (62,100 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/39894/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পর্দা রক্ষা করা ফরজ।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু  আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

অসুস্থ্য মানুষদের সেবা করাও সওয়াবের কাজ। যেহেতু মহিলাদের  জন্য মহিলা ডাক্তারের প্রয়োজন।

তাই মহিলাদের জন্য পর্দার বিধান পুরোপুরি ভাবে পালনের শর্তে ডাক্তারী শিক্ষা অর্জন করা,ডাক্তারী করা জায়েজ আছে।  (কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/২৫৬)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

ইসলামি স্কলারগন  মুসলিম মহিলাদের মেডিকেল পড়াকে ফরযে কিফায়া বলেছেন। অর্থাৎ মুসলিমদের মধ্যে অবশ্যই কিছু মহিলার এ পেশায় আসা আবশ্যক যেন মহিলা সংক্রান্ত অসুখ-বিসুখ, সিজার, সন্তান ডেলিভারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মুসলিম নারীদেরকে পর পুরুষ বা অমুসলিমদের শরণাপন্ন না হতে হয়।

সুতরাং সমাজের অর্থশালী ও উদ্যোগী ব্যক্তিদের জন্য মহিলাদের জন্য স্বতন্ত্র মেডিকেল কলেজ/ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা ফরজ- যেন আমাদের দ্বীনদার বোনেরা পর পুরুষ থেকে আলাদা থেকে নির্বিঘ্নে এ বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করতে পারে।

তবে স্বতন্ত্র ব্যবস্থা না থাকলেও দীনী কিছু বোনেরা পূর্ণ পর্দা ও শরীয়তের সীমারেখার মধ্যে থেকে প্রচলিত সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেল বা নার্সিং বিষয়ে পড়াশোনা করবেন এবং ভবিষ্যতে মহিলাদের জন্য আলাদা মেডিক্যাল কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/7003/

যতদিন পর্যন্ত দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। (ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)

বিস্তারিত জানুনঃ https://ifatwa.info/34286/

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন !

প্রশ্নকারী দ্বীনি বোনবর্তমান পরিবেশে ইস্তেগফারের সাথে মেডিকেল শিক্ষার রুখসত রয়েছে। উপরোক্ত শর্তগুলি পূর্ণ রুপে মেনে পুরো শরীর, চেহারা, হাতা-পা ঢেকে পর্দা করে মেডিকেলে লেখাপড়া করা জায়েজ হবে। সুতরাং আপনি উপরে উল্লেখিত শর্তসমূহ মেনে মেডিকেলে পড়তে পারেন ইনশাআল্লাহ। সেই সাথে মানব সেবার জন্য দোয়া ও ফিকির করতে থাকবেন। আপত দৃষ্টিতে আপনার কাছে আপনার পড়াশুনা বৃথা মনে হলেও সর্বদা বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ তায়ালা উত্তম পরিকল্পনাকারী। হতে পারে  সেই সময় দেশে নারীদের জন্য শরীয়ত সম্মত পর্দার সাথে ইন্টার্ন করার সুযোগ তৈরী হবে এবং আপনার স্বামীও আপনাকে অনুমতি প্রদান করবেন ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...