আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
258 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি যদি ইসলাম সম্পর্কিত বা অন্য যেকোনো বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে ভুল জবাব দেই তাহলে কী সেটা মিথ্যা বলার সামিল হব?

যেমন: কুরআন মাজিদ এ সূরা কয়টি? আমি যদিও এটা জানি কিন্তু মনে করলাম আমি জানি না তাই ১১৪ না বলে ১১০ বললাম। তাহলে কি মিথ্যা বলা হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ফাতাওয়া হল,বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত আল্লাহর হুকুম কে বর্ণনা করা।লোকজন মুফতির বর্ণানাকৃত ফাতাওয়ার অনুসরণ করে থাকে।সুতরাং মুফতির ইলম ও যোগ্যতার প্রয়োজনিয়তা রয়েছে।
বে-ইলম/অযোগ্য মুফতিরা দু'টি বড় গোনাহে লিপ্ত হয়ে থাকেন।

(প্রথম গোনাহ)
আল্লাহর উপর মিথ্যা বলা।আল্লাহর প্রতি অপবাদ দেয়া।
 (قُُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَن تُشْرِكُوا بِاللهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَن تَقُولُوا عَلَى اللهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ)
আপনি বলে দিনঃ আমার পালনকর্তা কেবলমাত্র অশ্লীল বিষয়সমূহ হারাম করেছেন যা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য এবং হারাম করেছেন গোনাহ, অন্যায়-অত্যাচার আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে অংশীদার করা, তিনি যার কোন, সনদ অবতীর্ণ করেননি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করা, যা তোমরা জান না।(সূরা আ'রাফ-৩৩)

বে-ইলম মুফতী যিনি কিছুই জানেন না,তাকে কুরআনে কারীমে শিরক এর সাথে উল্লেখ করা হয়েছে।সুতরাং শিরকের সাথে উল্লেখ করার দ্বারাই উক্ত বিষয়টি যে বড় গোনাহ,সেটাকে প্রমাণ করে থাকে।

ইবনে তাইমিয়্যাহ বাহ বলেন,
قال ابن القيم رحمه الله :
" وقد حرم الله سبحانه القول عليه بغير علم في الفتيا والقضاء ، وجعله من أعظم المحرمات ، بل جعله في المرتبة العليا منها فقال تعالى : ( قُُلْ إِنَّمَا حَرَّمَ رَبِّيَ الْفَوَاحِشَ مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَمَا بَطَنَ وَالإِثْمَ وَالْبَغْيَ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَأَن تُشْرِكُوا بِاللهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهِ سُلْطَانًا وَأَن تَقُولُوا عَلَى اللهِ مَا لاَ تَعْلَمُونَ ) الأعراف/33. 
فرتب المحرمات أربع مراتب : 
وبدأ بأسهلها وهو الفواحش .
ثم ثَنَّى بما هو أشد تحريما منه وهو الإثم والظلم . 
ثم ثَلَّث بما هو أعظم تحريما منها وهو الشرك به سبحانه . 
ثم ربَّع ما هو أشد تحريما من ذلك كله وهو القول عليه بلا علم ، وهذا يعم القول عليه سبحانه بلا علم في أسمائه وصفاته وأفعاله وفي دينه وشرعه . 
ومما يدل أيضا على أنه من كبائر الإثم قول الله تعالى : ( وَلاَ تَقُولُوا لِمَا تَصِفُ أَلْسِنَتُكُمُ الْكَذِبَ هَذَا حَلاَلٌ وَهَذَا حَرَامٌ لِّتَفْتَرُوا عَلَى اللهِ الْكَذِبَ إِنَّ الَّذِينَ يَفْتَرُونَ عَلَى اللهِ الْكَذِبَ لاَ يُفْلِحُونَ * مَتَاعٌ قَلِيلٌ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ) النحل/116-117. 
فتقدم إليهم سبحانه بالوعيد على الكذب عليه في أحكامه ، وقولهم لما لم يحرمه : هذا حرام ، ولما لم يحله : هذا حلال ، وهذا بيان منه سبحانه أنه لا يجوز للعبد أن يقول هذا حلال وهذا حرام إلا بما علم أن الله سبحانه وتعالى أحله وحرمه " انتهى.
" إعلام الموقعين " (1/38) .
মর্মার্থ- না জেনে ফাতাওয়া প্রদাণ হারাম।


দ্বিতীয় বড় গোনাহ
মানুষদের বিভ্রান্ত ও গোমরাহ করা।
فعن عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال : ( إِنَّ اللَّهَ لاَ يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا ، يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ ، وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ ، حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالاً فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوا وَأَضَلُّوا ) رواه البخاري (100) ومسلم (2673) .
মর্মার্থ- একদিন এমন আসবে যখন মানুষ ইলম ছাড়া ফাতাওয়া দিবে,এবং নিজেও গোমরাহ হবে এবং লোকজনকেও গোমরাহ করবে।
ইলম ছাড়া মুফতী হক রাস্তা থেকে গুমারাহ হয়ে যান।এবং যারা তার অনুসরণ করবে,তারা সবাই তার ফাতাওয়া দ্বারা গোরাহ হবে।

جاء في " الموسوعة الفقهية " (32/24) :
" الإفتاء بغير علم حرام , لأنه يتضمن الكذب على الله تعالى ورسوله , ويتضمن إضلال الناس , وهو من الكبائر , لقوله تعالى : (قل إنما حرم ربي الفواحش ما ظهر منها وما بطن والإثم والبغي بغير الحق وأن تشركوا بالله ما لم ينزل به سلطانا وأن تقولوا على الله ما لا تعلمون) , فقرنه بالفواحش والبغي والشرك , ولقول النبي صلى الله عليه وسلم : (إن الله لا يقبض العلم انتزاعا ينتزعه من صدور العلماء , ولكن يقبض العلم بقبض العلماء , حتى إذا لم يبق عالما اتخذ الناس رؤوسا جهالا , فسئلوا , فأفتوا بغير علم , فضلوا وأضلوا) . من أجل ذلك كثر النقل عن السلف إذا سئل أحدهم عما لا يعلم أن يقول للسائل : لا أدري . نقل ذلك عن ابن عمر رضي الله عنهما والقاسم بن محمد والشعبي ومالك وغيرهم , وينبغي للمفتي أن يستعمل ذلك في موضعه ويعود نفسه عليه , ثم إن فَعَل المستفتي بناءً على الفتوى أمراً محرماً أو أَدَّى العبادة المفروضة على وجه فاسد , حمل المفتي بغير علم إثمَه , إن لم يكن المستفتي قَصَّر في البحث عمن هو أهل للفتيا , وإلا فالإثم عليهما" انتهى.


ইবনে মাসউদ রাযি বলেন,
وقال ابن مسعود : ( من كان عنده علم فليقل به ، ومن لم يكن عنده علم فليقل : الله أعلم ، فإن الله قال لنبيه : ( قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ )
যার ইলম থাকবে,সে ফাতাওয়া দিবে।আর যার সে সম্পর্কে ইলম নেই, সে বলবে,আল্লাহ-ই ভালো জানেন।কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,
قُلْ مَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِينَ
বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না, আর আমি লৌকিকতাকারীও নই।(সূরা ছোয়াদ-৮৬)(এ'লামুল মুআওয়্যিকিন-২/১৮৫)

ইচ্ছা করে ভূল জবাব প্রদান হারাম।যেমন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত 
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:  مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ فَكَتَمَهُ أَلْجَمَهُ اللَّهُ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,কাউকে কোনো ইলম জিজ্ঞাসা করা হলে,যদি সে সেই ইলমকে লুকিয়ে রাখে,তাহলে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা আগুনের লাগাম পড়াবেন।(সুনানে আবু দাউদ-৩৬৫৮,সুনানে তিরমিযি-২৬৪৯,সুনানে ইবনে মা'জা-২৬৪)

তবে যদি মুফতির ইজতেহাদি ভূল হয়, তথা সঠিক মাস'আলা বের করতে যেয়ে যদি ঘটনাক্রমে কোনো ভূল হয়ে যায়,তাহলে তখন মুফতি এক সওয়াব পাবেন।আর সঠিক হলে তো দুই সওয়াব অবশ্যই পাবেন-ই। যারা মুফতির কোনো ভূল সিদ্ধান্তের উপর আ’মল করবেন, তারা অবশ্যই আল্লাহর কাছে ছাড় পেয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 234 views
...