বিসমিহি তা'আলা
জবাবঃ-
কোনো অসুস্থতা বা বিপদাপদের সময় কুরআনে কারীমের কোনো সূরা বা আয়াত তেলাওয়াত করা তা তাবিজ আকারে সেটাকে ব্যবহার করা জায়েয।এবং এর বিনিময় গ্রহণও জায়েয।
সহীহ বোখারীতে ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
হাদীসের শেষাংশে বর্ণিত
فَقَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَخَذَ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ أَجْرًا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ أَحَقَّ مَا أَخَذْتُمْ عَلَيْهِ أَجْرًاكِتَابُ اللَّهِ»
সাহাবায়ে কেরামের একাংশ রাসূলুল্লাহ সাঃ কে জিজ্ঞাসা করলেন,হে রাসূলুল্লাহ! আমাদের দলের কিছু লোক কুরআন দ্বারা চিকিৎসা করে বিনিময় গ্রহণ করেছে।রাসূলুল্লাহ সাঃ প্রতিউত্তরে বললেন, 'তোমরা যে সব বিনিময় গ্রহণ করো এর মধ্যে বিনিময় গ্রহণের সবচেয়ে বেশী উপযোগী হল কুরআনে কারীম' (সহীহ বোখারী-৫৭৩৭,সহীহ মুসলিম-২২০১)
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় বলেন,
ومنعها أبو حنيفة في تعليم القرآن وأجازها في الرقية
ইমাম আবু হানিফা কুরআন শিক্ষার বিনিময়কে নিষেধ করেছেন।তবে রুকইয়াহ এর বিনিময়কে জায়েয বলেছেন।(আল-মিনহাজ-২/২২৪)
চিকিৎসার স্বার্থে কুরআন খতম সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন- 997
অনেকে একত্রিত হয়ে চিকিৎসা হিসেবে কুরআন খতমের বেলায় কয়েকটা নিষিদ্ধ জিনিষ পরিলক্ষিত হয়,যা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।যথাঃ-
(১)অনেক সময় বিনিময় উহ্য থাকে।যার দরুণ ইজারায়ে ফাসেদাহ হয়ে যায়।
(২)এমন আক্বিদা সৃষ্টি হয় যে,গোনাহ পরিত্যাগের কোনো প্রয়োজন নেই।বরং খতম দ্বারা সমাধান চলে আসবে বা নাজাত পাওয়া যাবে।
(৩)গোনাহর দুঃসাহস বেড়ে যায়।
(৪)এভাবে একত্রিত হয়ে পড়ার নিয়মকে জনসাধারণ সুন্নত দ্বারা প্রমাণিত মনে করে।অথচ এমন পরিবেশ পূর্বে কখনো ছিল না।
(৫)ইজারা সমস্ত কুরআন পড়ার উপর হয়ে থাকে অথচ অধিকাংশ সময় সাড়া কুরআন পড়া হয় না।
(৬)খতম পড়ানেওয়ালাদের মধ্যে অধিকাংশ লোকজন কুরআন পড়তে জানেনা।যদ্ধরূণ রহমতের পরিবর্তে আযাবের আশংকাই বেশী থাকে।
(৭)যে ঘর বা বাড়ীতে কুরআন পড়া হয়,সেখানে সাধারণত প্রাণীর ছবি বিদ্যমান থাকে।
আফসোস এসব পরিত্যাজ্য বিষয় একত্রে কুরআন খতমের সময় পরিলক্ষিত হয়।এমনকি প্রথম তিন প্রকার একাকি কুরআন খতম বা তাবিজ প্রদাণের সময়ও পরিলক্ষিত হয়।
(আহসানুল ফাতাওয়া-৭/৩০০)
সুতরাং এ সকল পরিত্যাজ্য ও নিন্দনীয় বিষয় থেকে মুক্ত রেখে চিকিৎসার স্বার্থে কুরআন খতম করা বৈধ রয়েছে।অনেকে মিলে একত্রেও কুরআন খতম করা যাবে,তবে শর্ত হলো,একজন অন্যজনের পাশে বসতে পারবেন না।বরং এতটুকু দুরত্বে থাকতে হবে যে,যাতেকরে একজনের আওয়াজ অন্যজনের কানে না পৌছে।একবারে ততটুকুই পড়া যাবে যতটুকু প্রশান্ত মনে পড়া যায় বা ভালো লাগে।মনে যখন ক্লান্তি চলে আসবে তখন আর কুরআন পড়া যাবে না।বরং পরে প্রশান্তচিত্তে পড়তে হবে।
কুরআন খতম করে ঈসালে সওয়াব জায়েয আছে।তবে বিনিময় গ্রহণ জায়েয হবে না।
এ সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-1044
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।
উত্তর লিখনে
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ, Iom.
পরিচালক
ইসলামিক রিচার্স কাউন্সিল বাংলাদেশ